Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষককে মারধর করায় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত

শরীয়তপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০২২, ১:৫৮ পিএম

ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (শরীয়তপুর) সরকারি কলেজের এক শিক্ষককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। ৩০ মার্চ বুধবার বিকেলে এই মারধরের ঘটনা ঘটে। খাবারের আয়োজনে ছাত্রলীগ নেতা দাওয়াত না পাওয়ায় শিক্ষককে মারধর করেন বলে জানা যায়। মারধরের শিকার শিক্ষক বিএম সোহেল বাংলা বিভাগের প্রভাষক। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সোহাগ বেপারী ওই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি। শিক্ষককে মারধরের প্রতিবাদে কলেজের শিক্ষক পরিষদ একটি জরুরি সভা করে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ। কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মহসীন মাদবর।
কলেজের বাংলা বিভাগের অফিস সূত্রে জানায়ায়, বুধবার কলেজের বাংলা বিভাগের স্নাতক সম্মান চতুর্থ বর্ষের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। মৌখিক পরীক্ষা নিতে জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ের একটি দল কলেজে উপস্থিত ছিল। পরীক্ষা শষে বাংলা বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের জন্য খাবারের আয়োজন ও শুভেচ্ছা জানানো হয়। এই আয়োজনে ছাত্রলীগের নেতাদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি। কেন ছাত্রলীগ নেতাদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি তা জানতে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ বেপারী ও সাধারণ সম্পাদক রাশেল জমাদ্দার কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী নিয়ে বিকেল ৪টার দিকে বাংলা বিভাগে আসেন। সেখানে তারা বাংলা বিভাগের প্রভাষক বিএম সোহেলের কাছে দাওয়াত না পাওয়ার বিষয়টি জানতে চায়। এই বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় প্রধানের সাথে কথা বলার পরামর্শ দিলে তখন সোহাগ বেপারী বিএম সোহেলের গায়ে হাত দিয়ে লাঞ্ছিত করেন। অন্যান্য শিক্ষকেরা এসে বিএম সোহেলকে উদ্ধার করেন।
বিএম সোহেল বলেন, ছাত্রদের সামনে এমন অপমান-অপদস্থ করবে তা ভাবতেও পারিনি। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছাত্রলীগ নেতারা ঘটনাটি ঘটিয়ে বসে। বিষয়টি অধ্যক্ষ সহ ও শিক্ষক পরিষদের নেতাদের জানিয়েছি। তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিবো।
অভিযোগ অস্বীকার করে সোহাগ বেপারী বলেন, শিক্ষকরা আমাদের গুরুজন। তাদের সাথে এমন আচরণ করার যৌক্তিক কোন কারণ নাই। শিক্ষার্থীদের দাবী আদায়ের জন্য অনেক সময় আমাদের শিক্ষকদের বিপক্ষে অবস্থান করতে হয়। এ কারণে হয়তো কোনো শিক্ষক আমার প্রতি বিরক্ত থাকতে পারেন। তাছাড়া আমি হয়তো কোন রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার।
শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মহসিন মাদবর বলেন, রাতেই ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করেছে। এই সিদ্ধান্ত চিঠি আকারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ বলেন, ছাত্রলীগের যে নেতার বিরুদ্ধে শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে সে আমাদের কলেজের শিক্ষার্থী না। তাই তাকে বহিষ্কারও করা যাচ্ছে না। রাতে শিক্ষক পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
পালং মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আক্তার হোসেন বলেন, এই ঘটনার কথা শুনেছি। এই বিষয়ে কলেজের শিক্ষকরা এমপি মহোদয়ের কাছে গিয়েছিলেন। শুনেছি তিনি বিষয়টির ফয়সালা করে দিয়েছেন। আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ কেউ দেয়নি। তবে শুনেছি ছাত্রলীগ থেকে অভিযুক্তদের বহিস্কার করে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ