Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ভবন সঙ্কটে পাঠদান ব্যাহত

ধর্মপুর ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা

মো. ওমর ফারুক, ফেনী থেকে | প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০২২, ১২:০৬ এএম

ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের অত্যন্ত হতদরিদ্র গ্রাম ধর্মপুর। সেখানেই অবস্থিত প্রাচীণতম বিদ্যাপিঠ সুনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধর্মপুর ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা। এ মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯০ সালে। এরপরে একাডেমিক স্বীকৃতি পায় ১৯৯৪ সালে। এমপিও হয় ১৯৯৬ সালে। মাদরাসায় বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৮শ’ এর ওপরে। শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ২০ জন। মাদরাসাটি ১০৭ শতাংশ জায়গার মধ্যে অবস্থিত। প্রাচীনতম এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে কোনো একাডেমিক ভবন নেই। বর্তমানে যে সকল শ্রেণিকক্ষ রয়েছে সেগুলোতে শিক্ষার্থীদেরকে গাদাগাদি করে ক্লাস করতে হচ্ছে। ভবন সঙ্কটে পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে এ মাদরাসায় পাশের হারও সন্তোষজনক। কিন্তু মাদরাসাটি সীমান্ত ঘেঁষা হওয়ায় এবং মাদরাসা ক্যাম্পাসের এড়িয়া জুড়ে কোনো ধরনের সীমানা প্রাচীর না থাকায় ছাত্র-ছাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন প্রতিনিয়ত। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এখানে দিন-রাত মাদকসেবীদের আড্ডা ও জমজমাট মাদকের ব্যবসা চলছে বলে জানা যায়।
ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, এই মাদরাসাটি তাদের এলাকার মধ্যে অত্যান্ত সুনামধন্য একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকবৃন্দের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ছাত্র-ছাত্রীরা ফলাফল ভালো করছেন। শিক্ষার মানও ভালো। কিন্তু মাদরাসায় পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষের অভাবে পাঠদানে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যদিকে মাদরাসাটি সীমান্তের খুব কাছে হওয়ায় তারা তাদের ছেলে মেয়েদেরকে নিয়ে খুবই চিন্তিত। কারণ দিনে রাতে সমানতালে মাদকসেবীদের আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়। তারা এ ব্যাপারে সদর আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

ধর্মপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সাকা বলেন, অত্র মাদরাসায় কোনো একাডেমিক ভবন নেই। ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে। এ বিষয়ে এর আগেও দুই তিনবার এমপি মহোদয়ের ডিও লেটার দেয়া হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। মাদরাসার ভবণ নির্মাণে মন্ত্রণালয় থেকে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। মাদরাসার এড়িয়ায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণ খুব জুরুরি।

অত্র মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও শিক্ষানুরাগী এ এম জাফর উল্যাহ ভূঁঞা বলেন, এ মাদরাসাটি অত্যান্ত প্রাচীন এবং সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান। এটি সীমান্তের খুব কাছে অবস্থিত। মাদরাসাটিতে কোন একাডেমিক ভবণ নেই। এ মাদরাসায় প্রায় ৮শ’ ছাত্র-ছাত্রী আছে। শ্রেণিকক্ষের অভাবে শিক্ষার্থীরকে ভালো পরিবেশে আমরা পাঠদান দিতে পারছি না। এদিকে মাদরাসা এলাকায় রাতের আঁধারে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবনকারীদের আড্ডাস্থলে পরিনত হয়েছে। মাদরাসার চতুরপাশে কোন সীমানা প্রাচীর নেই। ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিনিয়ত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আমি ফেনী-২ আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য তিনি যাতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের উদ্যোগ নেন। মাদরাসার ভবণ সঙ্কটের বিষয়ে এমপির ডিও লেটারসহ একটি ফাইল শিক্ষামন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছি। আশা করছি আমরা খুব শিগগিরই বরাদ্ধ পাবো।

মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আবদুল লতিফ বলেন, মাদরাসাটি দরিদ্র জনবহুল এলাকায় অবস্থিত। এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে আমরা সরকারিভাবে কোনো একাডেমিক ভবন পাইনি। এখন মাদরাসায় ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৮শ’ ওপরে। এতো ছাত্র-ছাত্রীর শ্রেণিকার্যক্রম নিবিঘ্নভাবে চালিয়ে নেয়ার মতো ব্যবস্থাপনা আমাদের নেই। এদিকে মাদরাসাটি সীমান্তবর্তী হওয়ায় এখানে নানা অপরাধীদের আড্ডা জমে। শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আমরা এ ব্যাপারে সদর আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারীর আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ