Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গণমাধ্যমে নিয়ন্ত্রণেই সরকার একের পর এক আইন করছে

জাতীয় প্রেসক্লাবে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০২২, ১২:০৬ এএম

গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার একের পর এক আইন করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সংবাদ মাধ্যমের জন্য যে সমস্ত আইন, মিডিয়া নীতিমালা করা হচ্ছে তার প্রত্যেকটিই করা হচ্ছে সংবাদ বা গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। আরেকটা সমস্যা হচ্ছে- দেশে মিডিয়া হাউজগুলোর মালিকরা হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা এবং সেই ব্যবসায়ীদের বেশিরভাগই হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের উচ্ছিষ্টভোগী পদলেহিগণ। এটা ছাড়া তারা টিকতে পারে না।

গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের বার্ষিক কাউন্সিলে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সমাজে একটা স্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। সেই ক্ষতটা হচ্ছে বিভাজন। সাংবাদিক ইউনিয়ন দুই ভাগ, সংবাদ কর্মীরা, চিকিৎসকরা দুই ভাগ। অর্থ্যাৎ একটা জায়গাও নেই যে ভাগ ছাড়া। এই প্রতিষ্ঠানগুলো আলাদা হয়ে গেছে।
বিভাজন ও বিভক্তির জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, যারা ফ্যাসিবাদী, কর্তৃত্ববাদী তারা সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সবসময় বিভাজন সৃষ্টি করেছে। অর্থ্যাৎ ক্ষমতায় থাকতে হলে ভাগ করে ফেলো।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গ্রামের সাধারণ মানুষেররা চায়ের খুপরি ঘরের সামনে বেঞ্চে বসে কাপ চাপ খেয়ে রাজনীতির কথা বলেন, সেখানে তারা বিভিন্ন ভালো-মন্দের কথা বলেন। এখন সেখানেও দুইটা বেঞ্চে থাকবে- একটা আওয়ামী লীগের আরেকটা বিএনপির। এটাই বাস্তবতা। এরকম অবস্থায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করার কাজ অত্যন্ত কষ্টসাধ্য।

মির্জা ফখরুল বলেন, এদেরকে (আওয়ামী লীগ) সরাতে হবে। এদেরকে না সরিয়ে এখানে কোনো কিছু করা যাবে না। এজন্য আমাদের মধ্যে ঐক্য তৈরি করতে হবে। আমরা জাতীয়ভাবে চেষ্টা করছি, জনগণের মধ্যে ঐক্য তৈরি করতে, সমস্ত রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ন্যূনতম কর্মসূচির ভিত্তিতে একটা ঐক্য তৈরি করতে। আমি একথা বলি না যে, ইউনাইটেড জোট হবে, ইউনাইটেড প্ল্যাটফর্ম। কিন্তু আমরা যেন একই সাথে এই সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারি এবং তাদেরকে যেন পরাজিত করতে পারি সেটার জন্য কাজ করছি। আসুন আমরা একজোট হয়ে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ভয়াবহ দানবীয় সরকার, কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার কাজ করি।

বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, আজকে এমন কোনো জেলা নেই যেখানে সরকারের মন্ত্রীরা, প্রভাবশালীরা, আওয়ামী লীগের নেতারা তারা সংবাদ কর্মীদের নির্যাতন করে না, দুর্নীতির খবর যাতে না ছাপে সেজন্য হুমকি দেয়। এমন এক অবস্থা তৈরি হয়েছে। যে আওয়ামী লীগ নেতা স্যান্ডেল পরতে পারতো না তার পাঁচটা বাড়ি, নতুন গাড়ি। আসলে আওয়ামী লীগ এই দেশে আর কোনো কিছু বাকী রাখেনি। তারা এদেশটা, রাষ্ট্রকে ধবংস করে ফেলেছে। তাদের রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগে বিচার হবে। এই দেশের মানুষের সাথে তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, আজকে নয় ১৯৭১ সালের পর থেকে তারা বিশ্বাসঘাতকতা করে আসছে। সেকারণে তাদের একদিন বিচার হবে।

বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে এবং রাশিদুল ইসলাম ও শফিউল আলম দোলনের সঞ্চালনায় বার্ষিক সম্মেলনে বিএনপির আবদুস সালাম, ইঞ্জিনিায়ার্স অ্যাসোসিয়েশসের রিয়াজুল ইসলাম রিজু, সিনিয়র সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, এমএ আজিজ, কামাল উদ্দিন সবুজ, বাকের হোসাইন, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ইলিয়াস হোসেন ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কাদের গনি চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম, রাজশাহীর সরদার আবদুর রহমান, খুলনার আনিসুজ্জামান, যশোরের এম আইয়ুব, ময়মনসিংহের এম আইয়ুব আলী, গাজীপুরের এইচএম দেলোয়ার হোসেন, বগুড়ার মির্জা সেলিম রেজা, কুমিল্লার রমিজ খান, দিনাজপুরের মাহফিজুল ইসলাম রিপন, কুষ্টিয়ার আবদুর রাজ্জাক বাচচু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ