Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

কটিয়াদীতে দাফনের দুই মাস পর কবর থেকে মাদ্রাসা ছাত্রের লাশ উত্তোলন, মৃত্যু নিয়ে রহস্য!

কটিয়াদি (কিশোরগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০২২, ৮:৪৫ পিএম

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে দাফনের দুই মাস পর আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে মাদ্রাসা ছাত্রের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। বুধবার (১৬ মার্চ) দুপুরে মুমুরদিয়া ইউনিয়নের কুড়িখাই নগরপাড়া গ্রাম থেকে শিশু মাহিদ (৮) এর লাশ তোলা হয়েছে। এসময় কটিয়াদী থানা পুলিশের সাথে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইব্রাহিম, ওসি তদন্ত মো. মাহফুজুর রহমান।

মৃতের পরিবার ও মামলার এজাহারে জানা যায়, মৃত মাহিদের বাবা থাকেন বিদেশে। তাদের এক ছেলে এক মেয়ে। মাহিদ সবার বড়। গত ২ জানুয়ারি ২২ ইং রোববার বিকালে শিশু মাহিদ’কে স্থানীয় শাহ সামছ উদ্দিন সাফিয়া খাতুন মাদ্রাসায় পাঠান তারা। বাড়ি থেকে মাদ্রাসার দূরত্ব আনুমানিক ৩ কিমি. হবে। মাহিদ ওই মাদ্রাসার আবাসিক ছাত্র। পরদিন সোমবার ছেলের জন্য মাদ্রাসায় খাবার পাঠালে মাদ্রাসা থেকে বলা হয় মাহিদ মাদ্রাসায় আসেনি। এরপর শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে প্রতিবেশী রোশনা খাতুন বাড়িতে এসে জানান, শিশু মাহিদ ফাঁস লাগানো অবস্থায় আত্মহত্যা করে তার রান্নাঘরে ঝুলে আছে। খবর শুনে ছোটে যায় মাহিদের মা ও দাদি। শিশু মাহিদের ও রোশনা খাতুনের ঘর পাশাপাশি। মাহিদের মা ইয়াসমিন ও দাদি কল্পনা আক্তার গিয়ে দেখেন, শিশু মাহিদের ঝুলন্ত লাশ। গলায় মাথার পাগড়ি ছিল। পা ছিল মাটিতে লাগানো। এমন অবস্থা দেখে চিৎকার দিয়ে বেহুশ হয়ে পড়েন শিশুর মা ও দাদি । পরে স্থানীয়রা ওইদিনই ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করেন। পরে শিশুর পরিবার বেহুশ অবস্থা থেকে কিছুটা স্বাভাবিক হলে জানতে পারেন, লাশের শরীরে ফাঁসির কোন চিহ্ন ছিলনা। ঘার ছিল ভাঙ্গা । এতে তাদের পরিবারের সন্দেহ হয়। মাহিদকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

এ ঘটনায় শিশু মাহিদের দাদি কল্পনা আক্তার বাদি হয়ে ১৭/২/২২ ইং তারিখে কিশোরগঞ্জ ৫ নং আদালতে প্রতিবেশী রোশনা খাতুনসহ মোট ৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। অন্য আসামিরা হলেন, মো. জয় (১৯), মলি­ক মিয়া (৪০), কালাম (৫৮) নজরুল শাহ (৪৫)।

পরে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে শিশুর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত ও প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৫ জানুয়ারী ২২ ইং তারিখে কটিয়াদী মডেল থানার ওসিকে নিদেশ দেন।

মামলার বাদি ও শিশু মাহিদের দাদি কল্পনা আক্তার বলেন, ‘আমার সাথে দীর্ঘ দিন ধরে জমিজমা নিয়ে প্রতিবেশী রোশনা খাতুনের পরিবারের সাথে বিরোধ চলছিল। কয়েকবার সালিশ দরবার হলেও মীমাংসা হয়নি। এই বিরোধের জের ধরেই আমার নাতিকে তারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে থাকতে পারে বলে ধারণা করছি। এর আগেও এই মহিলা দেবরের সন্তানকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় জেল খেটেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমরা প্রতিনিয়ত হুমকি ধামকির মধ্যে আছি। পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছি। আমরা নিরাপত্তা চাই এবং ঘটনার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এর বিচার চাই।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ