বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নারী দিবসের দাওয়াত দিতে দেরি হওয়ায় জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে থাপ্পড় দিয়ে পাবনাছাড়া করার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পাবনা-সিরাজগঞ্জ সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলির বিরুদ্ধে। আজ মঙ্গলবার (৮ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নারী দিবসের এক আলোচনা সভায় এমন অভিযোগ করেন জেলা মহিলাবিষয়ক অধিদফতরের কর্মকর্তা কানিজ আইরিন জাহান।
এ সময় ওই সংসদ সদস্যের সঙ্গে কথোপকথনের একটি ফোনকল রেকর্ড সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন তিনি। সভায় কানিজ আইরিন বলেন, ‘আমাদের জেলার সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি জনাব নাদিরা ইয়াসমিন জলি, যিনি আজকের গ্রোগ্রামে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। গতকাল (সোমবার) ১১টার দিকে ৭ মার্চের প্রোগ্রাম শেষ করে যখন আমি বাসায় যাই, তখন তিনি হঠাৎ করেই আমাকে ফোন করে বলেন যে, এই আপনি আমাকে দাওয়াত করেন নাই কেন? আপনি কি হইছেন, আপনি ফালতু মহিলা। এক থাপ্পড় দিয়ে আপনাকে আমি পাবনাছাড়া করব!’
নারী দিবসের প্রয়োজনীয়তার প্রশ্ন তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘তাহলে নারী দিবস কেন আমরা করব? কতটুকু সম্মান আমাদের আছে? যে উনি (এমপি) আমাকে থাপ্পড় দিয়ে পাবনাছাড়া করবেন! আমি এখানে বাড়ির কাজ করতে এসেছি? সরকারই আমাকে বসিয়েছে। সরকারেরই একটা পর্যায় একটা পদে আমি আছি। আমাকে যখন এভাবে বলা হয়, তারপর থেকেই আমার ওপর প্রেশার ভর করছে। আমি মানসিকভাবে অনেক...। আমার ৫৫ বছরের জীবনে মানুষের এভাবে কথা শুনিনি। একজন সরকারি নারী কর্মকর্তাকে একজন নারী এমপি যদি এমন ব্যবহার করেন, তাহলে এই নারী দিবস পালন করে কী হবে আমাদের?’
তিনি বলেন, ‘আমার কাছে রেকর্ডটা আছে, আমি সব জায়গায় পৌঁছে দিয়েছি, কারণ আমার মোবাইলে অটোরেকর্ড হয়। আমি আমাদের এমডি স্যারকেও বলেছি। আমাকে উনি (এমপি) কাজের জন্য একশবার বকতে পারেন, হাজারবার বকতে পারেন কিন্তু থাপ্পড় দেওয়ার কথা উনি বলতে পারেন না!’ এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত নারী সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলির সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অডিও রেকর্ডে যা শোনা যায়
নারী দিবসে দাওয়াত না দেওয়ার বিষয়ে জানতে জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে পাবনা সদর উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার রেখা তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বর থেকে কল করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় পাশে থাকা সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি ফোন টেনে নিয়ে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কানিজ আইরিন জাহানকে ধমকাতে থাকেন। নারী কর্মকর্তার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই আপনি কী হইছেন? আপনি নারী হয়ে নারীদের সম্মান করেন না! আপনাকে এক থাপ্পড় মেরে পাবনা ছাড়া করব কিন্তু। আপনার খুব বেশি আস্পর্ধা হয়ে গেছে। প্রত্যেকটা মেয়ের সঙ্গে আপনি খারাপ ব্যবহার করেন। এই লিজ দিসি আপনাকে না? লিজ দিসি নাহ? ফাউল মহিলা কোথাকার! সবকিছু নিয়ে দুর্নীতির মধ্যে আপনি নিজেকে জড়াচ্ছেন, আপনি একটা অফিসার হয়ে। ফাউল মহিলা কোথাকার! বেশি সাহস হয়ে গেছে আপনার নাহ? আমি পাবনায় প্রেজেন্ট রইছি, প্রোগ্রাম করবেন, কালকে নারী দিবস। আপনাকে বলে দিতে হবে?
তিনি আরও বলেন, আপনি (আমাকে) ইনভাইট করবেন কালকে নাহ? ফাউল মহিলা, ফাউল মহিলা। আপনি কর্মকর্তা, আপনাকে এমপির বাসায় আসতে হবে, এসে দাওয়াত করতে হবে। আর কালকে যদি আমি প্রোগ্রামে দাওয়া না পাই, তাহলে আপনাকে আমি কেমনে করে পাবনাছাড়া করি, তার ব্যবস্থা আমি করব, আপনাকে (পাবনা) ছাড়া করতে ১০ মিনিটের ব্যাপার। জানতে চাইলে পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমি লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। আর একজন সংসদ সদস্য যদি কোনো অন্যায় করেন, তাহলে বিষয়টি দেখে জাতীয় সংসদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।