Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সারাদেশে সাড়ে ২৪ হাজার টিকাকেন্দ্র

কাল কোটি ডোজ টিকা কার্যক্রম

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক প্রথম ডোজের টিকা নিতে রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন টিকাকেন্দ্রে স্রোতের মতো নানা বয়সী নারী ও পুরুষরা ছুটে আসছেন। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি সারাদেশের এক কোটি মানুষকে করোনার টিকার আওতায় আনা হবে। এ জন্য সাড়ে ২৪ হাজার টিকা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। ওই দিন পর্যন্ত টিকা নিতে কোনো ধরনের নিবন্ধন, জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট কিংবা পাসপোর্ট প্রয়োজন হবে না।

ওই দিনের পর প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া বন্ধ থাকবে এমন খবরে প্রতিটি কেন্দ্রে ভিড় বাড়ছে। বর্তমানে যারা টিকা নিতে আসছেন তাদের নাম, বয়স, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর রেখে টিকা দেওয়া হচ্ছে। গ্রাম ও শহর নির্বিশেষে টিকা নিতে আসা মানুষের ভিড় সামলাতে সংশ্লিষ্ট টিকাকেন্দ্রে দায়িত্বপালনরত কর্মীরা হিমশিম খাচ্ছেন। বিভিন্ন হাসপাতাল ও টিকাদান কেন্দ্রের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানা যায়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, গত কয়েকদিন যাবত কেন্দ্রগুলোতে প্রথম ডোজের টিকা নিতে মানুষের ভিড় ক্রমশ বাড়ছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ মিলিয়ে মোট টিকা নেওয়ার সংখ্যা ২৭ লাখ ৯১ হাজার ৬১৪ জন। তাদের মধ্যে প্রথম ডোজের টিকা নেওয়ার সংখ্যা ১৫ লাখ ৪৯ হাজার ৯১৩ জন। অর্থাৎ মোট টিকার অর্ধেকের বেশি সংখ্যক মানুষ প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আগামী ২৬ ফেব্রæয়ারি সারাদেশে এক কোটি জনসংখ্যাকে প্রথম ডোজের টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকাদানের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই লক্ষ্যে ২৬ ফেব্রুয়ারি এক কোটি জনসংখ্যাকে টিকা দেওয়া হবে। পরবর্তীতে দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজের কার্যক্রম জোরদার করা হবে। তিনি জানান, এ কর্মসূচিকে সফল করতে গ্রামাঞ্চলে ১৬ সহ¯্রাধিক ও শহরাঞ্চলে (সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা) সাড়ে ৮ হাজারের বেশি অস্থায়ী টিকাকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। সেখানে প্রায় ৭০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবে। এরই মধ্যে সরকার সম্প‚র্ণ বিনামূল্যে দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ১৮ বছর বা তদুর্ধ্ব ৬১ শতাংশকে প্রথম ডোজ, ৪৬ শতাংশকে দ্বিতীয় ডোজ টিকাদান সম্পন্ন করেছে। ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়া হচ্ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার শ্যামলী টিবি হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, হাসপাতালে প্রথম ডোজের টিকা নিতে নারী ও পুরুষের ভিড় জমেছে। তিনি অন্যান্য হাসপাতালের টিকাকেন্দ্রে কথা বলে জেনেছেন প্রতিটি হাসপাতালের একই অবস্থা। তার কেন্দ্রে প্রতিদিন দুই হাজার টিকা দেওয়া হয়। দুপুরের মধ্যেই তা শেষ হয়ে যায়। টিকা শেষ হওয়ার পরও অনেকে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেন। তিনি বলেন, আগামী ২৬ ফেব্রæয়ারির পর প্রথম ডোজের টিকা নেওয়া যাবে না অথবা জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন কিংবা জন্মনিবন্ধনের প্রয়োজন হবে না, এমন খবরে ঝামেলা এড়াতে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ টিকা নিতে ছুটে আসছেন।

গতকাল বৃহস্পাতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স¤প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হক স্বাক্ষরিত অতীব জরুরি এক চিঠিতে এই নির্দেশনায় বলা হয় শুক্রবার ২৫ ফেব্রুয়ারি সাপ্তাহিক ছুটির দিন সারা দেশের সকল কোভিড-১৯ টিকা সেন্টার খোলা থাকবে। এতে আরও বলা হয়, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য গণটিকা কার্যক্রমকে ঘিরে দেশব্যাপী বিপুল উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। ভ্যাকসিনেশন কেন্দ্রগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষিত হচ্ছে। জনমনে সৃষ্ট এই ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও টিকার চাহিদা পূরণের কারণে শুক্রবার ২৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশের সকল কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন সেন্টার খোলা রেখে এবং প্রয়োজনে অতিরিক্ত কেন্দ্র/ বুথ এর মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।

দেশে ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি সরকারি উদ্যোগে সম্প‚র্ণ বিনামূল্যে করোনার টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার মাধ্যমে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। পরবর্তীতে ৭ ফেব্রæয়ারি থেকে গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, সিনোফার্ম, মডার্না, সিনোভ্যাক ও জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা দেওয়া হচ্ছে।

২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত রাজধানীসহ সারাদেশে টিকা নেওয়ার সংখ্যা বেড়ে ১৯ কোটি ৬ লাখ ৫৫ হাজার ৯৭ জনে দাঁড়িয়েছে। তাদের মধ্যে প্রথম ডোজের টিকা নেওয়ার সংখ্যা ১০ কোটি ৬৫ লাখ ৫৫ হাজার ২৭০ জন, দ্বিতীয় ডোজের টিকা নেওয়ার সংখ্যা ৮ কোটি ৬৫ লাখ ৫৭ হাজার দুইজন ও বুস্টার ডোজ নেওয়ার সংখ্যা ৩৪ লাখ ৪২ হাজার ৮২৫ জন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: টিকাকেন্দ্র
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ