পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলে দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহ খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেয় হল কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে বিভিন্ন হল ঘুরে দেখা যায়, হলে প্রবেশের সময় শিক্ষার্থীদের মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, খাবার ও ফুল দেওয়া হচ্ছে। তবে হলে প্রবেশের আগে করোনা টিকার সনদ দেখাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। যাদের করোনা টিকার সনদ নেই তাদের একটা ফর্ম পূরণ সাপেক্ষে তাৎক্ষণিক টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে টিকাকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে এ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা।
উদ্বোধনের পর মীরজাদী সেব্রিনা সাংবাদিকদের বলেন, করোনা টিকা নিলে টিকা গ্রহণের সনদ দেওয়ার একটি বিষয় রয়েছে। সেজন্যই ম‚লত টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা। রেজিস্ট্রেশনের এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশ্লিষ্ট। সেজন্য যাঁদের এনআইডি আছে প্রাথমিকভাবে তাঁদেরকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। যাঁদের এনআইডি নেই তাঁদের জন্ম নিবন্ধন কার্ডের মাধ্যমে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। যাঁদের দুটোর কোনটাই নেই তাঁদেরকে অনুরোধ করবো- তাঁরা যেন শিগগির এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে টিকার আওতায় আসে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান কর্মকর্তা ডাক্তার শামছুর রহমান বলেন, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ বর্তমান শিক্ষার্থী তারা হল প্রাধ্যক্ষের সত্যায়ন ক্রমে টিকা গ্রহণ করতে পারবে। টিকা গ্রহণের জন্য হল আইডি কার্ডের পাশাপাশি জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্মসনদ অথবা পাসপোর্টের কপি দেখাতে হবে। অন্যথা শিক্ষার্থীরা টিকা গ্রহণ করতে পারবে না।
অস্থায়ী বুথের এই টিকা কার্যক্রম সমন্বয় করছেন ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক এ এ মামুন। তিনি বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জন্য কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তথ্য মতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এখনো টিকার আওতায় আসেনি। আমরা এই অস্থায়ী ক্যাম্পের মাধ্যমে সকলকে টিকার আওতায় আনতে চাই। এখন টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হচ্ছে। আমাদের এই কার্যক্রম আপাতত তিনদিন চলবে। পরবর্তীতে প্রয়োজনে আবারো ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। তবে যদি কারো প্রথম ডোজ দিতে বাকি থাকে তবে আবার যখন দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে তখন সেসব শিক্ষার্থীরা প্রথম ডোজ নিতে পারবেন।
এদিকে আবাসিক হলের ডাইনিং, ক্যান্টিনে তিন বেলা খাওয়ার ব্যবস্থার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য তিন বেলার খাবারের ব্যবস্থা করতে খোলা হয়েছে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক ও পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবীর বলেন, শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে আমরা কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া চালু করেছি। এখানে তিন বেলা শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে পারবে। খাবারের মান উন্নয়ন এবং মূল্য কমানোর ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ দৃষ্টি রাখবো। কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় প্রতিদিন কয়েকশত শিক্ষার্থীর জন্য খাবার প্রস্তত করা হবে বলেও জানান তিনি।
এতদিন পর ক্যাম্পাসে ফিরতে পারার আনন্দে এই বিষয়ে দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের (৪৬তম আবর্তন) ছাত্রী সুমাইয়া ইয়াসমিন বলেন, দীর্ঘদিনের বন্ধ কাটানোর পর হলে উঠে সত্যি খুব ভালো লাগছে। অনেকদিন পর হলমেটদের সাথে দেখা হলো। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারনে রুমে ধুলাবালি পড়েছে অনেক, হলের কর্মচারী এবং নিজদের সব নতুন করে গুছিয়ে নিতে হচ্ছে। আবারও হলের পরিবেশে ফিরতে পেরে ঈদের খুশি অনুভ‚ত হচ্ছে।
ইংরেজি বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র (৪৭তম আবর্তন) শেখ তাজুল ইসলাম বলেন, হলে ওঠার অনুভূতি বলতে গেলে অনেকদিন পর হলের বড়ভাই, বন্ধু ; ছোটোভাইদের সাথে দেখা, তাদের করোনা জয়ের গল্প শোনা ; সুখ- দুঃখের অনুভূতিগুলো শেয়ার করা। একইসাথে অনেকের সাথে আর না দেখা হওয়ার গল্পও আছে। যেমন, আমার হলের ৪৪তম আবর্তনের একভাই মারা গেছেন করোনায়। হলে আর কখনো তাকে দেখতে পাবো না, সেই অনুভূতিও আসলে আমাকে ব্যথিত করে। তাছাড়া হলের গন্ধ, আমেজ একটু আলাদা ই; সবার সাথে একসাথে আড্ডা হবে হয়তো কিছুদিন পর। সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাক এই কমানা ই থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।