Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ফুলপুরে প্রধান শিক্ষক লাঞ্ছিত, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

তদন্তে মাঠে নেমেছে ৩ সদস্যের কমিটি

ফুলপুর (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০২২, ১০:২৭ পিএম

ময়মনসিংহের ফুলপুরে সুতারকান্দি শহিদ স্মৃতি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষককে সহকারী শিক্ষিকার জুতাপেটার ঘটনা নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। এঘটনাকে কেন্দ্র করে একে অপরকে দায়ী করে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করেছেন দু শিক্ষক। পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পেয়ে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) থেকে তদন্ত শুরু করেছে গঠিত তদন্ত কমিটি।

শনিবার (১২ মার্চ) উপজেলার ভাইটকান্দি ইউনিয়নের সুতারকান্দি শহিদ স্মৃতি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান রুবেলকে জুতাপেটা করেন একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মুর্শিদা আক্তার বিউটি। এ ঘটনায় রবিবার (১৩ মার্চ) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনৈতিক প্রস্তাব দেয়ার লিখিত অভিযোগ করেন সহকারী শিক্ষিকা মুর্শিদা আক্তার বিউটি। অপরদিকে সহকারী শিক্ষিকার বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান রুবেল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শিক্ষা কর্মকর্তা ও ফুলপুর থানায় তাকে অপমান অপদস্ত ও জুতাপেটা করার অভিযোগ করেন।

দুই শিক্ষকের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের পর ঘটনাতদন্তে সোমবার (১৪ মার্চ) তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীতেষ চন্দ্র সরকার এবং তিনদিনের মাঝে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন। তদন্ত কমিটি মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) ঘটনাস্থল সুতারকান্দি শহিদ স্মৃতি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছেন। প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষিকাসহ সকল শিক্ষক, কমিটির সদস্য ও ঘটনা সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেন।

এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী সুতারকান্দি হাবিবুর রহমান বলেন, স্যার এবং ম্যাডাম অফিসে বসে থাকা অবস্থায় আমি বাইরে পানি আনতে যাই। পানি নিয়ে ফিরে এসে দেখি দু'জনই তর্কাতর্কি করছেন। এ সময় ম্যাডাম স্যারের কাছে শিক্ষকদের হাজিরা খাতা চান। পরে স্যার অন্যান্য শিক্ষক আসলে খাতা দিবেন বলেন। এরই মাঝে ম্যাডাম পায়ের জুতা খুলে স্যারকে পেটাতে শুরু করেন।

এ বিষয়ে মুর্শিদা আক্তার বিউটি বলেন, গত দুই তিন মাস আগে থেকেই প্রধান শিক্ষক আমার সাথে আপত্তিকর কথা ও অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছেন। মাঝে একবার সবাইকে বিষয়টি জানিয়ে দেব বললে তিনি আর এমন প্রস্তাব দেননি। ঘটনার দিন আমরা স্কুলে ৫ জন শিক্ষক শিক্ষিকা ছিলাম। সবাইকে ক্লাস নেওয়ার জন্য শ্রেণীকক্ষে পাঠিয়ে দেয় এবং আমাকে অফিসরুমে বসতে বলেন।কিছুক্ষণ পর অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে শরীরে হাত দিতে চাইলে আমি তাকে অপমান অপদস্ত করি।

অনৈতিক প্রস্তাব দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান রুবেল বলেন, গত ৮ ও ৯ মার্চ দুইদিন তিনি কোন প্রকার ছুটি না নিয়ে স্কুলে আসেনি এবং কেন স্কুলে আসেননি বিষয়টি আমাকে জানাননি৷ পরে শনিবার (১২ মার্চ) স্কুলে এসে অন্যান্য শিক্ষকরা ক্লাসে চলে গেলে তিনি আমার কাছে হাজিরা খাতা চান এবং হাজিরা খাতায় অনুপস্থিতির জায়গায় স্বাক্ষর করার কথা বলেন। আমি হাজিরা খাতা দিকে অস্বীকৃতি জানাই এবং অন্যান্য শিক্ষক অফিসরুমে আসলে হাজিরা খাতা দিব বলি। এসব নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তিনি অপমান অপদস্ত করেন। এছাড়াও স্কুলের কমিটি নিয়ে পুর্ব থেকেই ওই শিক্ষিকার সাথে বিরোধ চলে আসছে। এসব কারণেই তিনি আমাকে অপমান অপদস্ত করে আমার বিরুদ্ধে অনৈতিক প্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ করেছেন।

ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন, দু'জনই অভিযোগ দেয়ার পর তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনদিনের মাঝে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ