পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে। টিপু হত্যার কিলিং মিশনে অংশ নেয় ভাড়াটে দুই খুনি। খুনের মিশন যেন ব্যর্থ না হয় সে জন্য তার কাছের লোকজনকে ম্যানেজ করা হয় কয়েক মাস আগে। এ ঘটনায় তিনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। এর মধ্যে রয়েছে তারই গাড়ির চালক ও দেহরক্ষী সাগর। হত্যাকান্ডের নেপথ্যে সক্রিয় রয়েছেন দক্ষিণ মহানগর আওয়ামীলীগের একজন প্রভাবশালি নেতা, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা (খুনের আসামী) ও সুবিধা বঞ্চিত স্থানিয় নেতাকর্মীদের একটি অংশ। পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দাদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, আওয়ামী লীগ নেতাসহ এক ছাত্রী হত্যার ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আসামি শনাক্তের কাজ চলছে। তদন্তের অগ্রগতি আছে। খুব দ্রুতই হত্যাকান্ডের মোটিভ ও আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
সূত্র মতে, গত দুই বছর ধরে কমলাপুর রেল কলোনী ও শাজাহানপুর গরুর হাট নিয়ে মতিঝিল ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতার সঙ্গে বিরোধে জড়ান টিপু। এর আগে তিনি তিনি বিদেশে ছিলেন। ক্যাসিনো কান্ডে বহিস্কৃত যুবলীগ নেতা খালেদ জেলে যাওয়ার পর ওই ছাত্রলীগ নেতা কয়েকবছর আগে দেশে ফিরে এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে খালেদের শাজাহানপুর এলাকার ডিস ও ইন্টানেটের ব্যবসাও নিয়ন্ত্রনে নেন। এ নিয়ে খালেদের নেতাকর্মীদের সাথে তিনি বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। এসব বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর হলে সেই নেতা কিছুদিন আত্নগোপনে যান। এই সুযোগে খালেদের বাগিচা এলাকার ক্যাডারদের নিয়ে টিপু ডিস ও ইন্টারনেটে ব্যবসা নিজের আয়ত্বে নেন। সম্প্রতি ওইসব ব্যবসা থেকে টাকার ভাগ পাচ্ছিলোনা খালেদ ও তার নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে খালেদের সঙ্গে টিপুর দুরত্ব বাড়তে থাকে। একই সময়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তী বানিজ্যের একক নিয়ন্ত্রণ ছিলো টিপুর। সম্প্রতি সেখানে ভাগ বসান মহানগর আওয়ামীলীগের এক প্রভাবশালী নেতা। সেই টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ১০ নং ওয়ার্ড আগওয়ামীলীগের এক সাথে ঘটনারদিন সকালেও এজিবি কলোনীতে বিবাদ হয়। তাতে যোগ দেন এক কাউন্সিলর। এ ঘটনার আগে রেলের একটি বড় ধরনের টেন্ডার নিয়ে মহানগর ওই নেতার সাথেও বিরোধ সৃষ্টি হয় টিপুর। সব বিষয় নিয়ে টিপু বিরোধী পক্ষ গুলো এক হয়ে খুনের পরিকল্পনা করে বলে স্থানিয় সূত্র দাবী করেছে।
স্থানিয় সূত্র মতে, ২০১৬ সালে মতিঝিল এলাকায় যুবলীগ নেতা রিজভী হাসান বাবু ওরফে বোচা বাবু খুন হয়। বোচা বাবুর বাবা টিপুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বোচা বাবু হত্যা মামলায় ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এক নেতা, মিলকী হত্যা মামলার আসামি সুমনসহ ১০-১২ জন সবাই যুবলীগের নেতাকর্মী। এই মামলায় ওই নেতাসহ সবাই চার্জশিটভুক্ত আসামি। সম্প্রতি একজন মন্ত্রীকে দিয়ে তিনি ঐ মামলা থেকে তার নাম বাদ দেয়ার সুপারিশ করান। কিন্তু বাদ সাধেন টিপু। বিষয়টি নিয়েও ক্ষিপ্ত ছিলো ওই নেতা। কারন বাবুর পিতা কালাম ছিলো টিপুর ঘনিষ্ট বন্ধু। টিপু হত্যার সময় ওই গাড়িতেই ছিলেন কালাম। সৌভাগ্যেক্রমে বেঁচে যান তিনি।
গতকাল রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, টিপু হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারা জড়িত, নাটের গুরু কারা সবকিছুই গণমাধ্যমের মাধ্যমে দেশবাসীর সামনে নিয়ে আসা হবে। যারাই এ ঘটনায় জড়িত থাকুক, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড কি না এমন প্রশ্নের করা হলে তিনি বলেন, কিলিং পলিটিক্যাল কি না সেই বিষয়ে এখনই মন্তব্য করতে চাই না। আশা করি খুব শিগগির এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে। কাউকেই ছাড় দেয়া হবেনা।
মতিঝিল জোনের ডিসি আব্দুল আহাদ জানান, জোড়া খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম কাজ করছে। আসা করা যাচ্ছে দ্রুতই খুনিদের গ্রেফতার করা হবে। গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগের ডিসি রিফাত রহমান শামীম বলেন, টিপু হত্যাকাণ্ড নিয়ে অনেকগুলো বিষয় সামনে রেখে কাজ করছে ডিবি। তবে আপাদত বলার মতো পর্যায়ে আসেনি। যখন জানানোর মতো হবে তখন ঠিকই সাংবাদিকদের সবার আগে জানানো হবে। শিগগির একটা ভালো খবর জানাতে পারবো বলে আশা রাখি।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার মতিঝিল এজিবি কলোনিতে গ্রান্ড সুলতান নামে রেস্টুরেন্টে কাজ শেষে বাসায় যাওয়ার পথে রাত সোয়া ১০টার দিকে শাজাহানপুরের মানামা ভবনস্থ বাটার দোকানের সামনে টিপুর মাইক্রোবাসটি থামে। এ সময় রাস্তার বিপরীত পাশে মোটরসাইকেলে দুই জন অপেক্ষা করছিল। হেলমেট পরিহিত এক মোটরসাইকেল আরোহী থেমে থাকা মাইক্রোবাসের বামপাশে গিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। গুলিতে গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায়। এতে গলার ডান পাশে, বুকের বাম পাশে, নাভির নিচে, বাম কাঁধের ওপরে, পিঠের বাম পাশের মাঝামাঝি, পিঠের বাম পাশের কোমর বরাবর ও পিঠের ডান পাশের কোমরের ওপরসহ একাধিক স্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান টিপু। এসময় সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা কলেজছাত্রী প্রীতি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।