Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গণটিকা আরো দু’দিন চলবে

প্রথম ডোজ বন্ধ হচ্ছে না সবাই পাবেন কেন্দ্রে প্রচন্ড ভিড়, রাজধানী ঢাকা থেকে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে একই চিত্র প্রথম ডোজসহ সারা দেশে টিকার সকল ডোজই চালু থাকবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

এক কোটি ডোজ কোভিড টিকা প্রয়োগ কার্যক্রমে গতকাল সারা দেশের টিকা কেন্দ্রগুলোতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। হাজার হাজার মানুষকে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা নিতে দেখা গেছে। তবে অনেকেই টিকা না পেয়ে ফিরে গেছেন। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সকলকে টিকার আওতায় আনতে ২৬ ফেব্রুয়ারির এক কোটি মানুষকে গণটিকাদান কার্যক্রম আরও দুদিন বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে টিকার কোনও কমতি নেই। সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, টিকার প্রথম দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ চলমান থাকবে। সব ধরনের টিকার কার্যক্রম বজায় থাকবে। স্বাস্থ্যসচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, টিকা নিতে মানুষের বাধভাঙা উল্লাস দেখা যাচ্ছে। আমাদের ক্যাম্পেইন সফল। হেলথের বিভিন্ন পর্যায়ের এক লাখ কর্মকর্তা আন্তরিকভাবে কাজ করেছে। শতভাগ মানুষকে টিকা দিতে গণটিকা কার্যক্রম আরও ২ দিন বাড়ানো হয়েছে।
গতকাল টিকা কেন্দ্রগুলোতে ছিল হাজার হাজার মানুষের ভিড়। লাখ লাখ মানুষ টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। কেউ কেউ টিকা না পেয়ে ফিরে গেছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, শনিবার দেশজুড়ে গণটিকাদানে এক কোটি ব্যক্তিকে প্রথম ডোজ দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল। একদিনের মধ্য দিয়ে প্রথম ডোজ দেওয়া শেষ হচ্ছে না।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এবং কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক ভিড়ের প্রেক্ষাপটে গণটিকাদান কর্মসূচির আওতায় প্রথম ডোজ দেওয়ার সময় আরও ২ দিন বাড়ানো হয়। এখনও প্রচুর ভিড় দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন কেন্দ্রে। মানুষকে দীর্ঘসময় ধরে কেন্দ্রে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। সে কারণে আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ানোর। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন স্বাস্থ্য অধিদফতরের টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে এক কোটি জনসংখ্যাকে প্রথম ডোজের টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ কর্মসূচিতে গ্রামাঞ্চলে ১৬ সহস্রাধিক ও শহরাঞ্চলে (সিটি করর্পোরেশন ও পৌরসভা) সাড়ে ৮ হাজারের বেশি অস্থায়ী টিকাকেন্দ্রে টিকা কার্যক্রম চলে। প্রায় ৭০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবে।
বিকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যেহেতু টিকা নিয়ে মানুষের অনেক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। অনেক লোক শনিবার টিকা নাÑ ও নিতে পারে, সেজন্য আমরা এই কার্যক্রম আরও দুদিন বৃদ্ধি করলাম, দেশের মানুষের সুবিধার্থে। যারা এতদিন টিকা নিতে পারেননি, এমন হাজার হাজার মানুষ সকাল থেকে ভিড় করছেন দেশের বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্রে। এরমধ্যে অনেকেই আছেন, যারা টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন কিন্তু এসএমএস আসেনি।
সবাইকে টিকা নিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, এখন পর্যন্ত যারা করোনাভাইরাসের টিকা জন্য নিবন্ধন করেছেন বা করেননি, এমন সবাই ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে টিকার প্রথম ডোজ নিয়ে নেবেন। কেউ এসএমএসের জন্য অপেক্ষা করবেন না। তবে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, কেউ বাদ পড়লে স্থায়ী কেন্দ্র থেকে করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ নিতে পারবেন। আমরা কখনও বলিনি, করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তির সুযোগ নেই। আমরা বলেছি, ২৬ তারিখের মধ্যে সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা হবে। এরমধ্যে যৌক্তিক কারণে কেউ যদি টিকার প্রথম ডোজ নিতে না পারেন, তারা আমাদের যে স্থায়ী কেন্দ্রগুলো আছে যেখানে দ্বিতীয় ডোজ এবং বুস্টার ডোজ দেওয়া হচ্ছে সেখানে আসলে টিকা নিতে পারবেন।
দেশে ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি সরকারি উদ্যোগে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করোনার টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার মাধ্যমে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। পরবর্তীতে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, সিনোফার্ম, মডার্না, সিনোভ্যাক ও জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা দেওয়া হচ্ছে।
২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজধানীসহ সারা দেশে টিকা নেওয়ার সংখ্যা বেড়ে ১৯ কোটি ৬ লাখ ৫৫ হাজার ৯৭ জনে দাঁড়িয়েছে। তাদের মধ্যে প্রথম ডোজের টিকা নেওয়ার সংখ্যা ১০ কোটি ৬৫ লাখ ৫৫ হাজার ২৭০ জন, দ্বিতীয় ডোজের টিকা নেওয়ার সংখ্যা ৮ কোটি ৬৫ লাখ ৫৭ হাজার দুইজন ও বুস্টার ডোজ নেওয়ার সংখ্যা ৩৪ লাখ ৪২ হাজার ৮২৫ জন।
গতকাল সারা দেশে কত মানুষকে টিকার আওয়াতায় আনা হয়েছে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবে, শুক্রবার পর্যন্ত সারা দেশে ১০ কোটি ৯৫ লাখ ৮১ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৮ কোটি ১৯ লাখ এবং বুস্টার ডোজ নিয়েছেন ৩৫ লাখ ৫৯ হাজারের বেশি মানুষ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ