বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশাল কৃষি অঞ্চল সহ সারা দেশে ‘কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট-ব্রি’ উদ্ভাবিত উন্নত জাতের ভুট্টার আবাদ সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশের গবাদি পশু সহ হাঁস-মুরগির খাবারের চাহিদার সাথে বিশাল জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদাও মেটান সম্ভব। ব্যাপক চাহিদার প্রেক্ষিতে গত এক দশকে দেশে আবাদ ও উৎপাদন বাড়লেও ‘গ্রমিনী গোত্রের অধিক ফলনশীল দানা শষ্য’ ভুট্টা নিয়ে আরো মনযোগী হবার পরামর্শ দিয়েছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষিবীদগন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর-ডিএই’র মাঠ কর্মী সহ জেলা পর্যুায়েও খুব একটা তৎপড়তা লক্ষ্যনীয় নয় বলে জানা গেছে। এখনো দেশে এ ফসলের গড় উৎপাদন হেক্টর প্রতি ১০ টনের কাছে পীঠে হলেও ‘বারি’ উদ্ভাবিত উন্নত জাতের বীজ ও সঠিক প্রযুক্তি ব্যাবহারে তা অনায়সেই ১১ টন পর্যন্ত উন্নীত করা সম্ভব বলে মনে করছেন কৃষিবীদগন।
এমনকি অত্যন্ত সম্ভবনাময় এ ফসল রবি ও খরিপ মৌসুমে দুবার আবাদ হলেও আজ পর্যন্ত আবাদী জমির পরিমান ৬ লাখ হেক্টর অতিক্রম করেনি। গত বছর দেশে ৪ লাখ ৮৮ হাজার হেক্টরে প্রায় ৫০ লাখ টনের কাছে ভ’ট্টা উৎপাদন হয়েছে বলে ডিএই’র দায়িত্বশীল সূত্রে বলা হয়েছে। চলতি রবি মৌসুমে প্রায় ৪ লাখ ৯০ হাজার হেক্টরে ৫০ লাখ টন ভ’ট্টা উৎপাদনের লক্ষে কাজ করছেন কৃষি যোদ্ধাগন। ইতোমধ্যে ৪ লাখ ৩০ হাজার হেক্টরে আবাদ সম্পন্ন হয়েছে বলে একাধীক দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। এছাড়াও দেশে খারিপ মৌসুমেও অন্তত ১ লাখ হেক্টরে আবাদের মাধ্যমে আরো ৬ লাখ টন ভুট্টা উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে।
চলতি রবি মৌসুমে বরিশাল কৃষি অঞ্চলের ১১টি জেলাতেই প্রায় ১৪ হাজার হেক্টরে ১ লাখ ৩৫ হাজার টনের মত ভ’ট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ করছেন কৃষকরা। এরমধ্যে বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলাতে ১০ হাজার ২৫ হেক্টরে এবং বৃহত্বর ফরিদপুরের পাঁচ জেলায় আরো প্রায় ৪ হাজার হেক্টরে ভ’ট্টার আবাদ হচ্ছে। উৎপাদন লক্ষ্য রয়েছে বরিশাল বিভাগে প্রায় ১ লাখ টন এবং ফরিদপুর এলাকায় আরো প্রায় ৩৬ হাজার টন।
ফলত্বক ও বীজত্বক একইসাথে মিশ্রিত ভুট্টায় ধান ও গমের তুলনায় পুষ্টিগুন অনেক বেশী। এ দানা শষ্যে এ্যামিনো এসিড, ট্রিপটোন ও লাইসিন সমৃদ্ধ প্রায় ১১% আমীষ জাতীয় উপাদান রয়েছে। কৃষি বিজ্ঞানীদের মতে, হলদে রঙের প্রতি ১শ গ্রাম ভুট্টা দানায় ৯০ গ্রাম পর্যন্ত ক্যরোটিন বা ‘ভিটামিনÑএ’ রয়েছে।
শীত মৌসুমের বাইরে গ্রীষ্মকালেও আমাদের দেশে ভ’ট্টার আবাদ হচ্ছে। দুটি মৌসুম মিলে এর উৎপাদন ৫৬Ñ৫৭ লাখ টনের মত হলেও তা অনায়াসেই ৭০ লাখ টনে উন্নীত করা সম্ভব বলেও মনে করেন কৃষি বিজ্ঞানীগন । যা আমাদের বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য বিকল্প খাদ্য চাহিদা মেটাতেও সক্ষম। পাশাপাশি ভুট্টা উন্নতমানের পোল্ট্রী ফিড ও ফিস ফিড উৎপাদনেও যথেষ্ঠ সহায়ক ভ’মিকা পাালন করছে।
বেলে-দোআঁশ ও দোআঁশ মাটি ভুট্টা চাষের জন্য যথেষ্ঠ উপযোগী। এমনকি দক্ষিণাঞ্চল সহ উপক’লীয় এলাকার নদী তীরবর্তি চরাঞ্চলের মাটি ভুট্টা চাষের জন্য যথেষ্ঠ সহায়ক বলে জানিয়েছেন কৃষি বিজ্ঞানীগন। ভাল ফলন পেতে পরিমিত সার প্রয়োগের পাশাপাশি ভুট্টার জমিতে ৪টি সেচ প্রদানের কথা জানিয়ে জমিতে যেন পানি আটকে না যায় সেদিকেও লক্ষ্য রাখার কথা বলেছেন কৃষি বিজ্ঞনীগন। এমনকি উপক’লীয় লবনাক্ত এলাকায় আমান ফসল ঘরে তোলার পরে গোখাদ্য হিসেবে ভ’ট্টা আবাদের কথাও বলেছেন বারি’র বিজ্ঞনীগন। এতে ঐসব এলাকার গো খাদ্য চাহিদা বাহুলাংশেই মেটান সম্ভব হতে পারে।
কৃষি বিজ্ঞানীদের মতে, ভ’ট্টার জীবনকাল দীর্ঘ বিধায় আরো কয়েকটি ফসলও ভুট্টার সাথে আবাদ করা সম্ভব। এমনকি আমাদের কৃষি বিজ্ঞানীগন ভুট্টার সাথে চিনাবাদাম, মাসকালাই, সয়াবিন, গোল আলু সহ বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি সহ নানা ধরনের আন্তঃ ফসল আবাদের প্রযুক্তিও উদ্ভাবন করেছেন। বিনা চাষে সেচের মাধ্যমেও ভুট্টা আবাদের কথা বলেছেন কৃষি বিজ্ঞানীগন। ভুট্টায় রোগবালাই ও পোকার আক্রমন তুলনামূলকভাবে কম বিধায় বলাইনাশকের প্রয়োগ সিমিত হওয়ায় উৎপাদন ব্যায়ও কমিয়ে আনা সম্ভব বরে জানিয়েছেন বারি’র বিজ্ঞানীগন ।
আমাদের দেশে রবি মৌসুমে আক্টোবর-নভেম্বর ও খরিপ মৌসুমে ফেব্রুয়ারী-মার্চে দুবার ভুট্টার আবাদ হচ্ছে। তবে রবি মৌসুমেই এর আবাদ ও উৎপাদন বেশী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।