Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চাকুরী দেয়ার নামে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

, সাভার থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০২২, ৬:৩৭ পিএম

তিনি নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তা, আবার কখনো সেনাবাহিনীর বড় কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হিসেবেও পরিচয় দিতেন। আর এসব উপাধির তকমা লাগিয়ে এরই মধ্যে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে চাকুরী দেয়ার নামে হাতিয়ে নিয়েছে ২০ লক্ষাধিক টাকা। এমন পরিচয়ে এলাকায় ছোট ছোট দোকান থেকে কয়েক হাজার টাকার পণ্য বাকীতেও নিয়েছেন। এরপর হঠাৎ কৌশলে এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় প্রতারক আশা উদ্দিনকে ধরে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসি।

শুক্রবার দুপুরে আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের উত্তর কলতাসূতি মরিচকাটা এলাকা থেকে তাকে আটক করে পুলিশে দেয় এলাকাবাসি।
আটক প্রতারক আশা উদ্দিন (৫০) নড়াইলের কালিয়া থানাধীন খররিয়া গ্রামের সাইফুদ্দিনের ছেলে। সে শিমুলিয়ার কলেজপাড় এলাকার ফিরোজের বাড়িতে স্ত্রী নার্গিস বেগমসহ ভাড়া থাকতেন। তিনি এরআগে রাজধানীর বারিধারার ডিপ্লোমেটিক জোনে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ করতো।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা জানান, আশা উদ্দিন বছর দুয়েক আগে আশুলিয়ার কলেজপাড় এলাকার ফিরোজের বাড়িতে ভাড়ায় উঠেন। এর আগে পাশবর্তী মরিচকাটা এলাকার খোকনের বাড়িতে ছিলেন। এলাকায় এসেই কৌশলে এলাকার প্রভাবশালীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেন এবং নিজেকে প্রশাসনের বড় কর্তা আবার কোন কোন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হিসেবেও দাবী করতেন। কিভাবে যুদ্ধ করেছেন সেই গল্পও শুনাতেন এলাকার চায়ের দোকানে। যাকে যেভাবে বুঝানো দরকার, সেভাবেই গল্প শুনাতেন। এলাকার কয়েকটি দোকান থেকে বাকীতে অনেক জিনিসপত্র নিতেন। সরকারি বড় অফিসার তাই বকী টাকা সহজেই চাইতেন না দোকানীরা।
ভুক্তভোগী দিলিপ কর্মকার বলেন, তিনি কলেজপাড় এলাকায় একটি জুয়েলারি দোকান দিয়ে ব্যবসা করেন। মাঝে মধ্যেই আশা উদ্দিন তার দোকানে আসতেন এবং গল্পগুজব করতেন। একপর্যায়ে নিজেকে পুলিশের বড় অফিসার পরিচয় দিতেন। তার নিজের বাড়ি এখানে আছে বলেও বলতেন। দোকানে মাঝে মধ্যে বসার সুবাদে ছেলেকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেয়া যাবে কিনা এমন প্রস্তাব দিলে ৭ লাখ টাকা লাগবে বলে জানান আশা উদ্দিন। পরে তার কথা মত তাকে সাড়ে ৬ লাখ টাকা দেই। কিন্তু দেড় বছর পার হলেও ছেলের চাকরির কোন খবর নেই। বার বার তাগাদা দিলেও সে নানা তালবাহানা শুরু করে। হঠাৎ খবর পাই, তিনি মালামাল নিয়ে ট্রাকে করে এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। তাকে দেখতে পেয়ে আটক করে পুলিশে খবর দেই।
অপর এক ভুক্তভোগী নূর মোহাম্মদ বলেন, আমার ছেলেকে সরকারি অফিসে পিয়নের চাকরি নিয়ে দিবেন বলে ১০ লাখ টাকা নেয়। এছাড়া আরো ৪ লাখ টাকা ধার হিসেবে নেন। কিন্তু বছর পাড় হয়ে গেলেও চাকুরি দিতে পারেনি আশা উদ্দিন। বৃহস্পতিবার রাতে লোকমূখে খবর পাই সে ঘরের সকল মালামাল নিয়ে গোপনে পালিয়ে যাচ্ছে। পরে তাকে ধরে তার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরে দুপুরে পুলিশে খবর দিলে তাকে আটক করে নিয়ে যান।
এছাড়া কলতাসূতি মরিচকাটা এলাকার এক নারীকে ধর্মের বোন বানিয়ে তার কাছ থেকেও ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নারী ভোক্তভোগী জানান।
প্রতারক আশা উদ্দিন চাকরি দেয়ার নামে টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, পুলিশ বা কোন কর্মকর্তা পরিচয় দিতেন না। দিলেও কেন তারা মেনেছেন?
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার এসআই মো. তানিম হোসেন বলেন, চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণা করে টাকা আতসাৎ করেছে এমন অভিযোগে তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা মামলা করতে চাইলে হবে। অথবা উভয়পক্ষ বসে কোন আপোস করলেও করতে পারে। এছাড়াও তদন্ত চলছে বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ