Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জয়পুরহাটে নবনির্মিত ভবন হস্তান্তরের আগেই ফাটল

আবু মুসা, জয়পুরহাট থেকে : | প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০২২, ১২:০৯ এএম

জয়পুরহাটে সাড়ে ১৪ কোটি টাক ব্যয়ে উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ আক্কেলপুর টেনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবনির্মিত ভবন হস্তান্তরের পূর্বেই ৪ তলা প্রশাসনিক ভবনের নিচতলা থেকে উপর তলার মধ্যে একাধিক স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফাটলটি নজরে আসার পর সেখানকার শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও কর্মচারীরা ভবিষ্যতে আকস্মিক ভ‚মিকম্প বা অন্য কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে বড় কোনো ধরনের ক্ষতি হয় কিনা তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাছাড়া এমন ফাটলের কারণে নবনির্মিত ওই ভবনটির স্থায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এদিকে বিল্ডিংটিতে প্রশাসনিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
জানা গেছে, গত ২০১৮ সালে শিক্ষা অধিদফতর আক্কেলপুর টেনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবন নির্মাণ কাজের দরপত্র আহ্বান করে। সেই দরপত্রে বরাদ্দকৃত ১৪ কোটি ৫১ লাখ ৭২ হাজার ৩৫৫ দশমিক ৯৮ টাকার নির্মাণ কাজটি পায় নওগাঁ জেলার মেসার্স মিলন ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির নামে গত ১০-০৭-২০১৮ ইং তারিখে ৩০ মাসের মধ্যে ওই টেনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করার সময় বেঁধে দিয়ে কার্যাদেশ ইস্যু করার হয়। ১৮/০৯/২০১৮ ইং তারিখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি যথারীতি নির্মাণ কাজ শুরু করে সম্প্রতি সমাপ্ত করলেও এখন পর্যন্ত এ ভবনটি আনুষ্ঠানিকভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর না করলেও চলতি শিক্ষাবর্ষে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হওয়ায় ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে উল্লেখিত নবনির্মিত ভবনটিতে ফাটল দেখা দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আক্কেলপুর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল গৌতম কুমার মন্ডল স্থানীয় বলেন, ভবনটির ফাটল আমি দেখেছি। ইতোমধ্যে বিষয়টি আমি ঠিাকাদারসহ সংশ্লিষ্ট দফতরকে অবহিত করেছি।
জয়পুরহাট জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাঈদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন তিনটি বিল্ডিংয়ের সংযোগস্থলে সামান্য ফাটল দেখা দিয়েছ আমরা বিল্ডিংটি এক্সটেনশন জয়েন্ট করে দিব। তাছাড়া ওই ফাটলে ভবনের বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হবে না। এক কথায় আমরা ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ওই ফাটল সারাতে লোহার প্লেট বসিয়ে ফাটল মেরামত করে দেয়ার জন্য বলছি। ওই বিল্ডিংটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখন পর্যন্ত ওই ভবনের নির্মাণ কাজটি হস্তান্তÍর করেনি। ওই ধরনের ফাটল বা অন্য আর কোনো সমস্যা থাকলে তা ওই ঠিকাদারের নিকট থেকে হস্তান্তররর আগে ঠিক করে নেয়া হবে। এতে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সত্ত¡াধিকারীর নাম-ঠিকানা না জানায় এবং তাদের কোনো লোককে নির্মাণ স্থলে না পাওয়ায় তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ফলে ভবনটির নির্মাণ কাজে (দায়িত্বে থাকা) ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো বক্তব্যও নেয়া সম্ভব হয়নি। উল্লেখ্য ওই টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজটি প্রথমে নওগাঁ জেলার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর থেকে দরপত্র আহŸান করা হয় পরে এটি বাস্থবায়ন করে জয়পুরহাট জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর।
নতুন ওই ভবনটি ব্যবহার কতটা নিরাপদ তা জানতে চেয়ে আক্কেলপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স এর ভারপ্রাপ্ত কর্তা হাবিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন কেউ ৫ তলার উপরে কোনো ইমারত তৈরি করতে চাইলে স্থানীয়তা ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের অনুমতি নিতে হয় কিন্তু আমাদেরকে কেউ অবহিত করে নাই। কলেজটির ফাটল বিষয়ে কোনো তথ্য আমরা পাইনি।
তবে জনস্বার্থে আমরা ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ওই ভবনের ফাটল দেখতে যাব। ভবনটি ব্যবহারে শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের জীবন ঝুঁকি থাকলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণে অবহিত করবো।
এ ব্যাপারে আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম হাবিবুল হাসান জানান, আক্কেলপুর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবর্নিমিত ভবনের ফাটলের বিষয়টি আমি জেনেছি এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত করেছি। আশা করছি বিষয়টির দ্রুত সমাধান হবে জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন বিষয়টি আমি জেনেছি এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এবং বিল্ডিং সংক্রান্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ