Inqilab Logo

রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আড়িয়াল খাঁ নদে সর্বশেষ নির্মিত বাঁধ অপসারণের নির্দেশ জেলা প্রশাসকের

কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০২২, ২:৪৪ পিএম

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার ভরাদিয়া ও ফেকামারা প্রান্তকে এক করতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুশতাকুর রহমান প্রায় দু’বছর আগে আড়িয়াল খাঁ নদে বাঁধ দেন। এতে করে দুই প্রান্তের কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত সহজ হলেও নদটি এখন বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসন বাঁধটি অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রশাসনিক এই সিদ্ধান্তের কথা উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানিয়ে দেওয়া হয়। উপজেলা চেয়ারম্যান নিজ দায়িত্বে বাঁধটি অপসারণ শুরু করেছেন। কটিয়াদী উপজেলা অংশে আড়িয়াল খাঁর উপর এটি ছিল সর্বশেষ নির্মিত বাঁধ।আশির দশকের গোড়ার দিকে উপজেলার জালালপুর , লোহাজুরী এ দুইটি ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগের জন্য তৎকালীন কটিয়াদী ইউনিয়ন বর্তমান পৌরসভা এলাকার থানার সামনে থেকে জালালপুর ইউনিয়নের ঝাকালিয়া পর্যন্ত প্রবাহমান নদের উপর বাঁধ নির্মাণ করে আড়িয়াল খাঁকে দ্বিখন্ডিত করা হয়।
পরবর্তী সময়ে কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ইচ্ছামাফিক আরও বেশ কয়েকটি বাঁধ, কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে।
এর মধ্যে কটিয়াদী বীরনোয়াকান্দি হতে জালালপুর চরনোয়াকান্দিতে একটি বাঁধ, লোহাজুরী কুড়ের পাড় থেকে গজারিয়া এলাকায় একটি কালভার্ট, লোহাজুরী থেকে নাথের বাজারে একটি কালভার্টসহ বেশ কয়েটি স্থানে বাঁধ-কালভার্ট নির্মাণ করা হয়।ফলে মাত্র চার দশকের ব্যবধানে এই প্রবাহমান নদ এখন কয়েক খন্ডে অস্বাস্থ্যকর বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত হয়েছে।
বাঁধ দেয়ার আগে পারাপারে জন্য এই স্থানে ডিঙি নৌকা ছিল। এতে জনপ্রতি খরচ হতো পাঁচ টাকা।
মোহাম্মদ মুশতাকুর রহমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর নিজ গ্রামের লোকজনের প্রধান দাবি হয়ে উঠে নদের ওপর সেতু নির্মাণের। সেতু নির্মাণ ব্যয়বহুল হওয়ায় কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি (কাবিখা) ও কাজের বিনিময়ে টাকা কর্মসূচি (কাবিটা) প্রকল্পের টাকা দিয়ে বাঁধ দেওয়া হয়। ব্যয় হয় চার লাখ টাকা।
একের পর এক বাঁধ-কালভার্ট নির্মাণের ফলে নদের প্রাকৃতিক মাছ কমে গেছে। বন্ধ হয়ে পড়েছে নৌ পথ। সেই সাথে অচল হয়ে পড়েছে নদীর পাড় ঘেঁষা বাজারগুলো।এখন পণ্য পরিবহন সহ সকল প্রকার যাতায়াত করতে হয় সড়ক পথে। এতে খরচ যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হারও বেড়ে গেছে।
উপজেলা পরিষেদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুশতাকুর রহমান বলেন, সড়ক করেছি জনগণের ভালোর জন্য। এখন ওই সড়ক যদি দেশের ক্ষতি হয়, তাহলে রাখব না। ইতিমধ্যে অপসারণের কাজ শুরু করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতিশ্বর পাল বলেন, বাঁধটি দেড়-দুবছর পূর্বে নির্মাণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক অপসারণ করা হচ্ছে।সম্পূর্ণ বাঁধটি অপসারণ করা হবে কি না জানতে চাইল তিনি বলেন, ইচ্ছে আছে। তবে আপাতত পানি প্রবাহের জন্য আংশিক হতে পারে।দীর্ঘদিনের পুরোনো বাঁধগুলোর বিষয়ে বলেন, বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণ ছাড়া পুরোনো বাঁধগুলো অপসারণ সম্ভব নয়। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে। তবে বাঁধগুলো অপসারণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ