Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাড়ে ৮ মাসেও নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়নি

শাহপরীর দ্বীপ দিয়ে পশু আমদানি বন্ধ

কক্সবাজার জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০২২, ১২:০৭ এএম

কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ করিডর দিয়ে মিয়ানমার থেকে সাড়ে আট মাস ধরে গরু, মহিষ ও ছাগল আমদানি বন্ধ রয়েছে। সরকার বঞ্চিত হচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে। গত বছরের ৪ জুলাই জেলা টাস্কফোর্স কমিটির এ ভার্চুয়াল বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে করিডরটি দিয়ে মিয়ানমারের পশু আমদানি বন্ধ করেন জেলা প্রশাসক। দেশের বাইরে থেকে আমদানি করলে বাজারে দেশীয় পশুর (গরু, মহিষ, ছাগল) দাম কমে যাবে এই যুক্তি দেখিয়ে গত বছর ঈদুল আজহার আগে শাহপরীর দ্বীপের করিডর দিয়ে মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি বন্ধ করে দেয় সরকার। এতে সাড়ে আট মাস পেরিয়ে গেলেও নিষেধাজ্ঞা আর তুলে নেওয়া হয়নি। দক্ষিণ চট্টগ্রামে এটি ছাড়া পশু আমদানির দ্বিতীয় কোনো করিডর নেই। গতকাল বুধবার দুপুরে করিডরে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল মাঠটি খালি পড়ে আছে। করিডরে সামনে (নাফ নদীতে) লম্বা জেটিটিও ফাঁকা। আগে এই জেটি দিয়ে আমদানি হওয়া পশু খালাস হতো। মিয়ানমার থেকে পশুবোঝাই ট্রলারগুলো এই জেটিতে ভীড়ত। ব্যবসায়ীরা করিডর থেকে সস্তায় পশু কিনে টেকনাফ, উখিয়া, রামু, কক্সবাজার সদর, চকরিয়া, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করতেন। এখন সবই বন্ধ। ফলে বিপাকে পড়েছেন প্রায় অর্ধশত বাংলাদেশি ব্যবসায়ী। মিয়ানমারের আকিয়াবে প্রায় ৫০ হাজার পশু কিনে রাখলেও নিষেধাজ্ঞার কারণে সেগুলো বাংলাদেশে আনতে পারছেন না তারা। ব্যবসায়ীদের দাবি, বর্তমানে টেকনাফসহ কক্সবাজার অঞ্চলে মাংসের চাহিদা বেড়েছে। উখিয়া ও টেকনাফের স্থানীয় সাড়ে ৭ লাখ বাসিন্দার পাশাপাশি ৩৪টি আশ্রয় শিবিরে সাড়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মাংসের চাহিদা পূরণে হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। চাহিদার তুলনায় জোগান কম থাকায় মাংসের দামও বেড়ে গেছে। পশু আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম বলেন, আমদানি বন্ধ থাকায় সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। প্রভাব পড়েছে জেলার প্রতিটি হাটবাজারে। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে গরু ও মহিষের প্রতি কেজি মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকায়, যা সাড়ে ৮ মাস আগে ছিল ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা। সামনে পবিত্র রমজান মাস। এরপর কোরবানি। এ সময়ের মধ্যেও যদি মিয়ানমারে কিনে রাখা পশুগুলো আনা না যায়, তাহলে ব্যবসায়ীদের পথে বসতে হবে। বৈধপথে করিডর দিয়ে পশু আমদানি বন্ধ থাকায় অনেকে সীমান্ত দিয়ে চোরাইপথে পশু আসছে। এতে সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পশু ব্যবসায়ী আমদানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কাশেম বলেন, স্থানীয় অর্ধ শতাধিক ব্যবসায়ীর অগ্রিম কেনা ছোট-বড় প্রায় ৫০ হাজার পশু মিয়ানমারে আটকে আছে। পশুগুলো করিডরে আনা না গেলে বিনিয়োগের টাকা উশুল করা কঠিন হয়ে পড়বে। তার নিজেরও অন্তত সাত হাজার পশু মিয়ানমারে আটকা পড়েছে। একইভাবে করিডরের ৪২ ব্যবসায়ীর আরও ৪০ হাজারের বেশি পশু আটকা আছে মিয়ানমারে। টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা শাহীন আক্তার বলেন, চোরাইপথে পশু আনা নিরুৎসাহিত করতে ২০০৩ সালের ২৫মে থেকে শাহপরীর দ্বীপ করিডর চালু করে সরকার। প্রতিটি গরু ও মহিষের জন্য ৫০০ টাকা ও প্রতিটি ছাগলের জন্য ২০০ টাকা রাজস্ব আদায় হয়। করিডর বন্ধ থাকায় সরকার প্রতি মাসে কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী বলেন, সরকারের নির্দেশনায় করিডরে মিয়ানমারের পশু আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছে। চালুর ব্যাপারে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ