পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইউক্রেন-রাশিয়া সঙ্ঘাতকে একটি নতুন স্নায়ু যুদ্ধের সূচনা হিসাবে ব্যাপকভাবে বর্ণনা করা হচ্ছে। যদিও রাশিয়া এবং পশ্চিমারা নীতিগত অনেক বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে, কিন্তু এটি স্নায়ু যুদ্ধের পুনরাবৃত্তি নয়। এটি একটি অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একবিংশ শতাব্দীর একটি অতি-ভ‚রাজনৈতিক লড়াই। পরিস্থিতির তুলনা করলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরের অবস্থার তুলনায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে ইউরোপ যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল, তার সাথে এ পরিস্থিতিটি আরো বেশি সাদৃশ্যপূর্ণ।
বিদেশী ভ‚মি, বন্দর, শহর, খনি, রেলপথ, তেলক্ষেত্র, প্রাকৃতিক উপাদান ও সামরিক শক্তির অন্যান্য উৎসের ওপর নিয়ন্ত্রণের জন্য নিরলস লড়াই শতাব্দী ধরে ভ‚-রাজনীতিতে প্রধান শক্তিগুলোর আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। জিব্রাল্টার, পার্ল হারবার, আফ্রিকার হীরার খনি বা মধ্যপ্রাচ্যের তেলক্ষেত্র এর উদাহরণ। উচ্চাকাক্সক্ষী বিশ্বশক্তিগুলো রোমান সাম্রাজ্য থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত সর্বদা এ ধারণা পোষণ করে এগিয়েছে যে, প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে যথাসম্ভব এ জাতীয় স্থানগুলোর নিয়ন্ত্রণ অর্জনই মহিমান্বিত ও সমৃদ্ধ হওয়ার অবধারিত পন্থা।
স্নায়ু যুদ্ধের সময় শাসক বৃত্তে এ ধরনের নির্লজ্জ উপযোগবাদী উদ্দেশ্য প্রকাশ্যে প্রকাশ করাকে কুৎসিত বলে মনে করা হত। তাই এর পরিবর্তে, আধিপত্যবাদী শক্তিগুলো তাদের স্বার্থ সিদ্ধির তীব্র প্রতিদ্ব›িদ্বতায় জয় লাভের জন্য উচ্চ আদর্শ সম্বলিত ব্যাখ্যা তৈরি করেছে। উদাহরণস্বরূপ, ট্রুম্যান মতবাদ, স্নায়ু যুদ্ধের আদর্শিক হিংস্রতার সেই প্রাথমিক উদাহরণ, যা তখন ইউরোপে তেলের প্রধান উৎস (এবং মার্কিন তেল সংস্থাগুলোর জন্য রাজস্বের) মধ্যপ্রাচ্যে সোভিয়েত আধিপত্যকে প্রতিহত করার জন্য ওয়াশিংটনের প্রচেষ্টাকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছিল।
যেদিন রাশিয়ান ট্যাঙ্ক ইউক্রেনে প্রবেশ করে, সেদিন মার্কিন প্রসিডেন্ট বাইডেন জাতির উদ্দেশে একটি টেলিভিশন ভাষণে জোর দিয়ে বলেন, ‘গণতন্ত্র এবং স্বৈরাচারের প্রতিযোগিতার মধ্যে, সার্বভৌমত্ব এবং পরাধীনতার মধ্যে নিশ্চিত থাকুন স্বাধীনতা বিজয়ী হবে।’ বর্তমানে, মতাদর্শগত আবেদনগুলো এখনও শীর্ষ কর্মকর্তাদের শিকারী সামরিক পদক্ষেপকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে ইদানিং অত্যধিক ভ‚-রাজনৈতিক অভিপ্রায় সম্বলিত আন্তর্জাতিক আচরণকে মতাদর্শ দিয়ে গোপন করা আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
এ মুহূর্তে ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানই একমাত্র ঘটনা নয়। কয়েক বছর ধরে ওয়াশিংটন পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন সামরিক শক্তি বৃদ্ধির মাধ্যমে চীনের উত্থানকে মোকাবেলা করতে চেয়েছে এবং বেইজিংকে বিভিন্ন ধরনের পাল্টা পদক্ষেপ নিতে প্ররোচিত করেছে। ভারত এবং তুরস্কসহ অন্যান্য বড় শক্তিগুলোও তাদের ভ‚-রাজনৈতিক আধিপত্য প্রসারিত করার চেষ্টা করছে। আশ্চর্যের বিষয় নয় যে, এসব কার্যকলাপ বিশ্বব্যাপী যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ইউক্রেনকে রাশিয়া থেকে অন্যায়ভাবে বিচ্ছিন্ন একটি কৃত্রিম রাষ্ট্র বলে দাবি করে আদর্শগত দিক দিয়ে তার আক্রমণকে ন্যায্যতা দিয়েছেন। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয়কে নস্যাৎ করে পূর্বাবস্থায় ফেরাতে চাওয়া নব্য-নাজিদের ইউক্রেনে অনুপ্রবেশকারী হিসাবে অভিহিত করে দেশটির সরকারের নিন্দাও করেছেন। তবে, এটিকে একটি অত্যন্ত কঠিন ভ‚-রাজনৈতিক হিসাবে নিমগ্ন ক্ষোভ হিসাবে দেখা উচিত।
পুতিনের দৃষ্টিকোণ থেকে ইউক্রেনীয় সঙ্ঘাতের উৎসটি স্নায়ুযুদ্ধ-পরবর্তী বছরগুলোতে নিমজ্জিত, যখন ন্যাটো রাশিয়ার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে নিরলসভাবে পূর্বদিকে সম্প্রসারিত হয়েছিল। ১৯৯৯ সালে ওর্য়াশ চুক্তির (ন্যাটোর মস্কো সংস্করণ) সদস্য তিনটি প্রাক্তন সোভিয়েত-মিত্র রাষ্ট্র হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড এবং চেক রিপাবলিক ন্যাটো জোটে ঢুকে যায়। ২০০৪ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের তিনটি প্রাক্তন প্রকৃত প্রজাতন্ত্র এস্তোনিয়া, লাতভিয়া এবং লিথুয়ানিয়ার সাথে বুলগেরিয়া, রোমানিয়া এবং সেøাভাকিয়াও ন্যাটোতে যোগ দেয়। সূত্র : ট্রুথ আউট। (চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।