Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আ.লীগ স্বাধীনতার মূলনীতি ধ্বংসের মূল হোতা

সিলেটে মির্জা ফখরুল

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০২২, ১২:০৩ এএম

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছিলেন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সফল রাষ্ট্রনায়ক। তার প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শুধু দলের নয়, জাতীয় অস্তিত্বের দর্শন। আওয়ামী লীগ নিজেদের স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি দাবি করে। কিন্তু তারাই স্বাধীনতার মূলনীতি ধ্বংসের মূল হোতা। তারা শুরু থেকেই নিজেদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে জাতির সাথে প্রতারণা করেছে। নিজেদের স্বার্থে তারা ৭২ সালে সংবিধান সংশোধন করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করে। তাদের দুঃশাসনের কারণে ৭৪ সালে দেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়। ৭৬ সালে শহীদ জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালে দেশের সমৃদ্ধির জোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল।
আওয়ামী লীগের বাকশালের ধ্বংসস্তুপ থেকে টেনে এনে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন জিয়াউর রহমান। তাই তাদের মুখে শহীদ জিয়ার সমালোচনা শোভা পায়না। শহীদ জিয়া প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্রের নতুন উদাহরণ সিলেটে দিনের ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচন। গণতন্ত্র হত্যাকারী সরকারের কাছে জেলা বিএনপির ভোট নজির হয়ে থাকবে। তৃনমূলের ভোটে নির্বাচিত নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে আগামীতে দেশে বড় আন্দোলনের পথকে প্রশস্ত করবে। বাকশালী সরকারের হাত থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।

গতকাল ঐতিহাসিক রেজিষ্টারী মাঠে সিলেট জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের সভাপতিত্বে, বিএনপির কেন্দ্রীয় সিলেট বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন, জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহবুবুর রব চৌধুরী ফয়সল ও মাহবুবুল হক চৌধুরী পরিচালনায় অনুষ্ঠিত কাউন্সিলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা নিখোঁজ জননেতা এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মিনী তাহসিনা রুশদীর লুনা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরো বলেন, জিয়াউর রহমান গার্মেন্টস ও রেমিটেন্স সিস্টেম চালুর মাধ্যমে দেশে উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতি সূচনা করেছিলেন। দেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের শত্রুরা শহীদ জিয়াকে হত্যা করে। তারাই এখন শহীদ জিয়া প্রবর্তিত বহদলীয় গণতন্ত্রের পতাকা সমন্নুত রাখতে নিয়োজিত তিন বারের সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে। দেশনায়ক তারেক রহমানকে দেশে ফিরতে দিচ্ছেনা। হাজার মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

বিচার বিভাগকে পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। প্রশাসনকে দলীয় ক্যাডারের ভূমিকা পালনে বাধ্য করছে। মেগা উন্নয়নের নামে আওয়ামী লীগ মেগা দুর্নীতির নামে লুটপাট করছে। ১০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে শুরু করা পদ্মা সেতুর ব্যয় বেড়ে এখন ৩০ হাজার কোটি টাকা। লুটপাটের মাহাউৎসব চলে পদ্মা সেতুকে নিয়ে। এভাবে মেট্রোরেল সহ বড় বড় মেগা প্রকল্প গুলো মূলত আওয়ামী লীগের লুটপাটের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব দুর্নীতির টাকা তারা বেগম পাড়ায় পাচার করছে। দলীয় লোকদের গঠিত সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্যের এমন অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি। বর্তমান সরকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেও পুরোপুরি ব্যার্থ। খুন, গুম, হত্যা ও ধর্ষণের হিড়িক চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীকে রাজনীতির ময়দানে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা আমাদের নেত্রীকে তাচ্ছিল্য করে কথা বলা প্রমাণ করে প্রশাসনকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সিলেটের জনপ্রিয় নেতা ইলিয়াস আলী, ছাত্রদল নেতা ইফতেখার আহমদ দিনার, জুনেদ আহমদ ও গাড়ী চালক আনসার আলীকে গুম করে রাখা হয়েছে। অবিলম্বে তাদেরকে অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় সময়ের ব্যবধানে সকল হিসাব আওয়ামী লীগকে দিতে হবে।

পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে কাউন্সিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী ও খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, বিএনপির কেন্দ্রীয় সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, কেন্দ্রীয় সহ ক্ষুদ্র ঋণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও বগুড়া পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশা, সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

অনুভুতির বক্তব্য পেশ করেন, নিখোঁজ ছাত্রদল নেতা ইফতেখার আহমদ দিনারের বাবা ডা. মঈন উদ্দিন, গুম হওয়া বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর ছেলে ব্যারিষ্টার আবরার ইলিয়াস, ছাত্রদল নেতা জুনেদ আহমদের মাতা আয়েশা বেগম, গাড়ী চালক আনসার আলীর স্ত্রী মুক্তা বেগমের কাছে সমবেদনামূলক সম্মাননা ক্রেষ্ট তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সুন্দর ও প্রাণবন্ত কাউন্সিল আয়োজন করায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট আব্দুল গাফফারসহ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ ও নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কাউন্সিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সদস্য আলী আজগর তালুকদার হেনা, কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, কেন্দ্রীয় সদস্য এডভোকেট হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী, মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নাসিম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ