Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বুড়িচংয়ে বিষমুক্ত টমেটো চাষে সাফল্য

আলমগীর হোসেন, বুড়িচং (কুমিল্লা) থেকে | প্রকাশের সময় : ২ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৪ এএম

পরিবহন সুবিধার জন্য টমেটো কাঁচা থাকতে গাছ থেকে তুলা হয়। তারপর এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করে। ফলে টমেটোগুলো অনেক দিন তরতাজা থাকলেও মানবস্বাস্থ্যের জন্য তা অত্যন্ত হুমকি স্বরূপ। লক্ষ্য করলে দেখা রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহারের কারণে ঐ সমস্ত টমেটোগুলোর ওপরের রং দীর্ঘদিন লাল বা কমলা রংয়ের হলেও ভেতরের বীচিগুলো একেবারে সবুজ বা অপক্ক হয়ে থাকে। সামনে পবিত্র মাহে রমজান অনেকেই ইফতারের সাথে টমেটো খেয়ে থাকেন। আর এ ধরণের রাসায়নিক মিশ্রিত টমেটো খেলে শারীরে পাশর্^প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

তাই বিষমুক্ত টমেটো চাষে জনগণের উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি অফিস বুড়িচং-এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা দক্ষিণ ইউনিয়নের এতবারপুর গ্রামে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার ছাড়া ১ একর জমিতে টমেটো চাষ করা হয়েছে। যা অন্যান্য টমেটোর চেয়ে বিষমুক্ত।

কৃষক মো. সিরাজুল ইসলাম হাতে তৈরি জৈব বালাইনাশক যেমন নিম তেল ও মেহগনি বীজের নির্যাস কীটনাশক হিসাবে ব্যবহার করছেন।

এতে একদিকে বিষমুক্ত সবজি যেমন পাওয়া যাচ্ছে, অন্যদিকে কীটনাশকের বিপুল পরিমাণের খরচ লাগছে না। কৃষক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে হাতে বালাইনাশক তৈরির প্রশিক্ষণ পেয়েছি। তাছাড়া ছত্রাকজনিত সমস্যার জন্য উপসহকারি কৃষি অফিসারের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ ব্যবহার করি। অপ্রত্যাশিতভাবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর জমির পরিস্থিতি ভালো। এবছর টমেটো চাষ করে লাভবান হতে পারবো আশা করি।

উপ-সহকারি কৃষি অফিসার মোছা. সুলতানা ইয়াসমিন জানান, প্রতি বছর টমেটো চাষ করলেও বালাইনাশকের অতিরিক্ত খরচ ও রোগ বালাইয়ের আক্রমণ মিলিয়ে আর্থিকভাবে কৃষক লাভবান হতে পারছিলেন না। এবছর হাতে তৈরি নিম তেল ও মেহগনি বীজ থেকে বানানো জৈব বালাইনাশক দিয়ে পোকামাকড় দমন করতে পেরে কৃষকের কীটনাশকের খরচ বেঁচে গেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায় বলেন, কৃষকদের জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন ও প্রয়োজনে রাসায়নিক বালাইনাশকের যুক্তিসংগত ব্যবহার বিষয়ে অভ্যস্ত করতে বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

এতবারপুর ছাড়াও বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের শংকুচাইল, মোকামের নিমসার, ভারেল্লা ও আবিদপুর গ্রামে কৃষকদের উদ্বুব্ধকরণের মাধ্যমে হাতে তৈরি জৈব বালাইনাশক ব্যবহারের কার্যক্রমটি চলমান রয়েছে। বাণিজ্যিক পর্যায়ে এটি বাস্তবায়ন করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। এতবারপুরের টমেটো মাঠটি আমাদের প্রচেষ্টার ছোট একটি সাফল্য হিসাবে দেখছি।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোছা. আফরিণা আক্তার বলেন, নিরাপদ সবজি চাষে কৃষকদের আগ্রহী করতে এর ভালো মূল্য নিশ্চিত করতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে নিরাপদ সবজি চাষের বিকল্প নেই। ভোক্তারা নিরাপদ সবজির ব্যাপারে আগ্রহী হলে কৃষক পর্যায়ে কার্যক্রমটি আরো বেগবান হবে। পাশাপাশি মানব স্বাস্থ্যের হুমকি বিহীন সবজি চাষে আমাদের ভবিষ্যাত প্রজন্মরা তাদের মেধা মনন বিকাশে আরো সুন্দরভাবে বেড়ে উঠার সুযোগ পাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ