Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পে দুর্নীতি: ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেন প্রতিমন্ত্রী

তদন্ত কমিটি গঠন

গাজীপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০২২, ৬:৩৯ পিএম

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের জন্য তৈরী করা ঘর নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে তৈরী হওয়ায় তা ভেঙ্গে ফেলার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মোঃ এনামুর রহমান। বুধবার দুপুরে তিনি গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালীতে ভেঙ্গে ফেলা ঘর পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তার সঙ্গে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) অঞ্জন কুমার সরকার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম সাদিক তানভীর, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নাজনীন শামীমা ও সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহরিয়ার মাহমুদ রনজু উপস্থিত ছিলেন।


এদিকে প্রধানমন্ত্রীর ঘর নির্মাণে অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গাজীপুরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান কে এ কমিটির প্রদান করা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মামুন সরদার ও গাজীপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ বারেক মিয়া। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর শুরু হয় গৃহহীন ও ভ‚মিহীন মানুষের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প। দ্রুততার সঙ্গে শেষ করার জন্য এ ঘরগুলো তৈরিতে কোন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এ কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। দেখভালে থাকবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। খাসজমিতে তৈরি করা ঘরগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে। ‘ক’ শ্রেণীভূক্ত এ বাড়ি গুলো দৃষ্টিনন্দন রঙিন টিনের দুই কামরার সেমিপাকা বাড়ি হবে। ঘরের আয়তন হবে দৈর্ঘ্যে ১৯ ফুট ৬ ইঞ্চি আর প্রস্থে ২২ ফুট ৬ ইঞ্চি। রান্নাঘর ও শৌচাগার থাকবে। প্রতি ১০ ঘরের জন্য একটি নলকূপ। সব মিলিয়ে বাড়িপ্রতি খরচ ২ লাখ ৬৪ হাজার ৫০০ টাকা। ইটের সংখ্যা, সিমেন্ট ও বালুর পরিমাণও বলে দেওয়া হয় নকশা মোতাবেক। নির্দেশিকা অনুসারে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি অনুসরণ করার কথা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এর সঙ্গে কোন মিল দেখা যাচ্ছে না। প্রকল্পের জন্য একটি কমিটি থাকলে কমিটির সদস্যদের সাথে এ নিয়ে কোন সমন্বয় করা হয় না বলেও অভিযোগ রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম সাদিক তানভীর জানান, গাজীপুর সদর উপজেলায় ১৬০টি ঘর নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। নতুন আরো ৩০০ ঘর নির্মাণের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে। শিগগিরই এসব ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।

নতুন নির্মিত ঘরগুলো নিম্নমানের উপকরণ ও সঠিক মালামাল দিয়ে তৈরী না হওয়ায় সম্প্রতি শতাধিক ঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছেন।

একজন ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, তার ইউনিয়নে গৃহহীনদের জন্য ঘর তৈরী করা হলেও এ ব্যাপারে তার সঙ্গে কেউ কোন যোগাযোগ করেনি। নির্মাণ কাজ শুরু হলেও তাকে কিছু জানানো হয়নি। ইউএনও এককভাবে তার নিজস্ব লোকজন দিয়ে কাজ করাচ্ছেন।

নিম্নমানের উপকরণ ও নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে গাজীপুর সদর উপজেলার তিন ইউনিয়ন এবং সিটি কর্পোরেশনের একটি ওয়ার্ডে সম্প্রতি শতাধিক ঘর ভেঙ্গে ফেলা হয়। ভেঙ্গে ফেলা ঘরগুলো নতুন করে মানসম্মত উপকরণ দিয়ে তৈরী না করার কারণে এ ঘরগুলো ভেঙ্গে দেওয়া হয়।

সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহরিয়ার মাহমুদ রনজু জানান, তিনি অফিসিয়াল কাজে ব্যস্ত থাকায় সব গুলো সাইট ভিজিট করতে পারেন নি। তার অফিসে জনবল সংকটের কারণে সব সময় নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ