Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বাঘায় পাকুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম মেরাজ আটক

বাঘা (রাজশাহী) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০২২, ৭:১০ পিএম

রাজশাহীর বাঘায় পাকুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম মেরাজকে আটক করেছে পুলিশ। গত ২১ মার্চ উপজেলা আ’লীগের সম্মেলনে হামলার অভিযোগে রবিবার (২৪-মার্চ) সকালে রাজশাহী জেলার শিরোইল এলাকা থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেরাজুল ইসলাম মেরাজ। তার বাড়ি সীমান্ত এলাকার কিশোরপুর গ্রামে। পিতার নাম রাকিব সরকার।


উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আরাফুল ইসলাম বাবুল, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম মন্টু, অধ্যক্ষ নছিম উদ্দিন,আ’লীগ নেতা মাসুদ রানা তিলু ও বাঘা পৌরসভার কাউন্সিলর ও দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রহমান পিন্টু জানান, মেরাজ বর্তমান সরকার আমলের প্রথম ১০ বছর একক ভাবে বালু ব্যবসা করে প্রচুর টাকার মালিক হয়েছেন। এই বালু উঠাতে গিয়ে যে স্থানে তার ইজারা নেয়া আছে ,সেই স্থানে বালু না তুলে অন্যস্থানে অবৈধ ভাবে উত্তোলন করায় উপজেলা ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শাহিন রেজা দুই দফা তার ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন।

তারা আরো জানান, মেরাজুল ইসলাম বালু উত্তোলনের জন্য প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে একটি প্লেটার মেশিন এবং ৩৫ লক্ষ টাকা দিয়ে প্রিমিও গাড়ি ক্রয় করে সেই গাড়িতে ঘুরে বেড়ান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাঘা সাবরেজিষ্ট্রি অফিসের একজন কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি মেরাজ চেয়ারম্যানের নামে দু’দকে কে-বা কাহারা অভিযোগ করায়, তার নামীয় সম্পদ অনুসন্ধানে দু’দক আমাদের কাছে তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছেন। আমরা খুব শীঘ্রই এ তথ্য প্রেরণ করবো।

বাঘা থানা পুলিশের একটি মুখপত্র জানান, ২০১৭ সালে ফরিদপুরের গোপালগঞ্জ থানায় মেরাজুল ইসলাম ও তার খালু নওশাদ আলীর বিরুদ্ধে আদম ব্যবসার নামে প্রায় অর্ধকোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা করেন জনৈক ব্যাক্তি। যার নম্বর ৪১৭/১৬ । এ মামলায় তার খালু গ্রেফতার হয়। পরে এ নিয়ে পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে, জেলা ছাত্রলীগের পদ ও রাজনৈতিক ক্যারিয়ার রক্ষার্থে তিনি ও তার খালু সেই মামলা আপোষ করে নেন।

উল্লেখ্য, গত সোমবার (২১ মার্চ) বেলা ১১ টায় বাঘার শাহদৌলা সরকারি কলেজ মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন চলা অবস্থায় জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বাঘা পৌরসভার সাবেক মেয়র আক্কাস আলী সভাপতি হতে না পারার অবস্থান বুঝতে পেরে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে লাটি-সোটা নিয়ে চেয়ার ভাংচুর ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় যারা সম্পৃক্ত ছিলো তাদের মধ্যে আক্কাস আলীর আপন ভাগনা ও পাকুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলামের ভূমিকা ছিলো ব্যাপক উগ্রবাদী।

এ ঘটনায় প্রায় ৩০ জন আহত হন। এ বিষয়ে থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই মামলার দুই নম্বর আসামী ও আক্কাস আলীর সেকেন্ড ইন কমান্ড মেরাজুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আটক করেছে পুলিশ।

বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন জানান, মেয়র আক্কাছ আলীর বিরুদ্ধে ১৯৯৬ সালে আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কালো পতাকা দেখানোর অপরাধে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়ে ছিলো। পরবর্তী সময় ২০০০ সালে তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করলে তাকে ফের দলে নেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে বিগত সময়ে বহুল আলোচিত মামলা ও জিডি রয়েছে।

সর্বশেষ ২১ মার্চ উপজেলা আ’লীগের সম্মেলন স্থলে তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে তান্ডব চালিয়েছে তাতে সকল নেতা ও স্থানীয় লোকজন তার ক্ষুব্ধ। এ ঘটনায় থানায় পৃথক দু’টি মামলা দায়েরের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে । তবে তার ভাগনা মেরাজুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহীর শিরোইল এলাকার একটি বাড়ি থেকে আটক করা সম্ভব হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ