Inqilab Logo

সোমবার ১১ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ কার্তিক ১৪৩১, ০৯ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যশোর শিশু হাসপাতাল থেকে ৮ দিনের শিশু চুরি

যশোর ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০২২, ৭:৪৬ পিএম | আপডেট : ৭:৪৭ পিএম, ৬ মার্চ, ২০২২

যশোর শিশু হাসপাতালে দিনেদুপুরে শিশু চুরির ঘটনা ঘটেছে। শিশুটির স্বজন দায়িত্বরত নার্স, স্টাফ ও নিরাপত্তা প্রহরীর চোখে ধুলো দিয়ে এক নারী রবিবার (৬ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে এই ঘটনা ঘটায়। চুরি হওয়া শিশুটির বয়স ৮দিন। ওই শিশুটির মা আসমা খাতুন ও বাবা মেহেদী হাসান জনি ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ পৌর শহরের বাসিন্দা। এই দম্পতির সংসারে প্রথম সন্তান হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন শিশুটির মা, বাবাসহ স্বজনরা।


হাসপাতাল ও স্বজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এক বছর আগে কালিগঞ্জ পৌর শহরের একটি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের দপ্তরি মেহেদী হাসান জনির সাথে কোটচাঁদপুর এলাকার গাংনা এলাকার আসমা খাতুনের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে সিজারের মাধ্যমে প্রথম সন্তান প্রসব হয় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি কালিগঞ্জ কুইন্স হসপিটালে। জন্মের পর থেকে ছেলে নবজাতকটি গুরুত্ব অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে ঐ দিন রাতেই স্থানীয় ক্লিনিকের চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর শিশু হাসপাতালে রেফার্ড করে। শিশু হাসপাতালে ৭ দিন চিকিৎসা শেষে রবিবার চিকিৎসক নবজাতকটিকে সুস্থ ঘোষণা করে রিলিজ করে দেয়। এক পর্যায়ে শিশুটি বাবা তাদের সবাইকে বাড়িতে নেওয়ার জন্য গাড়ি আনতে হাসপাতালের বাইরে যান। এই সময়ে শিশুটির মা ও নানীর কাছে বোরকা পরহিত ৪০ বছর বয়সি একটি নারী গল্প করতে থাকে। এমন সময়ে তাদের মধ্যে ভাব জমে। একপর্যায়ে ওই নারী শিশুটির দেখাশোনা করবেন জানিয়ে শিশুটির মা ও নানীকে বাড়ি যাওয়ার জন্য গুছিয়ে নিতে ওয়াশরুমে যাওয়ার কথা বলেন। পরে শিশুটি মা ও নানী উভয়েই ফিরে এসে দেখেন, ওই নারী ও শিশুটি নেই। পরে তারা ওই নারীকে পুরো হাসপাতাল ও আশপাশের এলাকায় খোঁজাখুঁজি করেন। না পেয়ে পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানান।

সদ্য জন্মদেওয়া একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বারবার হাসপাতাল বেডে মূর্ছা যাচ্ছে মা আসমা খাতুন। হাসপাতালে চিৎকার করতে করতে কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, “সংসারে প্রথম সন্তান হয়েছে; তাও ছেলে সন্তান। আমার শুশুর বাড়ি ও স্বামীর বাড়িতে আনন্দের বন্যা বইছে। সন্তান হওয়ার পরে ছেলেটা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই দ্রুত যশোর শিশু হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখানে ৭ দিন চিকিৎসা শেষে রবিবার বাড়ি নেওয়া কথা ছিলো। তার আগেই আমার সোনার মানিকরে চুরি করে নিয়ে গেছে। আমি এখন কার নিয়ে বাঁচবো। আমার শুশুর বাড়িতে কি জবাব দিবো। আপনারা সবাই আমার বুকের ধনরে খোঁজে বের করে দেন।’ পাশে বসা ছিলেন বাবা মেহেদী হাসান জনি। তিনি বলেন, সকালে হাসপাতালের চিকিৎসক রাউন্ড শেষে আমার ছেলেরে রিলিজ দিয়ে দেয়। তার পর ছেলে ও তার মারে বাড়ি নেওয়ার জন্য একটা ইজিবাইক আনতে গেছিলাম। নিচে ইজিবাইক দাঁড় করে এসে শুনি আমার ছেলেরে কে যেন’ চুরি করে নিয়ে গেছে। অনেক খুঁজাখুজি করেও আমার ছেলেটা খোঁজ পায়নি।

শিশু হাসপাতলের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সৈয়দ নূর ই হা মিম বলেন, শিশুটি চুরি যাওয়ার ঘটনাটি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যান। তার পরেই আমরা পুলিশ প্রশাসনকে জানান। এখানে আমাদের কোন নিরাপত্তার ঘাটছি ছিলো না। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

যশোর ডিবির ওসি রুপন কুমার সরকার জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। তদন্তের জন্য পুলিশ হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহ করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ