Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে স্বেচ্ছাসেবক দলের সমাবেশ : মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০২২, ১১:৫৯ পিএম

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে সরকারের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমেই ক্ষমতাসীন সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে।

এদিকে সমাবেশের কারণে জাতীয় প্রেসক্লাবের (হাইকোর্টের কদম ফোয়ারা থেকে পল্টন মোড়) সামনের একপাশ রাস্তা ও গাড়ি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর ১টা থেকে ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা খÐ খÐ মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে থাকে। মিছিল ও সমাবেশ থেকে নেতা কর্মীরা খালেদা-জিয়া- জিয়া- খালেদা, খালেদা জিয়ার ভয় নাই- রাজপথ ছাড়ি নাইসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিভিন্ন ¯েøাগানে প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ মুখরিত করেন। এ সময় পুলিশ সদস্যরা সমাবেশস্থলের আশপাশে অবস্থান নেয়। পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলার বাহিনীসহ অতিরিক্তি পুলিশ সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়।

সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ‘বাজার সিন্ডিকেট’ করে জনগণের টাকা লুটে ‘পকেট’ ভারী করছে। তারা (সরকার) জিনিসপত্রের দাম কমাতে পারবে না। কারণ ওইখান থেকে তারা ভাত খায়, তাদের নেতারা সিন্ডিকেট করে সেখান থেকে তারা ভাত খায়, পকেট ভারী করে, করছে। দুর্নীতি করে সমস্ত দেশকে তারা ভরে দিয়েছে। এই যে মেগা প্রজেক্ট দেখছেন..। গত ১০ বছর ধরে ঢাকা শহরের মানুষদের কী কষ্ট যাচ্ছে। ১০ টাকার জিনিস ২০ টাকা, পদ্মাসেতুর প্রজেক্ট ১০ হাজার কোটি টাকা বেড়ে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। এভাবে ওরা নিজেদের পকেটে টাকা ভরছে।

তিনি বলেন, আমাদেরকে জনগণের এই কষ্ট দূর করতে হবে, আমাদের মা-বোনদের ওই টিসিবির ট্রাকের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করতে হবে, আমাদের যেসব ভাইরা গুম হয়ে গেছে তাদের পরিবারের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে হবে।
সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার গোটা দেশটাকে এরা নির্যাতনের কারখানা বানিয়ে ফেলেছে। আপনারা কী সত্যজিত রায়ের সেই হীরক রাজার দেশ ছবিটি দেখেছেন? একটু দেখবেন। হীরক রাজার দেশে এসব ঘটনাগুলোই ঘটিয়েছিলো হীরক রাজা। তারপর একদিন সমস্ত মানুষ যখন ক্ষেপে উঠলো, হীরক রাজা একটা বড় মূর্তি বানিয়েছিলো। এটা যেদিন উদ্বোধন করবে সেইদিন সব মানুষ ওই মূর্র্তিতে দড়ি লাগিয়ে বললো, দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান। আমাদেরকেও দড়ি ধরে টান মারতে হবে, ওদের গদি খান খান করতে হবে, তাদের তথতে তাউস ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেজন্য আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আসুন সেই লক্ষ্যে আমরা রাজপথে নেমে সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগে বাধ্য করতে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নেই।

মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু চাল, ডাল ও তেলের দাম কমালেই চলবে না। আমাদের জীবনকে জীবনের মতো করে চলতে দিতে হবে। আমাদের কথা বলতে দিতে হবে, আমাদের লেখার স্বাধীনতা দিতে হবে, বিচার ব্যবস্থাকে ন্যায় বিচার করার ব্যবস্থা করতে হবে এবং পুলিশ ও প্রশাসনকে জনগণের সেবক হতে হবে। আসুন সেই লক্ষ্যে এই সরকারকে বাধ্য করি, অবিলম্বে ব্যর্থতার দায় নিয়ে তাদেরকে পদত্যাগ করতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় একটা নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার ও সংসদ প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এই হোক আজকের দিনে আমাদের শপথ, প্রতিজ্ঞা ও প্রত্যয়। আসুন, রাজপথে নেমে সেটাকে আমরা আদায় করি।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই সরকারকে হটাতে হলে সকলকে অলি-গলি, পাড়া-মহল্লায় ছড়িয়ে পড়তে হবে, যার যার পাড়া-মহল্লায় একত্রিত হয়ে নামতে হবে। বেশিদিন শুধু প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করলে সরকার দীর্ঘস্থায়ী হবে, আন্দোলনও দীর্ঘায়ু হবে।আমরা বক্তৃতাও সংক্ষেপ করতে চাই, সরকারের মেয়াদও সংক্ষেপ করতে চাই। আর সেজন্য দরকার কঠোর আন্দোলন, রাজপথের আন্দোলন। সুতরাং নেতাকর্মীদের বলবো- সরকারকে সবদিকে কাবু করার জন্য যা করা দরকার মনে মনে হিসাব-নিকাশ করেন। আন্দোলনের জন্য আপনারা যেদিন পারবেন আমরা সেদিনই আপনাদের সাথে মাঠে নামবো।
স্বেচ্ছারেসবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহŸায়ক আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহŸায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারী হেলাল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, সহ-দপ্তর সম্পাদক নাজমুল হাসান, কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম সারোয়ার, আনু মোহাম্মদ শামীম, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সাদরাজ্জামান, ফখরুল ইসলাম রবিন, রফিক হাওলাদার, বিথিকা বিনতে হোসাইন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক দলের ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, রফিকুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো: হারুন-অর-রশিদ সহ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ