Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে জমি-সংক্রান্ত বিরোধে হামলা, আহত কৃষকের হাসপাতালে মৃত্যু

কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রির্পোটার | প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০২২, ৭:৩৩ পিএম

জমি-সংক্রান্ত বিরোধে হামলা, আহত কৃষকের হাসপাতালে মৃত্যু

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে জমিজমা বিরোধের জেরে গ্রাম্য সালিস শেষে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে জাহাঙ্গীর আলম টুটুল (৪০) নামের এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। রোববার (৬ মার্চ) ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় লিপটন হোসেন তোতা নামের আরেক ব্যক্তিও (সাবেক ইউপি সদস্য) আহত হন।

এর আগে ২ মার্চ উপজেলার ১১ নম্বর আদাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে আনুমানিক বেলা ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জালাল নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত জাহাঙ্গীর আলম টুটুল প্রাগপুর রঘুনাথপুর এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে। গত বৃহস্পতিবার তার বাবা রুহুল আমিন বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি মামলা করেন।

নিহতের পরিবার জানায়, প্রায় ২০ একর জমি নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা হয় ৪৭ বছর আগে। বর্তমানে মামলাটি হাইকোর্টে চলমান। এরপরও পুনরায় কয়েক দিন আগে দৌলতপুর উপজেলার ১১ নম্বর আদাবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর অত্র ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত জফের শাহের ছেলে মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে আবেদন করেন মীমাংসা চেয়ে।

গত বুধবার দুপুরে মামলাটি হাইকোর্টে চলমান আছে জেনেও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল বাকি মীমাংসার জন্য উভয় পক্ষকে নিয়ে তার কার্যালয়ের এজলাসে বসেন।

একপর্যায়ে বাদী-বিবাদীর বাগবিতণ্ডায় সালিস বন্ধ করে দেন চেয়ারম্যান। উভয় পক্ষের লোকজন ইউপি কার্যালয় ত্যাগকালে বাদীপক্ষের লোকজন বিবাদীপক্ষের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এ সময় বাদীপক্ষ রুহুল আমিনের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম টুটুলকে পেটের ডান পাশে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। পরে জাহাঙ্গীরের চাচাতো ভাই লিপ্টন হোসেন তোতাকেও ছুরি দিয়ে আঘাত করে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।


পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে জাহাঙ্গীর আলমের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার ভোরে টুটুলের মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে নিহত টুটুলের বোন অ্যাডভোকেট নাজনীন আক্তার রুপা জানান, ১১ নং আদাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বাকি ওরফে বাকি কাজির ইন্ধনেই আমার ভাইকে খুন করা হয়েছে। জমিজমা নিয়ে প্রায় ৪০ বছর ধরে মামলা চলছে। প্রতিটি মামলায় তারা বাদী, আমরা বিবাদী। কোনো মামলায় আমাদের কোথাও হারাতে পারেনি। সব কাগজ আমাদের পক্ষে, সব জমি আমাদের দখলে। যে জমিটাকে কেন্দ্র করে ওরা চেয়ারম্যান বরাবর নালিশ করেছে, ওই জমির জন্য ওরাই একটা রিভিশন মামলা করেছে হাইকোর্টে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ১১ নং আদাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বাকির মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের বিট পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জিয়া জানান, জাহাঙ্গীর আলম টুটুল মারা গিয়েছেন শুনেছি। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবারে মামলা হয়েছে। জালাল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে চালান দিয়েছি।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান বলেন, দুপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছিল। এ ঘটনায় ১ নং আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এখন পর্যন্ত আমরা এমন কিছু আমরা তদন্তে পাইনি। মামলার তদন্ত চলছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ