Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুন্দরগঞ্জে বেলকা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র দখলমুক্ত করলেন ইউএনও

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০২২, ৬:০০ পিএম

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের বেলকা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ অভিযান চালিয়ে প্রায় এক যুগ ধরে অবৈধ দখলে থাকা স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দখলমুক্ত করেন। এ সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদ আল হাসান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবুল ফাত্তাহ, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা প্রশাসনের এমন অভিযান পরিচালনাকে সাধুবাদ জানিয়ে এলাকার অনেকেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে জানান, হাসপাতালে আবারও আগের মতো চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাবে। অনেকেই জানান, স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দখলমুক্ত হওয়ায় এক যুগ পর প্রাণ ফিরে পেলো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে অভিযান চালিয়ে গত বুধবার স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দখলমুক্ত করা হয়েছে। কিছু অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। অবশিষ্ট স্থাপনাগুলো যারা নির্মাণ করেছেন, তারা নিজেরাই ভেঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন। এজন্য তাদেরকে ৩ দিনের সময় দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, যারা অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছেন, তারাই ভেঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সাবেক এমপি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ওয়াহেদুজ্জামান সরকার বাদশা বেলকা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের জমি দাতা হলেও তিনিই অবৈধভাবে দখলে রেখেছেন। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জায়গা দখল করে তার ছ-মিলের গাছের গোলাই রেখে দেন এবং পশ্চিম অংশের জায়গা দখল করে কয়েকটি দোকান ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছিলেন। এছাড়া বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক আশরাফুল আলম সরকার লেবু স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দোতলার কয়েকটি কক্ষ দখল করে অস্থায়ী অফিস ঘর হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। তার ভাই আনিছুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাঠে কাকড়া গাড়ি রেখে গ্যারেজে পরিণত করেন। এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও ছিলেন নির্বিকার। তারাও প্রায় এক যুগ থেকে অবৈধ দখলে থাকা স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দখলমুক্ত করতে কোথাও কোন অভিযোগ পর্যন্ত করেননি। এছাড়া সরকার নির্ধারিত একজন মেডিকেল অফিসার, নার্স এবং ফার্মাসিস্ট সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত থাকার কথা থাকলেও এখানে সে নিয়মের কোন বালাই নেই। এতে বেলকা, শান্তিরাম ও হরিপুর ইউনিয়নের প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। স্থানীয় দুই প্রভাবশালীর অবৈধ দখলে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি থাকলেও কেউ মুখ খোলার সাহস পায়নি প্রতিবাদ করার। অবশেষে বেলকা স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি অবৈধ দখলে থাকার খবরটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে পড়ে। এরপর জেলা প্রশাসকের নির্দেশ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দখলমুক্ত করেন।

এব্যাপারে সাবেক এমপি ওয়াহেদুজ্জামান সরকার বাদশার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির জায়গা আমি দান করেছি। জায়গা পড়ে থাকায় দোকান ঘর নির্মাণ করেছিলাম। নির্মিত স্থাপনা নিজেই ভেঙ্গে নিয়ে যাচ্ছি।’উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবুল ফাত্তাহ বলেন, ‘এখন থেকে বেলকা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়মিত চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম সরকার লেবুর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ