Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

গৌরীপুরে লাইনে দাঁড়িয়ে চাল নিয়েছে মৃতরা! মো. হুমায়ুন কবির,গৌরীপুর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০২২, ৩:৩৭ পিএম

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সহনাটী ইউনিয়ন পরিষদে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১০ টাকা কেজি মূল্যের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার এ ইউনিয়নের চারজন ডিলার চাল বিতরণ করেন।
চাল নিতে আসা মানুষের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে চাল নেন মৃতরাও! এছাড়াও একই ব্যক্তির একাধিক ক্রমিকে নাম, তালিকায় থাকা নামের সঙ্গে কার্ডের নাম মিল খোঁজে পাওয়া যায়নি। তালিকায় নাম থাকার পরেও চাল পাননি অনেক সুবিধাভোগী।
এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন সহনাটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন কাদের রুবেল। তিনি জানান, ২-৩ বছর আগে মারা গেছেন। সেই মৃতদের তালিকা পরিবর্তন না করে তাদের নামেই চাল বিতরণ করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা খাদ্য অফিসার বিপ্লব কুমার সরকার জানান, সহনাটী ইউনিয়নে ২ হাজার ৯৬ জন প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাচ্ছেন। কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ মারা গেলে এ বিষয়টি অবহিতকরণ এবং অন্য নামে হস্তান্তরের বিষয়টিও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান করে থাকেন। তালিকা পেলেই দ্রুত পরিবর্তনের উদ্যোগে নেওয়া হবে।
এসব বিষয়ে তদারকি কর্মকর্তা উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. শরিফুল ইসলাম জানান, আমরা তালিকা অনুযায়ী দিচ্ছি। কে মারা গেছেন, এগুলো আমার জানা নেই। কার্ড ছাড়া কাউকে চাল দেওয়া হয় না।
ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড নং ২৫৫। তিনি বহেড়াতলা গ্রামের মৃত কিতাব আলীর পুত্র মিসির উদ্দিন, ৮৬১নং কার্ডধারী পেচাঙ্গিয়া গ্রামের আব্দুল মিয়ার পুত্র হারুন অর রশিদ, ৭৭৬নং কার্ডধারী পল্টিপাড়া গ্রামের জয়দুল ইসলাম স্ত্রী মোছা. রত্না আক্তার তারা সবাই মারা গেছেন। তারপরও তাদের নামে লাইনে দাঁড়িয়ে কে বা কারা চাল নিয়ে যাচ্ছে!
এছাড়াও নিজের নামে কার্ড হয়েছে তাও জানেন না সাইদুর রহমান। তিনি সহনাটী ইউনিয়নের পল্টিপাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের পুত্র। তিনি জানান, আমার নামে চাল তুলে নিচ্ছে অন্যরা।
একই ব্যক্তি টেংগাপাড়া গ্রামের মতিউর রহমানের পুত্র লুট মিয়া। তিনি ৫৪০নং ও ৫৫৮নং দুটি কার্ড করে চাল উত্তোলন করছেন।
পাছার বাজারে ডিলার মিলন মিয়া শিপন। তার সোমবার চাল বিতরণের সময়ে দেখা যায় সিংহভাগ কার্ডে ছবি নেই। একজনের চাল অন্যরা নিয়ে যাচ্ছেন। অধিকাংশ কার্ডে নাম ও ক্রমিক কাটা-ছেঁড়া।
এ প্রসঙ্গে নিয়োজিত তদারকি উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিদর্শক কামরুল ইসলাম জানান, আমরা শুধু নাম দেখছি। কার্ডে ছবি নেই, কার কার্ড কে নিয়ে আসতেছে, তাও শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।
সহনাটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন কাদের রুবেল আরও জানান, ২ হাজার ৯৬ জনের মধ্যে প্রায় ৫০০ কার্ডে গরমিল-অনিয়ম রয়েছে। এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সবাইকে নিয়ে আলোচনা করেছি, সঠিক তালিকা প্রণয়নে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ