Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্রেতাদের বাড়ছে নাভিশ্বাস

ল²ীপুরে নিত্যপণ্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি

ল²ীপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০২২, ১২:০৩ এএম

ল²ীপুরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে মধ্যবিত্ত ও নি¤œআয়ের মানুষ চরম বিপাকে রয়েছে। জেলার সদর উপজেলা, রামগঞ্জ, রায়পুর, রামগতি, কমলনগর উপজেলাসহ সর্বত্র নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর উচ্চমূল্যে মধ্যবিত্ত ও নি¤œ আয়ের সাধার মানুষের মাঝে ছাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। সদর উপজেলার কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এই চিত্র পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে ল²ীপুর মাছ ও কাঁচা বাজারে দেখা যায়, করলা কেজি প্রতি ১২০, কুমড়া ৩৫, কচুর চড়া ৪০, ধনেপাতা ১০০, টমেটো ৪০, মুলা ৩০, বেগুন ৬০, ফুলকপি ৫০, তরি ৬০, গাজর ৪০, শসা ৬০, পাতাকপি ৫০, শিমের বিচি ১২০, লালশাক ৫০, কাঁচা মরিচ ৮০, কলার হালি (ছোট) ৫০, লেবুর হালি (ছোট) ৬০ ও কচুর লতি ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া হাড় ছাড়া গরুর গোশত ৭০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৫৫, কক মুরগি ২৭০ থেকে ২৯০ টাকা, ছোট রুই মাছ ২৭০ টাকা কেজি, পেঁয়াজের কেজি ৪৫, সয়াবিন তেলের লিটার ১৮০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কাঁচাবাজারে কিছু ক্রেতার সঙ্গে কথা হয়। এ সময় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, ‘আমরা মাসে কত টাকা বেতন পাই? পরিবারের সাত সদস্যের তিন বেলার খাবার কিনতে প্রতিদিন ৭শ’ থেকে হাজার টাকার অধিক খরচ হয়। ওষুধ ব্যবসায়ী মো. আবদুল কাদের সাগর বলেন, ‘মানুষের ভেতরে হাহাকার চলছে। খেতে পারে না, ছেলেদের পড়া ওেষুার খরচ চালাতে পারছি না। দিনের পর দিন দোকানে বিক্রি কমছে, বাড়ছে খরচ। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই কীভাবে চলছি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেশি। সে তুলনায় মানুষের রোজগার তো বাড়েনি। গরীব-অসহায়রা তাও হাত পাততে পারে, আমাদের পক্ষে তো তা সম্ভব না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার রামগঞ্জ বাজারের এক রড-সিমেন্টের ব্যবসায়ী ও আ.লীগ নেতা বলেন, ‘আপনারা বাজারে গেলে বিক্রেতা বা সরকারকে কিছু বলতে পারেন, আমরা তাও পারি না। মুখ বুঝে সহ্য করি। বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষ সরকারকে ইঙ্গিত করে ব্যঙ্গ-বিদ্রæপ করে। আমরা কাকে বলব! ওপরে থুতু ফেললে নিজের গায়েই পড়ে।’

এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষ সরকারকে অনেক কিছুই বলতে পারে। কিন্তু আমরা তা পারি না। আ.লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় আমরা সাধারণ মানুষের কাছে সরকারি লোক। কিন্তু রড-সিমেন্টের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বেচাবিক্রিও নাই। করোনার দু’বছরে পথের ফকির হয়ে গেছি। এখন এক কেজি করলা কিনতে গিয়ে বেহুঁশ হই।’

রামগঞ্জ বাজারের তরকারি বিক্রেতা আরিফ হোসেন জানান, মহাজনের গদিতে বাজারের প্রতিটি দোকানদার লাখ লাখ টাকা দেনা। ১৫টি আড়তদার প্রতিনিয়ত চাপ দিচ্ছে টাকার জন্য। এক আড়ত মালিক পাবেন ৯৪ হাজার টাকা। তাঁকে দিয়েছেন ১ হাজার টাকা। প্রতিদিনই দেনার বোঝা বাড়ছে।

রামগঞ্জ কাঁচা বাজারের পাইকারি বিক্রেতা সুমা ভাÐারের পরিচালক রাশেদ কাজী বলেন, ‘আমাদের এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কুমিল্লার নিমসার। সেখানে বাজারদরের ওঠানামা আমাদের এলাকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করে।’ তিনি আরও বলেন, গত তিন মাসে বেশ কয়েকবার টানা বৃষ্টি হয়েছে। এ বৃষ্টির কারণে তরি-তরকারি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নতুন রোপণ করা গাছে এখনো ফসল আসেনি। যে কারণে বাজার এখন থমকে আছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ