পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামে রমজানে গ্যাস বিদ্যুৎ পানি সরবরাহ
নিশ্চিত যানজট নিয়ন্ত্রণে নানা উদ্যোগ
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, তীব্র যানজট, মারাত্মক পরিবেশ দূষণ এবং ভেজালের ছড়াছড়ির মধ্যে পবিত্র মাহে রমজানের প্রস্তুতি চলছে বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামে। আছে গ্যাস, পানি, বিদ্যুতের সঙ্কটও। এ অবস্থায় এবারও রমজানে জনদুর্ভোগের আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও প্রশাসনের তরফে এসব সঙ্কট নিরসনে নানা উদ্যোগের কথা বলা হচ্ছে। তবে দুই বছর পর প্রায় করোনামুক্ত পরিবেশে সিয়াম সাধনার সুযোগ পেয়ে খুশি বারো আউলিয়ার পুণ্যভূমি চট্টগ্রামের ধর্মপ্রাণ মানুষ।
আগামীকাল শনিবার চাঁদ দেখা গেলে শুরু হবে পবিত্র মাহে রমজান। চট্টগ্রামের ঘরে ঘরে চলছে মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার প্রস্তুতি। এরমধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার করোনাশূন্য ছিল চট্টগ্রাম। মহানগরী এবং জেলায় কারো করোনা শনাক্ত হয়নি। গত দুই বছর পবিত্র রমজানে করোনার বিধি-নিষেধের কারণে মসজিদে মসজিদে খতমে তারাবিতে সামিল হতে পারেননি অনেকে। বন্ধ ছিলো ইফতার মাহফিলও। এবার পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সিয়াম সাধনায় ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। তবে এসব প্রস্তুতির মধ্যেও নানা দুর্ভোগ এবং ভোগান্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধি, ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা কারণে রোজার আগেই দ্রব্যমূল্যে বেড়ে যায়। চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ অনেক ভোগ্যপণ্যের দাম এখনও চড়া। রোজার শুরুতে আরো এক দফা মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন অনেকে। তবে সরকারি তরফে বলা হচ্ছে, টিসিবির রেশন কার্ডের মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত কমদামে পণ্য বিক্রি এবং সয়াবিন তেলসহ কয়েকটি পণ্যের আমদানি শুল্ক এবং ভ্যাট প্রত্যাহারে বাজার স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে।
ব্যবাসায়ী সংগঠনের নেতারাও মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা নাকচ করছেন। তারা বলছেন, এবার ছোলা, খেজুর, চিনি, ভোজ্যতেলসহ কিছু কিছু পণ্যের আমদানি চাহিদার চেয়ে বেশি হয়েছে। বিশেষ করে রোজায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কোন ঘাটতি নেই। ফলে দাম ধীরে ধীরে কমে যাবে। রোজা সামনে রেখে ভেজাল বিরোধী অভিযানও জোরদার করা হয়েছে। এলিট বাহিনী র্যাব, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং ভেজাল প্রতিরোধে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। রোজায় এ অভিযান আরো জোরদার করার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
নগরীতে তীব্র যানজট চলছে। চলমান একাধিক মেগা প্রকল্পের জন্য সড়কে চলছে সমন্বয়হীন খোঁড়াখুড়ি। প্রধান প্রধান সড়কের পাশাপাশি অগিগলিতে বিস্তৃত হচ্ছে অসনীয় যানজট। ট্রাফিক ব্যবস্থা এখন যে কোন সময়ের তুলনায় নাজুক। রাস্তায় নেমেই যানজটে আটকা পড়ার পাশাপাশি ধুলা-বালুতে নাকাল হচ্ছেন নগরবাসী। রমজানে অফিস সময় এগিয়ে আনায় যানজট আরো তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবার রমজানেও খোলা থাকছে স্কুল, কলেজ, মাদরাসাসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কল-কারখানা আমদানি-রফতানি কার্যক্রমও পুরো দমে চালু আছে।
এর ফলে এবার নগরীতে যানজট এবং জনজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এবার রমজানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় আগের চেয়ে বেশি সতর্ক থাকবে ট্রাফিক বিভাগ। যানজট সহনীয় রাখতে সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নগরীতে চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার কর্মকর্তারা নগরীকে ধুলা-বালুমুক্ত রাখার কথাও বলছেন।
চাহিদার বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও নগরী এবং জেলার বিভিন্ন এলাকায় এখনও লোডশেডিং চলছে। নগরীর ঘনবসতিপূর্ণ কিছু এলাকায় নিয়মিতই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। কোথাও ট্রান্সফরমার বিকল হলে তা সারাতেও সময় লাগছে। শহর এবং শহরতলীর পাশাপাশি গ্রামেও বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ। রমজানে বিদ্যুৎ বিভ্রাট আরো বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম ইনকিলাবকে বলেন, এখন কোথাও লোডশেডিং নেই। সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায় ত্রæটির কারণে কোন কোন এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে, তবে তা সাময়িক। রমজানে বিশেষ করে ইফতারি, তারাবিহ ও সেহেরির সময় যাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত থাকে ব্যাপারে যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নগরীতে চাহিদার বেশি পানি সরবরাহ করার দাবি করছেন চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্মকর্তারা। ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ফজলুল্লাহ জানান, চট্টগ্রাম ওয়াসার সক্ষমতা বেড়েছে। নগরীতে এখন চাহিদার বেশি পানি উৎপাদন হচ্ছে। পবিত্র রমজান মাসে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে ওয়াসা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এদিকে নগরীর অনেক এলাকায় এখনো গ্যাস সঙ্কট রয়েছে। রমজান মাসে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সঙ্কট তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাসাবাড়িতে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে পেট্রো বাংলার পক্ষ থেকে রমজান মাসে বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সিএনজি ফিলিং স্টেশন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের কর্মকর্তারা বলছেন, রমজানে আবাসিক গ্রাহকদের চাহিদার অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।