Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বিশ্বের ১২টি দেশে যাচ্ছে শিমের বীচি

শেখ সালাউদ্দিন, সীতাকুণ্ড থেকে : | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০২২, ১২:০১ এএম

চট্টগ্রাম সমুদ্রপথ ও আকাশপথে ইউরোপসহ বিশে^র ১২টি দেশে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকার শিমবীচি। ফলে শিম মৌসুমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় হচ্ছে। শুরু থেকেই সীতাকুণ্ড উপজেলা শিম চাষের জন্য বিখ্যাত। তাই সারা দেশ জুড়ে এর চাহিদা ও সুনাম রয়েছে সবার মুখে মুখে। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এবার ৪৫ হাজার মেট্টিক টন শিম উৎপাদন হয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ১১২ কোটি টাকা। তবে এখন কৃষকদের উৎপাদিত শিমের বীচি আমেরিকা, ইতালি, জার্মানি, ইংল্যান্ড, কাতার, দুবাই, সৌদি আরবের সংযুক্ত দেশগুলোসহ বিশে^র অন্তত ১২টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে চট্টগ্রামের কৃষিবিদ মো. ইমরুল হাসান বলেন, ইউরোপ ও মধ্যপাচ্যে শিমের বীচি রপ্তানি করছেন চট্টগ্রামের অন্তত ১০টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। ৮০টাকা কেজি দরে ১৪৫ মেট্টিক টন রপ্তানি করে আসছেন। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি মৌসুমে সমুদ্রপথে আনুমানিক ১ কোটি ১৬ লাখ টাকারও বেশি শিমবীচি রপ্তানি হয়েছে।

এ বিষয়ে বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের বড়দারোগার হাট টেরিয়াইল ব্লকের কৃষক মিয়া খোকন বলেন, এবার শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পিপাস কান্তি চৌধুরীর পরামর্শে চলতি মৌসুমে ৬০ শতক জমিতে শিমের চাষ করেছি। এতে খরচ পড়েছে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা। আর পাইকারিতে ২ লাখ টাকার শিম ও শিমের বীচি বিক্রি করেছি। এদিকে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইপসার প্রধান নির্বাহী মো. আরিফুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, সীতাকুণ্ড শিম উৎপাদনে বিখ্যাত। শিমের বীচি রোদে শুকিয়ে রেখে তা গৃহস্থালী ভাবে শিমের বীচি সংগ্রহ করা হলওে এটি বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাতের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। মৌসুমে কাঁচা শিমের বীচি সংগ্রহ করে প্রশিক্ষিত উদ্যোক্তাদের দ্বারা ডিহাইড্রেটর মেশিনের সাহায্যে শুকিয়ে মোড়কজাত করা হয়। আর এভাবেই আমরা উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে শিমের শুকনো বীচির বাজার চাহিদা পূরণে সচেষ্ট রয়েছি। আর আমাদরে উৎপাদিত পণ্য নিরাপদ,স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিমান সমৃদ্ধ।

এবিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে ১৮ হাজার ২৩০ জন কৃষক শিম চাষ করেছেন। প্রতি হেক্টরে ১৫ মেট্টিক টন হিসেবে এবছর ৪৫ হাজার মেট্রিকটন শিম উৎপাদন হয়েছে। যার বাজার মূল্য গরে ২৫ টাকা কেজি হিসেবে ১শত ১২ কোটি টাকা। একমাত্র সীতাকুণ্ড উপজেলা ছাড়া দেশের আর কোথাও এতো টাকার শিম উৎপাদন হয়না। করে এবং শিমবীচি বিক্রি করে অনেক লাভবান হচ্ছেন কৃষক উপজেলার কৃষক পরিবারগুলো এই মৌসুমে সাগরের বেড়িবাঁধ থেকে শুরুকরে জমির আইলে ও পাহাড়ি অঞ্চলসহ সর্বত্রই শিমের চাষ ।

চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আক্তারুজ্জামান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সীতাকুণ্ডের মত শিমচাষ দেশের আর কোথাও নেই। সীতাকুণ্ডকে তাই শিমের রাজ্য বলা হয়। মাত্র একটি বাঁশের কন্সিতে কয়েক কেজি শিম উৎপাদন হয়। সীতাকুণ্ড অঞ্চলে শিমচাষের উপযোগি বলেই প্রতিবছর শিমের মৌসুমে শিম বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা আয়করে চলেছে কৃষক। অন্যদিকে শিমের বীচি বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও বিরাট ভূমিকা রেখে চলেছে কৃষক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ