পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পাঠক চাহিদা থাকলেও এবছর অমর একুশে বইমেলায় অপ্রতুল অনুবাদ গ্রন্থ। যেগুলো আছে সেগুলোর মান নিয়েও আছে নানা প্রশ্ন। মেলায় গল্প উপন্যাস ও কবিতার হাজারো মৌলিক বই থাকলেও খুব বেশি নেই অনুবাদ গ্রন্থ। বাংলা একাডেমির জনসংযোগ উপবিভাগ বলছে গত বৃহস্পতিবার মিলে এ পর্যন্ত মোট অনুবাদ গ্রন্থ এসেছে মাত্র ২১টি। তবে বইমেলায় গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন প্রকাশনীতে এককভাবেই অনুবাদ এসেছে ১০ এর অধিক।
প্রাচীন যুগের পর বাংলা সাহিত্যে মধ্যযুগে এসে সাহিত্যচর্চা শুরু হয় মূলত অনুবাদ সাহিত্যে। বাংলা ভূখন্ডে বিভিন্ন রাজসভার কবি-বণিকরা ব্যবসা বা ধর্মীয় কারণে অনুবাদের চর্চা শুরু করেন। অনুবাদ সাহিত্যে বাংলা ভাষা বিভিন্ন ভাষার শব্দে হয়েছে সমৃদ্ধ। মধ্যযুগের পর আধুনিক যুগের বাংলা সাহিত্যিকরাও অনুবাদ সাহিত্যে গুরুত্ব দিতেন। একবিংশ শতাব্দীর লেখক-সাহিত্যিকরাও বিশ্বসাহিত্যের বিভিন্ন গ্রন্থ, উপন্যাস, কবিতা, রাজনৈতিক প্রবন্ধ, ইতিহাস, বিজ্ঞান, চিকিৎসাশাস্ত্র অনুবাদ করেছেন। এসব অনুবাদ সাহিত্যের পাঠকও রয়েছে বেশ। তবে ধীরে ধীরে বাংলা সাহিত্যে কমছে অনুবাদগ্রন্থ। ফলে পাঠকরা তাদের পছন্দের বইগুলো নিজেদের ভাষায় পড়ার সুযোগ হারাচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার অমর একুশে বইমেলায় গিয়ে দেখা যায়, ৪টা নতুন অনুবাদ এসেছে মাওলা ব্রাদার্সে। এগুলোর মাঝে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মহানবি মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনের উপর লিখা ড. ইয়াসির কাদির লিখা বইয়ের অনুবাদ মহানবি মুহাম্মদ (সা.) জীবন ও সময়। বইটি অনুবাদ করেছেন মাহমুদ হোসেন।
ঐতিহ্য প্রকাশনী থেকে অনুবাদগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে ২৫টা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বই হচ্ছে মুস্তাফিজুর রহমান মানিক অন‚দিত রোহিঙ্গা সংকট তৃতীয় নয়ন, মাসুদ আলম অন‚দিত প্যানডেমিক ২ঃ ক্রনিকলস অব দ্যা টাইম লস্ট।
প্রথমা থেকে বিগত বছরগুলোতে অনেকগুলো বই থাকলেও এ বছরে এসেছে কেবল ৪টা অনুবাদ গ্রন্থ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে জাভেদ হোসেন অন‚দিত বাহাদুর শাহ জাফরের গজল ও মাওলানা রুমির কবিতা। গতবছর তিনটা থাকলেও এ বছর অনুবাদের বই একটাও নেই অন্বেষা প্রকাশনে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিক্রয় প্রতিনিধি আশিক আহমেদ। শোভা প্রকাশেও নেই অনুবাদ গ্রন্থ। নির্বাহী পরিচালক আশিকুর রহমান শুভ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বেহুলা বাংলায় গতবছর ৩টা থাকলেও এবছর এসেছে কেবল ১টা অনুবাদ গ্রন্থ। স্বপঞ্জয় চৌধুরী অনূদিত ভন পাখিদের স্বর বইটি প্রকাশিত হয়েছে এ প্রকাশনী থেকে। নাগরী প্রকাশনী থেকে এসেছে ৮টা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে অনঙ্গভ‚ষণ দাস অন‚দিত মহাবিশ্বের চ‚ড়ান্ত পরিণতি ও লায়লা ফেরদৌস অনূদিত দ্য পলিটিক্যাল ইন্টারপ্রিটেশন অব ইসলাম। দিব্য প্রকাশ থেকে নতুন অনুবাদ এসেছে ১০টি অনুবাদ গ্রন্থ। এর কয়েকটি হলো মো.আদনান আরিফ সালিম অন‚দিত পিরামিড, সুরেশ রঞ্জন বসাক অন‚দিত দ্য প্রফেট কাহলিল জিব্রান ও ননী ভৌমিক অন‚দিত বাবা যখন ছোট। পাঞ্জেরী থেকে এসেছে ড. ইনামুল হক অন‚দিত একজন প্রতিবাদীর প্রয়ান, ফজল হাসানের আধুনিক ফিলিস্তিন এবং হায়াৎ মাহমুদ অনূদিত বাতিঘরের পাহারাদার। স্টুডেন্ট ওয়েজ থেকে গতবছর ৩ টা আসলেও এবছর এসেছে কেবল একটি।
তাম্রলিপি থেকে এসেছে ১০ থেকে ১২টা। এর মাঝে রয়েছে আব্দুল লতিফ অন‚দিত দ্য ৮০/২০ প্রিন্সিপাল ও হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, বিপ্লব রঞ্জন সাহা অন‚দিত ফরাসীর রূপকথা। অনিন্দ্য প্রকাশ থেকে এসেছে ৩টি বই। এগুলো হলো অসীমা দত্ত অন‚দিত ক্রাভেন ম্যানর, ভয়েসেস ইন দ্যা স্নো ও দ্যা হান্টিং অব বøাকউড হাউজ। অন্য প্রকাশের মতো বৃহৎ প্রতিষ্ঠান থেকে নতুন অনুবাদ এসেছে মাত্র ৪ থেকে ৫টা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে আনিসুজ জামান অন‚দিত কলোম্বিয়ার সেরা দশ গল্প ও মোজাফফর হোসেন অন‚দিত আর্নেস্ট হেমিংওয়ে সেরা দশ গল্প। এছাড়া পার্ল পাবলিকেশন্স, আহমদ পাবলিশিং হাউজ, জিনিয়াস পাবলিকেশন্স, সুবর্ণ, গতিধারা, গ্রন্থকুটির, আদিগন্ত প্রকাশন ও সংহতির মতো পরিচিত প্রকাশনীগুলোতে নেই কোনো অনুবাদের বই।
বাংলা একাডেমি ও সরেজমিনে প্রাপ্ত অনুবাদগ্রন্থের সংখ্যাগত পার্থক্যের বিষয়ে একাডেমির জনসংযোগ উপবিভাগ জানান, প্রতিদিন যে অনুবাদের বইগুলো বের হয় তা লেখকরা তালিকায় লিপিবদ্ধ করে থাকেন। এক্ষেত্রে কেউ যদি নিজের অনুবাদ গ্রন্থের বিষয়ে তথ্য না দেয় সেটা তো আমাদের কিছুই করার নেই। আমাদেরকে যতগুলোর তথ্য দেওয়া হয়েছে ততোগুলোই আমরা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছি। একাডেমির তথ্যমতে গতকাল শুক্রবার মেলায় সর্বাধিক নতুন বই আসে। এদিনের নতুন বইয়ের সংখ্যা ৩১২টা।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।