Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিত্যপণ্যের মূল্যে লাগাতার উর্ধমুখি প্রবনতার মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে টিসিবি’র পণ্য বিক্রি বন্ধ ১২ দিন

সাধারন মানুষের আয় না বাড়লেও ব্যয় বেড়েছে ৩০-৪০ ভাগ

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৮ মার্চ, ২০২২, ৩:১০ পিএম

নিত্যপণ্যের মূল্যে লাগাতর উর্ধমুখি প্রবনার মধ্যে সরকারী নুন্যতম কোন নজরদারী না থাকলেও দক্ষিণাঞ্চলে রাষ্ট্রীয় বানিজ্য সংস্থাÑ টিসিবি’র পণ্য বিক্রী কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে গত ১২ দিন যাবত। অথচ রমজানকে সামনে রেখে এবার প্রায় দুমাস আগে থেকেই ছোলা সহ সব ধরনের ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, গুড়, পেয়াঁজ ছাড়াও রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে সাধারন মানুষের দূর্ভোগের কোন সীমা নেই। করোনা মহামারী সংকটে নি¤œ-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তের আয় না বাড়লেও সাম্প্রতিক কালের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফিতিতে নভিশ^াস উঠছে এসব পরিবারে। কবে নিত্যপণ্যের দাম আবার সাধারনের জন্য সহনশীল হবে তা বলতে পারছেন না কেউই।

নিত্যপণ্যের লাগাতর উর্ধমুখি প্রবনতায় নি¤œ-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর সংসারের চাকা ক্রমশ অচল হয়ে আসছে। সবাই এ থেকে পরিত্রান চাইলেও পরিস্থিতি উন্নতির কথা জানা নেই কারো। গত দু বছরে শুধুমাত্র বাড়ী ভাড়া ছাড়া সংসারের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যায় বেড়েছে ২০Ñ৪০ ভাগ পর্যন্ত। কিন্তু শুধুমাত্র সরকারী ও আধা সরকারী কর্মী ছাড়া নি¤œ-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর আয় বাড়েনি এক শতাংশও।
রান্নার গ্যাসের দাম গত সপ্তাহে আরো ১১২ টাকা সহ গত এক বছরে ৫শ টাকারও বেশী বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১,৪৫০ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকায়ও বিক্রী হচ্ছে। রমজানকে সামনে রেখে প্রায় সব নিত্য পণ্যের বাজারই উর্ধমুখি। কিন্তু তা নিয়ন্ত্রনে কোন ধরনের নজরদারী লক্ষ্যনীয় নয়। পেয়াঁজের বাজারে যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি শুরু হয়েছিল মাস ছয়েক আগে, রোজাকে সামনে রেখে সে পালে এখন আরো হাওয়া লাগছে। দেশী পেঁয়াজ এখন আবার ৬০ টাকা কেজি। ভোজ্য তেলের বাজারও এখন যথেষ্ঠ অস্থির। গত ৩ মাসে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে লিটারে ৫০ টাকা। ৫ লিটারের একটি সয়াবিন ভর্তি কন্টেইনার বিক্রী হচ্ছে ৮২৫ টাকায়। মুশুর ডাল এখন ১শ থেকে ১২০ টাকা, খেশারী ডাল ৮৫ টাকা এবং মুগ ডাল বিক্রী হচ্ছে ১২০-১৩৫ টাকা কেজি। ৮৫ থেকে ৯০ টাকায় ১ কেজি চিনি বিক্রী হলেও আখের গুড়ের কেজী ১শ টাকার ওপরে। বাজারে এখনো ছোলাবুটের তেমন কোন সরবারহ শুরু না হলেও আগের মজুদের এ পণ্যটি বিক্রী হচ্ছে ৮৫ টাকা কেজি দরে।
চালের বাজারের অস্থিরতা ইতোমধ্যে স্থায়ী রূপ লাভ করেছে। গত বছরের বোরো, আউশ ও আমন একের পর এক বাজারে আসলেও চালের বাজারে তার তেমন কেন প্রভাব নেই। বর্তমানে বরিশালের পাইকারী বাজারে নি¤œ মানের মোটা বোরো চাল প্রতি কেজি ৪০ টাকার ওপরে বিক্রী হচ্ছে। ‘ব্রি-২৮ বা অঠাশ বালাম’ বিক্রী হচ্ছে প্রায় ৫০ টাকা কেজি দরে। মধ্যম মানের ‘মিনি কেট’ চালের কেজি এখন ৬০ টাকার ওপরে।
নিত্যপণ্যের লাগামহীন উর্ধগতির মধ্যেও টিসিবি’র পণ্য বিক্রী বন্ধ রয়েছে গত ২৭ ফেব্রুয়ারী থেকে। বন্ধের আগে সংস্থাটি বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড এবং দক্ষিনাঞ্চলের ৬টি জেলার ৪২টি উপজেলায় মাত্র ১৫টি পীকআপের মাধ্যমে অতি সিমিত আকারে পেয়াজ, চিনি, ভোজ্য তেল ও মুসুর ডাল বিক্রী করছিল। কিন্তু গত ১২ দিন তা বন্ধ থাকলেও কবে নাগাদ টিসিবি’র পণ্যবাহী পীকআপের পেছনে আবার নারী-পুরুষের লম্বা লাইন চোখে পড়বে, তা বলতে পারছেন না কৃতপক্ষও। ইতোপূর্বে টিসিবি’র গাড়ীর পেছনে সমাজের নি¤œ বিত্তের লাইন চোখে পড়লেও গত মাস দুয়েক যাবত সেখানে মধ্য বিত্তরাও ভীড় করছিলেন।
এসব ব্যাপারে বরিশালে টিসিবি’র দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পরিচালকের সাথে আলাপ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে অস্বিকৃতি জানালেও উর্ধতন কতৃপক্ষের নির্দেশ পেলে যেকোন সময়ই তারা পণ্য বিক্রীর জন্য প্রস্তুত আছেন বলে জানান। পাশাপাশি আসন্ন রমজানে জনগনের মাঝে চিনি, খেজুর, ছোলাবুট ও ভোজ্যতেল বিক্রীর লক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহনের কথাও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ