Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুরাদনগরে অবৈধ ৩শ’ গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন

লাভবান ঠিকাদার : ভোগান্তিতে গ্রাহক

দেবিদ্বার (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০২২, ৭:৩৫ পিএম

কুমিল্লার মুরাদনগরে ৩শ’ পরিবারের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে বাখরাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ। অবৈধ গ্যাস লাইন নির্মাণে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনানুগ ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। গতকাল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্নকরন অভিযান পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার সুমাইয়া মমিন। এতে বাখরাবাদের প্রায় ৩০ জন শ্রমিক অংশগ্রহণ করেছে।

সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের ভূবনঘর থেকে দড়িকান্দি পর্যন্ত ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে প্রায় ১৬শ’ ফুট অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বাখরাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ। এতে বাসা-বাড়িতে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দেয়া প্রায় ৩শ’ পরিবারের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। এ সময় স্থানীয় জনগণ কাঙ্ক্ষিত এ অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে মুরাদনগর উপজেলার সকল স্থানে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য ভ্রাম্যমান আদালতের নিকট দাবি করেন। তবে রহস্যজনক কারণে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উক্ত অবৈধ গ্যাস লাইন নির্মাণে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনানুগ ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

দড়িকান্দি গ্রামের গ্রাহক কফিল উদ্দিন ও সহিদ মিয়াসহ ১০/১২ জন বলেন, ২০১৫ সালে আমরা ৮১ হাজার থেকে শুরু করে লক্ষাধিক টাকা দিয়ে প্রতিটি রাইজার সংগ্রহ করেছেন এলাকার প্রভাবশালী ব্যাক্তি ঠিকাদার হারুন অর রশিদ। গ্যাস কতৃপক্ষ অবৈধ ভাবে যারা গ্যাস সংযোগ দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে শুধু লাইন বিচ্ছিন্ন করে গ্রাহকদের হয়রানি করা হচ্ছে। তারা অবিলম্বে অবৈধ গ্যাস সংযোগকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুল শিক্ষকসহ একাধিক ব্যাক্তি অভিযোগ করে বলেন, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও দালাল চক্র বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন দেবিদ্বার জোনাল অফিস ও জেলা অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট উপজেলার ভূবনঘর পশ্চিমপাড়া, পূর্ব পাড়া, দড়িকান্দি, দুলারামপুর ১১ হাজার ফুট, বোরারচর জাহাপুর ৩০ হাজার ফুট, দড়িকান্দি ১ কিলোমিটার, করকটিয়া, সোনাপুর ২ কিলোমিটার, সুবিলারচর ২ কিলোমিটার, কোম্পানীগঞ্জ ৩ কিলোমিটার, রানীমুহুরী, বড়ইয়াকুড়ি, বোরারচর ৬ কিলোমিটার, নোয়াকান্দি ৯শ’ ফুট, ধামঘর ৩৫০ ফুট, পালাসুতা ৬০০০ ফুট, পায়ব কিলোমিটার, শুশুন্ডা ৩ কিলোমিটার, কুলুবাড়ি, বাখরনগর ৫ কিলোমিটার, মধ্যনগর, করিমপুর ৩ কিলোমিটার, নবীপুর ৩ কিলোমিটার, নগরপাড় দেড় কিলোমিটার, গুঞ্জর ৩ কিলোমিটার, পৈয়াপাথর দেড় কিলোমিটার ও নহল, রামনগর, ধামঘর ৩৬০০ ফুট গ্যাস লাইনের মাধ্যমে অবৈধভাবে গ্যাসের আবাসিক সংযোগ দিয়ে সাধারন নিরীহ গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। অবৈধ গ্যাস সংযোগের তালিকাসহ একটি অভিযোগ বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন, পেট্্েরাবাংলাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দেওয়া হয়। যার পরিপেক্ষিতে বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন ও পেট্রোবাংলার প্রধান কার্যালয় থেকে পৃথক দুইটি তদন্ত দল সরেজমিনে তদন্ত করে সত্যতা পায় এবং সংশ্লিষ্ট দফতরে রির্পোট প্রধান করা হলেও অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও অবৈধ গ্যাস লাইন গুলোর বিষয়ে কোন প্রকার প্রদক্ষেপ না নেওয়ায় জনগণের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরী হয়েছে।

অভিযুক্ত ঠিকাদার হারুন অর রশিদ বলেন, আমি কোন ঠিকাদার নই। আমার নামে কোন লাইসেন্স নেই। ভূবনঘর থেকে দড়িকান্দি পর্য়ন্ত গ্যাস লাইনটি আজিজুর রহমান রনির স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস মতি এন্টার প্রাইজ করেছে। আমি শুধু মধ্যস্থতা হিসেবে কাজ করেছি।

বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর লিমিটেডের কুমিল্লা দপ্তরের ভিজিলেন্স শাখা জানায়, দুইজন উপ-মহাব্যবস্থাপকের উপস্থিতিতে অভিযানে ১৩টি রাইজার ও ১৬’শ ফুট পাইপ জব্ধ করা হয়েছে। আরো প্রায় অর্ধশতাধিক রাইজার ছিল। অভিযানের খবর পেয়ে গ্রাহকরা সরিয়ে ফেলে। সব অবৈধ গ্যাস লাইন পর্যায়ক্রমে বিচ্ছিন্ন করা হবে। নিয়মিত এ অভিযান চলবে। সংযোগ যারা দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ