বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলে চাঞ্চল্যকর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামীলীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার চার্জ গঠনের দিন একই কারণে আবারও পিছিয়ে গেল।
অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এমপি রানাসহ দুইজনের অনুপস্থিতির কারণে গতকাল বুধবার চার্জ গঠন করা হয়নি। একই সাথে আসামী পক্ষের আইনজীবীর করা মামলা পুনঃতদন্তের আবেদনের শুনানিও হয়নি। আগামী ১০ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া। এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর মামলার প্রথম চার্জ গঠনের দিন ধার্য করেছিলেন আদালত।
আদালত সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি আমানুর রহমান খান ওরফে রানা অসুস্থতার কারণে চিকিৎসাধীন থাকায় বুধবার তাকে কাশিমপুর কারাগার থেকে টাঙ্গাইল আদালতে আনা হয়নি। অপরদিকে আটক অপর অভিযুক্ত আসামী সমির মিয়া টাঙ্গাইল কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকেও আদালতে উপস্থিত করা হয়নি। জামিনে থাকা ফরিদ হোসেন আদালতে উপস্থিত হয়ে হাজিরা প্রদান করেন। আটক অপর চার অভিযুক্ত আসামী নাসির উদ্দিন নুরু, মাসুদুর রহমান, আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলীকে আদালতে উপস্থিত করা হলেও আদালত শুনানির জন্য মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।
চার্জশীটভুক্ত পলাতক আসামীরা হলো, এমপি রানার অপর তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পাসহ সাংসদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কবির হোসেন ওরফে ড্যান্ডিং মিস্ত্রী কবির, দারোয়ান বাবু ওরফে দাঁত ভাঙ্গা বাবু, যুবলীগের তৎকালীন নেতা আলমগীর হোসেন চাঁনে, ছানোয়ার হোসেন।
টাঙ্গাইল কোর্ট ইন্সপেক্টর মো. আনোয়ার হোসেন জানান, অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এমপি রানাসহ দুইজন আসামী আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় টাঙ্গাইল অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করেন আগামী ১০ জানুয়ারি ২০১৭।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল শহরের কলেজ পাড়া এলাকায় নিজ বাসার সামনে থেকে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধে পঙ্গুত্ব বরণ করা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার তিনদিন পর নিহত ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি প্রথমে পুলিশ তদন্ত করলেও পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপর তদন্তভার ন্যস্ত করা হয়। তদন্তকালে আনিছুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী, সমীর মিয়া ও ফরিদ আহমেদকে আটক করা হয়। তারা প্রত্যেকেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় এবং হত্যায় এমপি রানা ও তার তিন ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে।
এরপর প্রায় দুই বছর পলাতক থেকে গত ১৮ সেপ্টেম্বর এমপি রানা ও ২৪ সেপ্টেম্বর নাসির উদ্দিন নুরু ও মাসুদুর রহমান মাসুদ আদালতে আত্মসমর্পণ করে। তদন্ত শেষে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৩০২/৩৪/১২০ বি ধারায় হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। পরে গত ৬ এপ্রিল আদালত পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেন। এর পরেও তারা আদালতে হাজির না হওয়ায় সর্বশেষ গত ১৬ মে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক গোলাম কিবরিয়া পলাতক ১০ আসামীদের অস্থাবর সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ দিলে তাদের অস্থায়ী সম্পত্তি ক্রোক করে পুলিশ। পরে তাদের বিরুদ্ধে সংবাদপত্রেও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।