Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রামগতিতে চলাচলে চরম দুর্ভোগ

সাড়ে ১৪ কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দ

আমানত উল্যাহ, রামগতি (লক্ষীপুর) থেকে | প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০২২, ১২:০৩ এএম

ল²ীপুরের রামগতি উপজেলার ১৪ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। খানাখন্দে একাকার হয়ে জনদুর্ভোগ এখন চরমে। বর্ষায় কাদাপানি আর শুকনো মৌসুমে ধুলোবালি এবং খানাখন্দে ভরপুর ল²ীপুরের রামগতি উপজেলার দু’টি ব্যস্ত সড়কের সাড়ে ১৪ কিলোমিটার রাস্তা। উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের সৈয়দ মৌলভীবাজার-চৌধুরীবাজার ও রামগতি বাজার-ছেউয়াখালী সড়ক।
সড়ক দু’টির এমন দুরাবস্থায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ঐ সড়কে চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষ। সাড়ে ১৪ কিলোমিটার সড়কের পুরোটাই কার্পেটিং ওঠে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। ভারি যানবাহনতো দূরের কথা, হালকা দু’চাকার যান ও পথচারী চলাচল করাটাই এখন বড় দায় হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আলী হোসেন, সবুর মিয়া ও চা দোকানদার মিরাজ হোসেন জানান, সৈয়দ মৌলভীবাজার থেকে চৌধুরীবাজার পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা কয়েক বছর ধরে জরাজীর্ণ। এই সড়কের পাশেই কয়েকটি ইটভাটা রয়েছে। ভাটার ইট ও মাটি আনা নেয়ার জন্য ব্যবহার করা হয় যন্ত্রদানব ট্রাক্টর। এই ট্রাক্টর টলির কারণেই নির্মাণের কিছু দিনের মাথায় দেড় কিলোমিটার সড়ক ভেঙে তছনছ হয়ে যায়। বর্তমানে সড়কটি বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি প্রসস্ত করে দ্রæত সংস্কারের দাবি এলাকাবাসীর।
অন্যদিকে ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে তৎকালীন এমপি মো. আবদুল্লাহ আল মামুন রামগতি বাজার থেকে ছেউয়াখালী সড়কটির উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করেন। সে সময় সড়কটির ছেউয়াখালী সেতু থেকে সৈয়দ মৌলভী বাজারের পোল পর্যন্ত সাড়ে ৭ কিলোমিটার কাজ করা হয়। সড়কটি আলাদা জোনের হওয়ায় অবশিষ্ট ৬ কিলোমিটার সড়কের কাজও করা হয়নি তখন। গত বছরের প্রথম দিকে পণ্যবাহী ট্রাক উল্টে রামগতি বাজারের ব্যবসায়ীদের প্রায় তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এরপর যাত্রীবাহী গাড়ি উল্টে হতাহতের একাধিক ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েকটি।
রাস্তাগুলোর এমন দুরাবস্থার কারণে অসুস্থ রোগী ও শিক্ষার্থীসহ বেকায়দায় রয়েছেন স্থানীয় বসবাসকারীরা। বর্তমানে এই দু’টি সড়ক এ অঞ্চলের মানুষের কাছে মূর্তিমান আতংক হিসেবে দেখা দিয়েছে।
আর এতে ঘটেছে ছোট-বড় নানা দুর্ঘটনা। রাস্তা খারাপ হওয়ায় এই দুইটি সড়কে চলাচলকারী সিএনজি ও অটোরিকশা যাতায়াতে যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। চালকদের অভিযোগ ভাঙা এ দুইটি সড়কে গাড়ি চালালে তাদের গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ক্ষতি পোষাতে অতিরিক্ত ভাড়া নিতে হয়।
এই দু’টি সড়ক দিয়ে রামগতি বাজার, উপজেলা সদর আলেকজান্ডার, উপজেলা পরিষদ, থানা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বয়ারচর, টাংকি বাজারসহ উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত করা হয়। এছাড়াও জেলা সদর ল²ীপুর এবং নোয়াখালী জেলার একাধিক উপজেলায় যাতায়াতের প্রধান সড়কও এ দু’টি। পাশে আছে গুচ্ছগ্রাম বাজার, বাঁধেরহাট, চৌমুহনী বাজার, রামগতি বাজারসহ বেশ কয়েকটি ছোট বড় হাট-বাজার। অপরদিকে চরপোড়াগাছা, বড়খেরী এবং চরগাজী ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ এ দুইটি সড়ক দিয়েই যাতায়াত করতে হয়।
জনবহুল এই ১৪ কিলোমিটার সড়কের দুরবস্থার চিত্র নিয়ে গত বছর বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকগুলোতে সংবাদ প্রকাশের পর সংশ্লিষ্টরা রাস্তাগুলো মেপে আসেন। কিন্তু এক বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত সংস্কার বা নির্মাণের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এতে এসব সড়কে চলাচলকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
চররমিজ ইউপি চেয়ারম্যান মুজাহিদুল ইসলাম দিদার ও চরগাজী ইউপি চেয়ারম্যান তাওহীদুল ইসলাম সুমন জানান, প্রতি সমন্বয় সভায় সড়ক দু’টির বেহাল পরিস্থিতি তুলে ধরে দ্রæত সড়কগুলো প্রসস্তকরণ ও সংষ্কারের উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। কিন্তু এলজিইডি অফিস কোন কথার মূল্যায়ন করেছে না।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুর রহিম জানান, চররমিজ ইউনিয়নের ঐ সড়কসহ অপর সড়কটি সংষ্কারের জন্য প্রকল্প পাশের অপেক্ষায় আছে। আশা করছি দ্রæত কাজ হবে।
এলজিইডি প্রকৌশলী মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম বলেন, রামগতির সাড়ে ১৪ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা হবে। রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম শান্তনু চৌধুরী বলেন, বিষয়টি দ্রæত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ