পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চাহিদার চেয়ে দেশে এখন বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা বেশি। বর্তমানে প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা ১৫ হাজার মেগাওয়াটের কিছু বেশি। কিন্তু উৎপাদন ক্ষমতা কমবেশি ১৯ হাজার ৫৩৬ মেগাওয়াট। গত ২০ মার্চ দেশ শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনার ঘোষণা দেয়া হয়। গ্রাহক চাহিদার চেয়ে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বেশি উৎপাদনের ক্ষমতা থাকলেও প্রতিদিন লোডশেডিং ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে কোটি কোটি গ্রাহককে। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত একই চিত্র। সর্বোত্রই লোডশেডিং।
গত দু’দিন দেশের বিভিন্ন জেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এবং ইনকিলাবের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, মফস্বলের প্রত্যেকটা শহর ও গ্রামে প্রতিদিন লোডশেডিং হচ্ছে। কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ চলে গেছে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। গত এক যুগে রেন্টাল কুইক রেন্টালের মাধ্যমে বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করা হলেও গ্রাহক পর্যায়ে সুফল মিলছে না। এদিকে খাগড়াছড়িতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বেহাল দশা। সাভারে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠি শিমুলিয়াবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক যুগে দেশে বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। সারাদেশে গ্রাহক সংখ্যা ৪ কোটি ২১ লক্ষ। মোট সঞ্চালন লাইন (সা.কি.মি.) ১৩,২১৩, গ্রিড সাব-স্টেশন ক্ষমতা (এমভিএ): ৫৫,৩০৭, বিতরণ লাইন (কি.মি.): ৬ লক্ষ ২১ হাজার। সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রর ৫৫টির উৎপাদন ক্ষমতা ১০৭৫৮ দশমিক ৫ মেগাওয়াট। বে-সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে ৭৮টির উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ৮৭৭৮ দশমিক ২৫৯ মেগাওয়াট। এছাড়া ভারত থেকে আমদানী করা হচ্ছে ১১৬০ মেগাওয়াট। তারপরও রাজধানী ঢাকায় প্রতিদিন কয়েকবার করে বিদ্যুতের লোডশেডিং হচ্ছে। চৈত্রের রোদ তেঁতে উঠেছে। এর মধ্যে লোডশেডিংয়ের নামে চলছে বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় কাটাতে হয় গ্রামের কোটি কোটি মানুষকে। প্রতিদিন প্রায় তিন ঘণ্টা বেশ কয়েকটি সঞ্চালন লাইন বন্ধ থাকছে। সন্ধ্যায়ও একাধিক এলাকায় বিদ্যুৎ থাকছে না। গ্রামের সাধারণ মানুষের অভিযোগ, একটু বাতাস কিংবা বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ বিভাগ বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যায় না। আবার সংযোগ দিলেও এক ঘণ্টা পরপর বিচ্ছিন্ন করে দেয়। চলতি গ্রীষ্মকালে পিক আওয়ারে ১৫,৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা হতে পারে এবং গ্যাসের সম্ভাব্য চাহিদা ১৫০০ এমএমসিএফডি হতে পারে। বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থাকে দায়ি করছে পল্লী বিদ্যুতের একাধিক কর্মকর্তা।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, গত সোমবার কুড়িগ্রামে ঝড়ো হাওয়ার কারণে সঞ্চালন লাইন বন্ধ করে দেয়া হয়। বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কায় এই পদক্ষেপ নেয়া হয়। তবে সারাদেশে বেশ কয়েকটি সঞ্চালন লাইনের মধ্যে কিছু চালু করা হয়েছে। একটি লাইনের ওপর গাছ পড়ায় সেটি সন্ধ্যার আগে চালু করা সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে।
সারাদেশের চৈত্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে দেশে বিদ্যুৎ বিভ্রাট শুরু হয়েছে। সরকারের হিসেব বলছে, চাহিদার তুলনায় অন্তত ১০ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা বেশি। এরপরও জিরো লোডশেডিং আওয়ার বা শূন্য লোডশেডিং এ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। গ্রীষ্ম এবং সেচ মিলিয়ে দেশে সর্বোচ্চ বিদ্যুতের চাহিদা থাকে এপ্রিলে। মে থেকেই বৃষ্টির কারণে বিদ্যুতের চাহিদা কমতে থাকে। জুনের পর কিছুটা চাহিদা বাড়লেও বেশি জুলাই এবং আগস্টে এসে আবার কমতে শুরু করে। দেশে সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রর ৫৫টি যার উৎপাদন ক্ষমতা ১০৭৫৮ দশমিক ৫ মেগাওয়াট। বে-সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে ৭৮টি এতে উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ৮৭৭৮ দশমিক ২৫৯ মেগাওয়াট। এছাড়া ভারত থেকে আমদানী করা হচ্ছে ১১৬০ মেগাওয়াট।
এদিকে গতকাল মঙ্গরবার সচিবালয়ে আসন্ন রমজান ও চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিদ্যুতের চাহিদা, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ নিয়ে নাতিদীর্ঘ পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন। চলতি গ্রীষ্মকালে পিক আওয়ারে ১৫,৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা হতে পারে এবং গ্যাসের সম্ভাব্য চাহিদা ১৫০০ এমএমসিএফডি হতে পারে।
বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আসন্ন রমজান মাসে ও গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কেন্দ্রসমূহে গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত, বৃদ্ধিকরণ, পিক আওয়ারে (সান্ধ্যকালীন) চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা, ইফতার, তারাবীর নামাজ ও সেহরির সময়ে লোডশেডিং না করা, টেকনিক্যাল কারণে বা অন্য কোনো কারণে যেন লোডশেডিং না হয় সে দিকে সজাগ থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়।
সুত্র জানায়, এপ্রিল মাসে মোট বিদ্যুতের চাহিদা দাঁড়াবে ১৫ হাজার ৭৬৬ মেগাওয়াট। যা গত বছর ছিল ১৪ হাজার ৭৩৫ মেগাওয়াট। এরমধ্যে ঢাকার চাহিদা ছিল ৫ হাজার ৯০৩, আর এবার হবে ৬ হাজার ৩১৬, একইভাবে চট্টগ্রামে চাহিদা ছিল ১ হাজার ৪৫৬, এবার ১ হাজার ৫৫৮, ময়মনসিংহে ছিল ৭২২, এবার ৭৭৩, সিলেটে ছিল ৫৭৪, এবার ৬১৪, কুমিল্লায় ছিল ১ হাজার ৩২৭, এবার ১ হাজার ৪২০, খুলনায় ছিল ১ হাজার ৭৬০, এবার ১ হাজার ৮৮৩, বরিশালে ছিল ২৯৩, এবার ৩১৪, রাজশাহীতে ছিল ১ হাজার ৭৫৪, এবার ১ হাজার ৮৭৬, রংপুরে ছিল ৯৪৬, এবার ১ হাজার ১২ মেগাওয়াট চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ২৭ মার্চ দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ১৩ হাজার ৩৬৯ মেগাওয়াট। রোদের তীব্রতা বাড়লে চাহিদা বেড়ে হবে ১৫ হাজার ৭৬৬ মেগাওয়াট। অর্থাৎ চাহিদা আরো ২ হাজার ৩৯৭ মেগাওয়াট বেড়ে যাবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে মূল সঙ্কট জ্বালানি। এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনে মোট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে ২ হাজার ২৫২ মিলিয়ন ঘনফুট। কিন্তু এখন সরবরাহ করা হচ্ছে এর অর্ধেক ১ হাজার ১১৪ মিলিয়ন ঘনফুট। এর চাইতে বেশি গ্যাস সরবরাহ করা বেশ কঠিন বলে জানিয়েছে পেট্রোবাংলা। অন্যদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের বিকল্প হিসেবে জ্বালানি তেল ব্যবহার করা হয়। গ্রীষ্মে চাহিদা বেড়ে গেলে বেশি মাত্রায় জ্বালানি তেল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এখন আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। ফলে গ্রীষ্মে অতিরিক্ত চাহিদা প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়াট সৃষ্টি হলে তা মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। এই দুই কারণ ছাড়াও বিতরণ ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে গ্রীষ্মে লোডশেডিং করতে হয়। শহরাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ করা হলেও গ্রামীণ জনপদে এই সময় লোড ম্যানেজমেন্ট করা হয়। এবারও সেই উদ্যোগ আগেভাগেই নিয়েছে সরকার। বিদ্যুৎ বিভাগ গ্রীষ্ম এবং সেচকে সামনে রেখে যে পুস্তিকা প্রকাশ করেছে তাতে বলা হচ্ছে। চলতি মৌসুমে অনুরূপ লোড ম্যানেজমেন্ট হাতে নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের বর্তমান পরিস্থিতিতে লোডশেডিং হবে না বলে আশা করা যায়। হলেও তা সহনীয় পর্যায়ে রাখার ব্যবস্থা নেয়া হবে। অর্থাৎ এবারও লোডশেডিং হবে না এই কথা জোর দিয়ে বলতে পারছে না বিদ্যুৎ বিভাগ। বিভাগের পুস্তিকা বলছে লোডশেডিং হবে। কিন্তু তা থাকবে সহনীয় মাত্রায়।
সাভারে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠি শিমুলিয়াবাসী
সাভার থেকে সেলিম আহমেদ জানান, সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানাধীন শিমুলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। আকাশে মেঘ জমলেই কিংবা সামান্য বাতাস শুরু হলেই পালিয়ে যায় বিদ্যুৎ। এই প্রচণ্ড তাপদাহে বিদ্যুতের ভেলকিবাজির শেষ নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে।
বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং-এ সব চেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছে কোমলমতি শিশুরা। গভীর রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে প্রচণ্ড গরমের যন্ত্রণায় প্রতিটি বাড়িতে শোনা যায় শিশুদের আত্বচিৎকার। স্কুল কলেজ ও মাদরাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা রয়েছে চরম বিপাকে। নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ভোগান্তি। ঘন ঘন এমন লোডশেডিংয়ের কারণে কম্পিউটার, ফ্রিজ, পানির মোটর, টেলিভিশনসহ বিদ্যুৎচালিত যন্ত্রপাতি বিকল হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সামনে পবিত্র রজমান মাসে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। শিমুলিয়ার গোহাইল বাড়ী এলাকার বাসিন্দা হাফিজুর রহমান বলেন, গরমের শুরুতেই ঘন ঘন লোডশেডিং-এ আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। রোববার গোহাইল বাড়ি এলাকায় লোডশেডিং হওয়ায় এক ঘণ্টা পর আবারো লোডশেডিং; এভাবেই কেটেছে দিনটি। গতকাল (সোমবার) বেলা সাড়ে ১১টার দিতে লোডশেডিং হলে আসে দীর্ঘ সময় পর। তবে পল্লী বিদ্যুতের একাধিক লাইনম্যানের দাবি ঝড় বৃষ্টি, আবার মেইন লাইনে গাছের ডাল পড়ে নানান সমস্যার কারণে লোডশেডিং হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎসেবা দেয়ার।
গোহাইলবাড়ি এলাকার বাসিন্দা স্থানীয় সাংবাদিক তুহিন আহামেদ বলেন, লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এলাকাজুড়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের বদলে নিরবচ্ছিন্ন লোডশেডিং চলছে। দিনে কাজের সময় বিদ্যুৎ পাওয়া যায় না। আর রাতে ঘুমানোর সময়ও বিদ্যুৎ থাকে না। গত জ্জ দিন ধরে গোহাইলবাড়ী, কোনাপাড়া, টেংগুড়ী ও এর আশপাশ এলাকার বাসিন্দারা লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় লোডশেডিং একবার হলে ২/৩ ঘণ্টার আগে বিদ্যুৎ আসে না। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কখনো ৫-৬ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকে না। ঘরের কাজ-কর্মসহ শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়ায় বিঘ্ন ঘটছে। এছাড়াও ঘন ঘন লোডশেডিং এর পরও মাসে অতিরিক্ত বিলের ভোগান্তিতো রয়েছেই। ঘন ঘন লোডশেডিং এর বিষয়ে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. শাহজাহান কবীর জানান, শিমুলিয়ার গোহাইলবাড়ী এলাকায় রোববার আবহাওয়ার কারণে লোডশেডিং সমস্যা হয়েছিল। গতকাল কোনো সমস্যা হয়নি।
খাগড়াছড়িতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বেহাল দশা :
ইব্রাহিম শেখ খাগড়াছড়ি থেকে জানান, খাগড়াছড়িতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বেহাল দশা। প্রধানমন্ত্রী ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেওয়ার ঘোষণা দিলেও এখনো জেলার অনেক পাহাড়ী গ্রামগুলোতে পৌঁছেনি বিদ্যুতের আলো। জেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ হয়নি এখনো দেড় শতাধিক গ্রামে। এ জেলায় ৮০ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেও ঘন ঘন লোডশেডিং অতিষ্ঠ করে তুলেছে গ্রাহকদের। লোডশেডিং ছাড়াও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা কমচারীদের অনিয়ম দুর্নীতি আরো বেশি অতিষ্ঠ করে তুলেছে অসহায় গ্রাহকদের। বিদ্যুৎ সংযোগে ঘুষ নেওয়া, টান্সফরমার নষ্ট হলে হাজার হাজার টাকা দাবিী, ভুতুরে বিদ্যুৎ বিল, মিটার রিডিংয়ে কারসাজি, টাকার বিনিময়ে খুটি ছাড়া গাছ বাশে তার পেঁচিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ, বিদ্যুৎ লাইনে কোনো সমস্যা দেখা দিলে কর্মীদের কল করে না পাওয়া ইত্যাদি নানান অনিয়মের মধ্যে নিমজ্জিত খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ বিভাগ।
চলতি মাসের ৪ তারিখ বিদ্যুৎ লাইনের কাজ করতে গিয়ে মিরন্টু চাকমা নামে এক কর্মী মারা যান। দিঘীনালা উপজেলার কবাখালী ইউনিয়নের মুসলিম পাড়ায় ১১ হাজার কেবি লাইনের কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে বিদ্যুতের খুঁটিতেই ঝুলে মারা যান মিন্টু চাকমা। এভাবে প্রায়শই বিদ্যুৎকর্মী মারা যায়। এটি অনিয়মের অন্যতম উদাহরণ।
খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৗশলী স্বাগত সরকার জানান, আমি যতটুকু জানি সংযোগ দেওয়ার জন্য টাকা নেওয়া হয় না। তবে মিটার বাবদ ৫-৭ হাজার কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৯ হাজার টাকাও লাগে। টান্সফরমারের জন্য কোনো টাকা নেয়া হয় না।
জেলা পটুয়াখালী থেকে মো. জাকির হোসেন জানান, গত ২১ মার্চ পটুয়াখালীর পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদিত ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ কার্যক্রমের অনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পাশাপাশি ঘোষণা করেন শতভাগ বিদ্যুতায়নের। ১৩২০ মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রায় নির্মীত পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু চার বছরের নির্ধারিত সময়ের আগেই জাতীয় গ্রীডে গত ২০২০ সালের ১৫ মে প্রথম ইউনিট থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ করে।
পটুয়াখালী পল্লী বিদুৎ সমিতির জিএম শাহ মো. রাজ্জাকুর রহমান বলেন, পটুয়াখালী পল্লী বিদুৎ সমিতি ১৪ হাজার ১৭২ কিলোমিটার লাইনের মাধ্যমে ৪ লাখ ২১ হাজার ৬৫৩ জন গ্রাহককে গড়ে চাহিদা অনুযায়ী ৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৮৭ মেগাওয়াট বিদুৎ সরবরাহ করে আসছে। তিনি আরো জানান পটুয়াখালীতে বর্তমানে কোনো লোডশেডিং নেই, মাঝে মাঝে লাইনের মেরামতের জন্য সাময়িক বিদুৎ সরবরাহ এলাকা ভিক্তিক বন্ধ করা হয়, এছাড়াও পটুয়াখালী পল্লীবিদুৎ সমিতির সিস্টেম লসের পরিমাণ গতবছরের ১০.৪৪ ভাগ থেকে বিগত ফেব্রুয়ারি মাসে তা ৫.৪৮ নামিয়ে আনা হয়েছে।
মো. হাসান চৌধুরী, সুনামগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, পবিত্র মাহে রমজান শুরু হওয়ার আগেই সুনামগঞ্জ জেলায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থার অবনতি শুরু হয়েছে। তবে বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি বিদ্যুৎ ব্যবস্থার কোনো ঘাটতি নেই। সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) জানায়, সারা জেলায় গ্রাহকের সংখ্যা ২৯ হাজার ৯ জন। গত অর্থ বৎসরে এসব গ্রাহকদের ব্যবহৃত বিদ্যুৎ থেকে সরকার ৩২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা রাজস্ব আয় করে। পল্লীবিদ্যুতের উপজেলা ভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ৩৫,৮৯৪ জন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ৩৯৭৭৯ জন, তাহিরপুর উপজেলায় ৪১,৮৯৭ জন, জামালগঞ্জ উপজেলায় ৩৯,৭০৭ জন, দিরাই উপজেলায় ৩৪,১৩৮ জন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় ৩০,০৮৭ জন, ছাতক উপজেলায় ৪৭,৬১৩ জন, দোয়ারাবাজার উপজেলায় ৪৬,২১৪ জন, জগন্নাথপুর উপজেলায় ২৬,২০৮ জন, শাল্লা উপজেলায় ১৯,৯৭০ জন গ্রাহক রয়েছে। জেলার ১০ উপজেলার ৮০টি ইউনিয়নের ২৭৯৬টি গ্রামে শতভাগ বিদ্যুতায়ন রয়েছে। জেলার ধর্মপাশা উপজেলায় কয়েকটি গ্রাম সুনামগঞ্জ পল্লীবিদ্যুতের আওতায় থাকলেও বেশিরভাগ এলাকা নেত্রকোনা জেলা পিডিবির আওতায় রয়েছে। সুনামগঞ্জ পল্লীবিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৬৩ মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ রয়েছে ৪৬ মেগাওয়াট। তারপরও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল রয়েছে বলে দাবি করছেন পল্লীবিদ্যুৎ কর্মকর্তারা। লোডশেডিং নেই বলেও দাবি পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের।
মাদারীপুর থেকে আবুল হাসান সোহেল জানান, মাদারীপুর জেলা শতভাগ বিদ্যুতায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। জেলার নবগঠিত ডাসার উপজেলাসহ মোট ৫টি উপজেলায় ইউনিয়নের গ্রামাঞ্চলে ওয়েস্টার্ন পাওয়ার সাপ্লাই কোম্পানি (ওজোপডিকো) ও মাদারীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির যৌথ প্রচেষ্টায় জেলার শিবচর উপজেলার চরাঞ্চল চরজানাজাত, কাঠালবাড়ীসহ জেলার প্রতিটি গ্রামে বিদ্যুতের বিদ্যুতের আলো পৌঁছে গিয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহ ও অনিয়ম দুরিকরণে মাদারীপুর জেলাকে প্রিপেইড সিস্টেমের আওতায় কাজ করছে বিদ্যুত বিভাগ। খুবই শিগগিরই এর বাস্তবায়নের সফলতা পাবে মাদারীপুর জেলাবাসী এমনটা আশা সংশ্লিষ্টদের। মাদারীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. জানাব আলী বলেন, সমিতির আওয়ায় মাদারীপুরের ৫টি উপজেলায় ১১২৩ গ্রামে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৩০৯ জন গ্রাহক রয়েছে। প্রতিদিন চাহিদামতে ৭০ মেঘাওয়াট বিদ্যুতের সরবরাহ পূরণ করা হচ্ছে। কোনো লোডশেডিং নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।