Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফুলবাড়ীতে মধ্যবিত্তের নীরব কান্না;নিম্ন মধ্যবিত্তের হাহাকার

নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন

ফুলবাড়ী(দিনাজপুর) থেকে স্টাফ রিপোটার | প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০২২, ৪:০৫ পিএম

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে গত দুই দিনের ব্যবধানে আরো এক দফা বেড়েছে এলপি গ্যাস ও ভোজ্য তেলের দাম। একই সাথে পাল্লাদিয়ে বাড়ছে চিনি আটা ময়দা ও মোটা চালসহ নিত্যপন্যের দামও।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রভাবে যখন মধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের পরিবারগুলো চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে. সেই আর্থিক সংকট কেটে উঠার পূর্বেই নিত্যপণ্যসহ বিভিন্ন জিনিসিপত্রের দাম আকাশচুম্বি হওয়ায় একেবারেই বেসামাল এই সাধারণ মানুষ। দিনদিন ব্যয় বাড়লেও, বাড়ছে না আয়। ফলে সংসার চলাতে হাঁসফাঁস উঠছে তাদের। এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কয়েক দফা ভোজ্য তেল, আটা ময়দা,ডিম,চিনি,চালসহ এলপি গ্যাসের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির পরেও চোখে পড়েনি বাজার মনিটরিং কার্য্যক্রম।
বাজার ঘুরে দেখা যায় শুক্রবার খোলা সয়াবিন তেল প্রতিকেজি ১৮০ টাকা, পামওয়েল খোলা ১৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, এছাড়া বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে ১২ কেজির এলপি গ্যাস বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকায়। অথচ গত দুই দিন পূর্বেও ১২কেজি এলপি গ্যাসের মূল্য ছিল ১২৫০ টাকা, খোলা সয়াবিন ১৭২ টাকা প্রতি কেজি পামওয়েল বিক্রি হয়েছে ১৫৫ টাকা। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন ডিলার পর্যায়ে দাম বেশী নেয়া এবং পরিবহন বেশী খরচ পড়ায় বেশী দামে তেলসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
এদিকে পাইকারী বাজারে কদিন আগেও নতুন দেশি পেঁয়াজ ২৮ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে ৪০ টাকায় উঠেছে,কয়েক দফা বেড়ে সরু মিনিকেট চাল ৬৩-৬৪ টাকায়, নাজিরশাইল ৬৪-৬৫ টাকায়,আটাশ চাল ৫৬-৫৭ টাকা,প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৮০ টাকা,ছাগলের (খাসি) মাংস ৭৫০, মুরগি ১৫০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মসলাসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামও আকাশ ছোঁয়া। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন পাইকারী বাজারে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদেরকে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রনে এখনই কার্যকরী পদক্ষেপ না নিতে পারলে সামনে রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করছেন ভোক্তাসহ সংশ্লিষ্ট খুচরা ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, এখন থেকে পাইকারি বাজারে মনিটরিং না বাড়ালে রমজানে বাজারের লাগাম ধরে রাখা কষ্টকর হবে।
কলেজ শিক্ষক মাহাবুর রহমান বলেন বাজার মূল্য যে ভাবে বাড়তে শুরু করেছে তাতে সংসার চালায় কঠিন। তিনি বলেন শুধু নিত্যপণ্য নয় বেড়েছে বিদ্যুৎ,গ্যাস যার প্রভাবে বেড়েছে বাসাভাড়া ও যাতায়াত খরচ। একই কথা বলেন, কলেজ শিক্ষক নুরল ইসলাম, তিনি বলেন যেভাবে ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে, সে তুলনায় আয় বাড়েনি তার। এতে করে পরিবারের চাহিদা পূরণে তার ঋণের বোঝা বাড়ছে ।
উপজেলার গ্রামের হাট-বাজারে দেখা গেছে খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক দামের চিত্র। এর প্রভাবে অস্থির হয়ে উঠেছে মধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো। পরিবারের চাহিদা মিটাতে গিয়ে দরিদ্র পরিবারের যুবকরা জড়িয়ে পড়ছে অপরাধ মুলক কর্মকান্ডে। সম্প্রতি উপজেলা শহরের ব্যস্ততম এলাকা থেকে দিনেদুপুরে টাকা ছিনতাইসহ বাসা-বাড়িতে চুরির ঘটনাও বেড়েছে। সেই সঙ্গে মানুষের এই অভাব অনটনকে পুঁজি করে সরব হয়ে উঠেছে স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ীরা। সংসারের ব্যয়ভার মোটাতে ওইসব দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে ধরনা দিতে হচ্ছে মধ্যবিত্তদের। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দাদন ব্যবসায়ীরা চড়া সুদ গ্রহণ করছে ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান,বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে সম্প্রতি চাতাল-মিল মালিকসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে। বাজার মনিটরিং কার্য্যক্রম শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ