ঢাকার খাবার দাবার নিয়ে ভিডিও বানাতে ফুডকা টিম নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন কলকাতার নামকরা উপস্থাপক-অভিনেতা ও কণ্ঠশিল্পী মীর আফসার আলী। সবার কাছে তিনি মীরাক্কেলের মীর নামে পরিচিত। গেল কয়েকদিন ধরে তাকে ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে দেখা গেছে। ঢাকায় আসার কারণটা স্পষ্টভাবে জানাতে মঙ্গলবার হোটেল প্ল্যাটিনাম গ্রান্ডে ফুডকা টিম মেম্বারদের নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন মীর।

সংবাদ সম্মেলনে মীর জানান, দেশের অভিনেতা ও ফুড ব্লগার আদনান ফারুক হিল্লোলের আমন্ত্রণে তারা বাংলাদেশে এসেছেন এবং তাদের সহযোগিতা করছেন ইনফ্লুয়েন্সার হাব। খাবার দাবারের ব্লগ তৈরি করাই ফুডকা টিমের কাজ। এটি মুলত একটি ইউটিউব চ্যানেল।

মীর বলেন, ‘পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে ঘুরেছি। ঢাকা শহরের মতো, বাংলাদেশের মত এতো আতিথেয়তা অন্য কোথাও পাইনি। শহিদ মিনারের সামনে দাঁড়িয়ে আছি বলে, ক্যামেরার সামনে আছি বলে বলছি- তা নয়। আমি প্রত্যেক দিন ওজন মাপছি, ২০০ গ্রাম করে বাড়ছে।’

মীর আরও বলেন, ‘সত্যিকার অর্থেই বলছি, বাংলাদেশের আতিথেয়তা জান্নাতের সমান। আমি জান্নাত দেখিনি, যাব কিনা জানি না। বেহেশতে যাব নাকি দোজখে যাব, সেটাও জানি না। কিন্তু খাওয়া-দাওয়ার বিষয়ে যদি কোনো স্বর্গ থেকে থাকে, তাহলে সেটা অবশ্যই বাংলাদেশ।’

এ সময় হিল্লোল বলেন, ‘মীর এবং আমরা একই সময় কাজ শুরু করি। আমি বাংলাদেশে, তারা কলকাতায়। করোনার সময় আমরা একটা লাইভে বসেছিলাম। সেখান থেকে পরিচয়। আমন্ত্রণ দেয়া-নেয়ার বিষয় তো ছিলই। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তারা বাংলাদেশে আসলেন। আমি আনন্দিত।’

হিল্লোাল আরও বলেন, ‘আমরা যেটা করছি সেটাকে আর ফুড ব্লগিং না বলে ফুড ডকু বলা যেতে পারে। আমি বা এখানে যারা আছেন তাদের তো ভাইরাল হওয়ার কিছু নেই এখন। যে ভিডিওগুলো করছি, সেগুলো যেন ২০-৪০-৫০ বছর পর কাউকে সাহায্য করে, সেটাই আমাদের চাওয়া।’

মীর আরো জানান, ফুডকা টিম ঢাকা থেকে বিদায় নেবে ১ এপ্রিল পর্যন্ত। এর মধ্যে তারা ঘুরেছে মাওয়ায়, সেখানে ইলিশ খেয়েছে। তারা গিয়েছিলেন পুরান ঢাকার বিউটি বোর্ডিংয়ে, বিহারি ক্যাম্প, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এছাড়া বিয়ে বাড়ির কাচ্চি খাওয়ার জন্য একটি বিয়ের অনুষ্ঠানেও গিয়েছিল ফুডকা টিম।

তবে ভক্তদের সেলফি তোলার আগ্রাহ দেখে মীর রিতিমত অবাক হয়েছেন। মীরের দেয়া হিসেবে দিনে গড়ে হাজার সেলফি তুলতে হয়েছে তাকে। সেলফি তোলার জন্য লাইনও লেগে গিয়েছিল একদিন। ফুডকা টিম বাংলাদেশে আসার পর ঢাকার রাস্তার যানজট নিয়ে বেশ কথা হচ্ছে। সেখান থেকে একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন ইন্দ্রজিত লাহিরি। তিনি বলেন, ‘এদেশের মানুষেরা যানজটের বিষয়টিকে স্বাভাবিক বিষয় মনে করে। ঢাকার রাস্তায় দীর্ঘ যানজটের কারণে ফুডকা টিমকে বেশ ভোগান্তি পড়তে হয়েছে।’

ফুডকা টিমের সদস্য সুনন্দ বলেন, ‘আমাদের ভিডিওতে যে মন্তব্যগুলো আসতো তার ৮০ শতাংশ মন্তব্য বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানানোর মন্তব্য। আমরা ভাবলাম যে ২০ শতাংশ রিচ বাংলাদেশ থেকে আসছে সেটা বাংলাদেশে গেলে ৫০ শতাংশ বা এর বেশিও হতে পারে। সে কারণেই বাংলাদেশে এসেছি।’

উল্লেখ্য, অনেকদিন ধরেই ‘ফুডকা’ প্রজেক্টটি নিয়ে কাজ করছেন মীর। ভারতের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে তারা খাবার খাচ্ছেন এবং সেই খাবারের গল্প ও অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করছেন। তারই ধারাবাহিকতায় এলেন ঢাকায়। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের আরও কিছু শহরে ভ্রমণ করে খাবারের স্বাদ নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন মীর ও তার সঙ্গীরা।