Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বৈধ অনুমতি না থাকায় বরিশাল মহানগরীর শতাধিক করাত কল বন্ধ, বেকার দেড় সহস্রাধিক শ্রমিক

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৪ মার্চ, ২০২২, ৮:১১ এএম

বন বিভাগের ছাড়পত্র সহ বিধি অনুযায়ী পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি না থাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় মাসাধিক কাল ধরে বরিশাল মহানগরীর ৫১টি করাত কল বন্ধ। ফলে সংশ্লিষ্ট প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ায় তাদের জীবনে চরম মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে । এসব করাতকল মালিকদের অভিযোগ, বন বিভাগের ছাড়পত্র না থাকায় আকষ্মিক নোটিশে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। তবে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের দাবী এটা আচমকা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে, ‘পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিছু থাকবে না’ ।

তবে খোজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর ৫১ টি করত কলের প্রায় সবগুলোরই কোন বৈধ লাইসেন্স না থাকায় বিদ্যুৎ সংয়যোগ বিচ্ছিন্ন করায় করাত কলগুলো বন্ধ রয়েছে । এতে অবকাঠামো নিমান কাজও ইতোমধ্যে ব্যাহত হতে শুরু করেছে।

তবে শুধু বরিশাল মহানগরীই নয় সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলেই বেশীরভাগ করাত কলের পরিবশ অধিদপ্তর ও বন অধিদপ্তরের কোন বৈধ অনুমোদন নেই।এমনকি এ অঞ্চলের সবগুলো জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়ক সহ জেলা সংযোগ সড়কগুলোর পাশেই ইতোমধ্যে বিপুল সংখ্যক অবৈধ করাত কল গড়ে উঠেছে। যা নিরাপদ সড়ক পরিবহনের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করলেও তা নিয়ে পরিবেশ, বন ও জেলা প্রশাসনেরও কোন ধরনের উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি অদ্যাবধি ।এমনকি উপকূলীয় সংরক্ষিত বন এলাকার সীমার মধ্যেও বিপুল সংখ্যক করাত কল গড়ে উঠেছে অবৈধভাবে।
তবে করাত কলগুলো বন্ধ থাকায় কয়েক হাজার শ্রমিকও বেকার হয়ে পড়েছে। বিকল্প কমসংস্থানেরও দাবী করেছে বেকার শ্রমিকরা। কাঠ চেরাই ও পরিবহন ছাড়াও ব্যবসায়ীদের পরিবার পরিজনও অনেকটাই অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। মহানগরীর চাঁদমারী এলাকার সাতটি স্ব-মিলই বন্ধ। প্রায় ৬০ বছরের কাঠের ব্যাবসার এ আড়তগুলোতে এখন নিরব কান্না চলছে।

এখানের করাত কল মালিক-শ্রমিকদের অভিযোগ, পরিবেশের ক্ষতির কথা বলে বন বিভাগের নোটিশে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে স্ব-মিল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অথচ নগরীর দপ্তরখানা সহ কয়েকটি এলাকার স্ব-মিলগুলো চলছে কিভাবে ? সে প্রশ্নও করেন তারা।
এমনকি লাইসেন্স করতে গেলে জেলা প্রশাসনের অনুমতিপত্রের কথা বলা হচ্ছে। আবার জেলা প্রশাসনের কাছে গেলে বলছে বন বিভাগের কাছে যান। এভাবে এক দপ্তর থেকে অন্য দপ্তরের কথা বলা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মিল মালিকরা। কাঠ ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সেক্রেটারি মো. দুলাল হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, মহানগরীর ৫১টি স্ব-মিল বন্ধ আছে। ফলে এর প্রভাব শুধু স্ব-মিল মালিকদের ওপরই নয়, কাঠের ফার্নিচার তৈরি সহ খুচরা কাঠ ব্যাবসায়ীদের ওপরও পড়েছে।

মানবিক কারণেই স্ব-মিল খুলে দিয়ে লাইসন্স করার জন্য সময় বেধে দেয়ারও দাবী জানান তারা। বন বিভাগের একাধীক কর্মকর্তা জানান, করাত কল পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। তবুও তাদের লাইসেন্স করতে বলা হয়েছে। এখন কারোই কোনো লাইসেন্স নেই। একটি করাত কলের লাইসেন্স করাতে দুই হাজার টাকা লাগে বলে জানিয়ে প্রতিবছর নবায়ন করাতে লাগে ৫০০ টাকা ও ভ্যাট বাবদ ৩০০ টাকা। কিন্তু কেউই এটা করছে না বলে জানিয়েছে বন বিভাগের দায়িত্বশীল মহল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ