রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
গোপালগঞ্জে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিজয়ী ও পরাজিত চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১১ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় ৬টি বাড়ি-ঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার শুকতাইল ইউনিয়নের পারচন্দ্রদিঘলীয়া গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ১৭ জনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজনকে আশংকাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে যাদের ভর্তি করা হয়েছে তারা হলেন, মিঠুন মোল্লা (২৫ ), সুজন মোল্লা (২৮), রবিউল মোল্লা (৩৫), নাসির মোল্লা ( ৪০) ) একরাম শেখ ( ৫০), জাবির শেখ (২৫), আরিফ শেখ (৩০), সিরাজ শেখ (৫০), হেমায়েত মোল্লা (৫০), বুলবুল মোল্লা (২৬), মাসুদ মোল্লা (৩৫), লিমন মোল্লা(২২), সাবের মোল্লা(২০),তুহিন মোল্লা(৩০), আকাশ (১৬) ও বদর মোল্লা (৪০) ও মাসুদ (৩০)। সংঘর্ষে আহত অন্যরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে।
সরেজমিনে এলাকাবাসির সাথে কথা বলে জানা যায়, শুকতাইল ইউনিয়নের বিজয়ী চেয়ারম্যান রানা মোল্লা ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ মো. আবেদ আলী সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ মো. আবেদ আলীর পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ওই গ্রামের সাবান মোল্লা ও অপর পক্ষের নেতৃত্ব দিয়েছেন রবিউল মোল্লা। নির্বাচনের পর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্ত বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব চলে আসছিলো। দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ থেকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বিজয়ী চেয়ারম্যান রানা মোল্লার সমর্থক আহত মুরাদ শেখ বলেন, গতকাল আমি বাড়ি থেকে সরিষা নিয়ে তেল ভাঙ্গাতে চন্দ্রদিঘলিয়া যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে আবেদ আলীর সমর্থক বিরামপাড়ার জাফর মোল্লার ছেলে রাজিবুল আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, যারা রানা মোল্লাকে চেয়ারম্যান ও ওহিদুল শেখকে মেম্বারের ভোট দিয়েছে তাদের একজন একজন করে দেখে নেব বলে হুমকি দেয়। এসময় আমার ছেলে রিয়াদ এসে তাকে চলে যেতে বললে সে আমার ছেলেকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। আমি ঠেকাতে গেলে আমাকে ও হাতুড়ি পেটা করে হাত ভেঙে দেয়। আমরা তখনই হাসপাতালে ভর্তি হই। ওই দিন দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে।
ওই ঘটনার জের ধর গতকাল মঙ্গলবার সকালে আবেদ আলীর সমর্থকেরা সংবদ্ধভাবে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রানা মোল্লার সমর্থদের উপর হামলা চালায়। এসময় মাসুদ মোল্লা, সাদিক মোল্লা, আলমামুন, মোহাম্মাদ মোল্লা, হেমায়েত মোল্লা ও বদিউজ্জামানের বাড়িসহ ছয়টি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে। সংঘর্ষ চলার সময় ১১ জন গুলিবিদ্ধ হয়।
এ বিষয়ে জানতে পরাজিত চেয়ারম্যান শেখ মো. আবেদ আলীর সমর্থক সাবান মোল্লা বলেন, এটা সামন্য একটা ঘটনা। নির্বাচনের পর থেকে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। রানা মোল্লা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তার হুকুমে এসব হচ্ছে। ঘটনার পর রানা চেয়ারম্যান তার গাড়ি দিয়ে তাদের লোকজন হাসপাতালে নিয়ে গেছে। দুই পক্ষের লোক জড়ো হয়ে সংঘর্ষ হয়। কে কাকে গুলি করছে তা আমি বুজতে পারিনি।
এ বষিয়ে জানতে চাইলে সুকতাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রানা মোল্লা বলেন, আমি এলাকাল ছিলাম না মঙ্গলবার সকালে বাড়িতে আসছি। যারা আহত হয়েছেন, আমি আগে তাগের দেখার পর এবিষয়ে কিছু বলতে পারবো।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে জরুরী বিভাগের চিকৎসক ড. বিচিত্র কুমার বিশ্বাস বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় ১৭ জন রোগী হাসপাতালে এসেছে। এদের মধ্যে ১১ জন রয়েছে শরীরে গুলিবিদ্ধ। তাদের শরীর থেকে গুলী বের করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা এখন ঝুঁকি মুক্ত।
এবিষয়ে জানতে চাইলে গোপালগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শীতল চন্দ্র পাল বলেন, সুকতাইল সংঘর্ষে ঘটনা জানার পর আমরা তাৎক্ষনিক ছুটে যাই। এছাড়া হাসপাতালে এসেছি রোগী দেখতে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রনে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।