Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুর্ভোগ কমাতে প্রতাপনগরে ভাসমান সেতু বানাল ডু সামথিং ফাউন্ডেশন

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা থেকে : | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০২২, ১২:০১ এএম

পরপর দুটি ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও ইয়াসের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়ন। ভিটে মাটি হারায় মানুষ, ভেসে যায় মৎস্য ঘের, সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায় অনেকেই। ভেঙে পড়ে পুরো যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফসলি জমি, ঘের বিলীন হয়ে যায় নদীগর্ভে। প্রতাপনগর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে হাওলাদার বাড়ি ও দরগাহতলার আইট গ্রাম দুটি। নদীতে বিলীন হয়ে যায় ৪০টি পরিবারের বসতভিটা, মসজিদ ও কবরস্থান। বাজার ঘাট, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য ব্যবহৃত রাস্তাটি পরিণত হয় বিশাল খালে। এতে যোগাযোগ ব্যবস্থায় মারাত্মক বিপর্যয় ঘটে। স্থানীয়রা পড়েন চরম দুর্ভোগে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের দৈনিক ২০ টাকা খরচ হতো নৌকায় পারাপারে। একটি মাত্র নৌকায় পার হতে হতো ৪০০ পরিবারকে।

স্থানীয়দের এই দুর্ভোগ লাঘবে এগিয়ে আসে চিকিৎসকদের দ্বারা পরিচালিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ডু সামথিং ফাউন্ডেশন’। সংগঠনটি দুর্গম প্রতাপনগরের হাজারো মানুষের যাতায়াতের কষ্ট লাঘবে তৈরি করে দিয়েছে একটি ভাসমান সেতু। ৫৬টি ড্রাম দিয়ে তৈরি ৩৫০ ফিট দৈর্ঘ্যরে ভাসমান সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষে গত ২৮ মার্চ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এখন দৃষ্টিনন্দন এই ভাসমান সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক সাইদুল ইসলাম জানান, যে স্থানে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে সেখান ছিলো ৪০টি পরিবারের বসতভিটা, মসজিদ ও কবরস্থান। সব কিছু নদীতে বিলীন হয়ে তৈরি হয় গভীর খাল। যাতায়াতের পথ ছিল না। সেতুটি তৈরি হওয়ায় মানুষের খুব উপকার হচ্ছে।

ডু সামথিং ফাউন্ডেশনের সভাপতি ডা. নাজমুল ইসলাম জানান, কোনো রোগী যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার মতো কোনো রাস্তা এখানে অবশিষ্ট ছিলো না। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের দৈনিক ২০ টাকা খরচ হতো নৌকায় পারাপারে। একটি মাত্র নৌকায় পার হতে হতো ৪০০ পরিবারকে। কি যে কষ্ট ছিল সেটা কেবল এই অঞ্চলের মানুষই অনুধাবন করতে পারতো।

মানুষের কষ্ট লাঘবে এই সেতুটি তৈরি হয়। ভাসমান সেতুটি বিছিন্ন দুটো গ্রামকে সংযুক্ত করেছে ইউনিয়নের সাথে। এখন মানুষ নির্বিঘ্নে যেতে পারছে বাজার-ঘাট, স্কুল, কলেজ, মসজিদ ও হাসপাতালে। উপকূল অঞ্চলে জোয়ার-ভাটা হয়। এটি এমনভাবে নির্মিত যাতে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে সেতু উপরে ভাসমান হয়ে উঠবে। সবমিলিয়ে এটি মানুষের উপকারে আসবে বলে আমরা মনে করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ