বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সিলেট জেলা বিএনপির বহুল প্রত্যাশিত সম্মেলন ও কাউন্সিল কাল মঙ্গলবার (২৯ মার্চ)। সম্মেলনস্থল সিলেট রেজিস্ট্রি মাঠ। এ লক্ষ্যে রেজিস্ট্রি মাঠ তৈরির সর্বশেষ প্রস্তুতি। ইতোমধ্যে মাঠজুড়ে প্যান্ডালের বাঁশ পোতা ও টানানো হয়ে গেছে। বাকি শুধু শামিয়ানা টানানো এবং লাইটিংয়ের কাজ। আজ রাতের মধ্যেই পুরোপুরি প্রস্তুত করা হবে সম্মেলনস্থল। সকাল ১০টা থেকেই শুরু হবে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম। এছাড়াও সোমবার (২৮ মার্চ) বিকেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের উপস্থিতিতে ভোটারদের মাঝে কাউন্সিলর কার্ড বিতরণ করেছে নির্বাচন কমিশন। এদিকে, সম্মেলন ও কাউন্সিলকে ঘিরে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। ইতোমথ্যে কর্মী-সমর্থকরা নিজেদের পছন্দের নেতার ছবিসংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন টানিয়েছেন সমাবেশস্থলের আশপাশে। রাস্তার বিভিন্ন পয়েন্টে তৈরি করা হয়েছে তোরণ। আজ রাত পর্যন্ত ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে জেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) সূত্র জানিয়েছে, সমাবেশস্থলের বিশৃঙ্খলাসহ যে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি বা ঘটনা ঠেকাতে পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। আগামীকাল সকাল থেকেই সমাবেশস্থলে মোতায়েন করা হবে পুলিশ।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। সম্মেলনের পরপরই অনুষ্ঠিত হবে জেলা বিএনপির কাউন্সিল। এর মাধ্যমে এ কমিটিতে আসবে নতুন নেতৃত্ব। ১৮ শ ১৮ জন ভোটার নির্বাচিত করবেন জেলা বিএনপির শীর্ষ পদের নেতা। গত ২১ মার্চ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো এ সম্মেলন ও কাউন্সিল। তবে ২৪ ঘন্টা আগে কেন্দ্রের নির্দেশে এ দুটি আয়োজন স্থগিত করা হয়। কেন্দ্র থেকে পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয় ২৯ মার্চ। সম্মেলন ও কাউন্সিল হওয়ার কথা ছিলো সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠে। তবে এদিন আলিয়া মাদরাসারা মাঠের পার্শ্ববর্তী জেলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও মঙ্গোলিয়া ফুটবল দলের মধ্যে খেলা অনুষ্ঠিত হবে। তাই কেন্দ্রের সম্মতিতে সম্মেলন ও কাউন্সিলের স্থান পরিবর্তন করে নিয়ে আসা হয় রেজিস্ট্রি মাঠে।
সিলেট জেলা বিএনপির কাউন্সিলে ৩ পদে লড়বেন ৯ জন। সভাপতি পদে আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ও আবুল কাহের চৌধুরী (শামীম), সাধারণ সম্পাদক পদে আলী আহমদ, অ্যাডভোকেট ইমরান আহমদ চৌধুরী, মো. আব্দুল মান্নান ও আ. ফ. ম কামাল, এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট এম মুজিবুর রহমান মুজিব, লোকমান আহমদ ও মো. শামিম আহমদ। এবারের কাউন্সিলে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সভাপতি পদে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছিলেন। অবশেষ গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন তিনি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে- আগামীকাল (মঙ্গলবার) সিলেট জেলা বিএনপির শীর্ষ তিন পদে নেতা নির্বাচন করবেন কাউন্সিলররা। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন নিয়মে অনুষ্টিত হবে সিলেট জেলা বিএনপির কাউন্সিল।
জেলা বিএনপি সূত্র জানায়, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার কাউন্সিলে ভোট দিবেন ১৮ শ ১৮ জন ভোটার। এর আগে ১৯৯৩ সালে একবার এভাবে বিভিন্ন ইউনিট কমিটির সবাই জেলা কাউন্সিলে ভোট দিয়েছিলেন। আর দীর্ঘ ২৯ বছর এবার সেই নিয়মে হচ্ছে জেলা বিএনপির নেতৃত্ব নির্বাচন। সম্মেলন ও কাউন্সিলকে সামনে রেখে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন ১৩ বিএনপি নেতা। তবে যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাহার শেষে ৩ পদে লড়াই করবেন ৯ জন। যদিও সভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এই ৫ পদে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু কেন্দ্রের নির্দেশনায় গত ১৭ মার্চ সকালে জেলা বিএনপি সিদ্ধান্ত নেয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এই ৩ পদে নির্বাচন হবে। এই ৩ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীরা ওইদিন জমা দেন মনোনয়নপত্র। এর আগে কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে গত ১৬ মার্চ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এই ৫টি পদে মনোনয়নপত্র কেনেন জেলা বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রায় ৩০ জন নেতা। তবে কেন্দ্রীয় বিএনপির ১৭ মার্চ নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিকেল ৫টা পর্যন্ত উল্লিখিত ৩টি পদের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেন।
বিএনপি সিলেট জেলা শাখার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল গাফফার বলেন, এবারে মোট ১৮ শ ১৮ জন কাউন্সিলর ভোট দেবেন। মঙ্গলবার দুপুর ১২ টা থেকে ভোটগ্রহণের সম্ভাব্য সময়। চলবে একটানা বিকাল পর্যন্ত। নির্বাচনে আইজীবী ফোরামের নেতৃবৃন্দ সহযোগিতা করবেন। নির্বাচন পরিদর্শন করবেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য, সাংবাদিক ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।