Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চৌগাছায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের গাছ বিক্রির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

যশোর ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৪ মার্চ, ২০২২, ৭:৪১ পিএম

যশোরের চৌগাছার নারায়ণপুর বাহারাম উদ্দিন মাদ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রির পাঁচ লাখের বেশি টাকা আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি এএফ এম কাশেম।

১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি ব্যাংকের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা ফি দিয়ে যশোর শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তদন্ত কার্যক্রমে এরইমধ্যে এএফএম কাশেম নিজের লিখিত জবানবন্দী প্রদান করেছেন। লিখিত জবানবন্দীতে তিনি বলেন বিদ্যালয়ের বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এনামুল হক মিঠু কোটচাঁদপুর পৌরসভার সচিব পদে চাকরিরত থাকাকালীন বিষয়টি গোপন করে বিদ্যালয়ের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছেন। যা তিনি করতে পারেন না। ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনের দিন অভিভাবক সদস্য তুহিনসহ অন্যদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বিদ্যালয় চত্বর থেকে বিতাড়িত করে প্রধান শিক্ষক এবং বর্তমান সভাপতি নিজেদের মত করে অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছেন।
অভিযোগে তিনি বলেছেন, আমি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি থাকাকালে ২০২০ সালে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন গাছ-গাছালী বিক্রয়ের পাঁচ লাখ ১৫ হাজার টাকার হিসাব চাইলে প্রধান শিক্ষক হিসাব না দিয়ে বিভিন্নভাবে টালবাহানা করেন। ২০২০ সালে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ থেকে চারটি সিলিং ফ্যান চুরি হয়ে যায়। বিষয়টি বারবার বলা সত্বেও তিনি প্রশাসনকে জানাননি। একই বছর বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ফান্ড হতে উত্তোলনকৃত টাকার মধ্যে ৩০ হাজার টাকা টাইলস না কিনে প্রধান শিক্ষক আত্মসাৎ করেন। এবিষয়েও আমি হিসাব চাইলে তিনি টালবাহানা করে হিসাব দেননি। একই বছর ইউনিয়ন পরিষদ হইতে প্রাপ্ত ৪২ হাজার ৫০০ টাকার হিসাব চাইলে তিনি দেননি।

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, শিক্ষকের বলা মতে বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান জাল সার্টিফিকেটে কর্মরত। বিষয়টি যাচাই বাছাইয়ের জন্য প্রধান শিক্ষকের নিকট ওই লাইব্রেরিয়ানের সাটিফিকেট দেখতে চাইলেও তিনি দেখাননি। ২০১৯ সালে বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক শফিকুর রহমান অবসরে গেলে বিদ্যালয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা চলমান রাখার স্বার্থে এনটিআরসিতে শিক্ষক চাহিদা দিয়ে তিনি কোনো আবেদন করেননি।
এ সকল অভিযোগের ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সভাপতি কোটচাঁদপুর পৌরসভার সচিব এটা সঠিক। তবে সেটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং তিনি সেখানে প্রথম শ্রেণির চাকরি করেন। অন্য সকল অভিযোগ অস্বীকার করে শহিদুল ইসলাম বলেন, এএফএম কাশেমকে সভাপতি করা হয়নি বলে তিনি এসব অভিযোগ করছেন। বিদ্যালয়ের সকল হিসাব তাকে দেখিয়ে তার স্বাক্ষর নেয়া আছে।
মোবাইল ফোনে এএফএম কাশেম বলেন, আমি দুইবার এডহক কমিটির সভাপতি থাকায় নিয়মানুযায়ী তৃতীয়বার সভাপতি হতে পারবোনা এটাতো পরিস্কার। তাহলে কেন সভাপতি হতে না পেরে এসব অভিযোগ করবো। তিনি বলেন ওই প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়মের অভিযোগ করার কারনে তিনি এই কথা বলছেন। তিনি বলেন পাঁচ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা খরচ করে বিদ্যালয়ের একটি গেইটের একাংশ নির্মাণ, এবং সামান্য একটি জানালার গ্রিল তৈরি করেছেন। যা করতে এক থেকে দেড় লাখ টাকাও খরচ হওয়ার কথা নয়। তদন্ত করলেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম রফিকুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, যশোর শিক্ষাবোর্ড থেকে এমন একটি অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব আমার উপর দিয়েছেন দতন্ত চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ