দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
উত্তর : মহান আল্লাহ তাআলা মানুষ সৃষ্টি করেন। মনের ভাব প্রকাশে, শিক্ষা দিলেন ভাষা। সে হিসাবে,মাতৃ ভাষা বান্দার জন্য বড়ই নিয়ামত। আমরা মানুষ,মাতৃ ভাষায় কথা বলি। ভাষা সর্ম্পকে আল্লাহ তাআলা আল কোরআনে ঘোষনা করেন,‘দয়াময় আল্লাহ শিক্ষা দিয়েছেন আল কোরআন। সৃষ্টি করেছেন মানুষ।শিক্ষা দিয়েছেন ভাষা’(সুরা আর রহমান)। আল্লাহ তাআলাই ভাষার স্রষ্টা। ভাষার ব্যাপারে মাখলুকের কোন প্রকার ভুমিকা নেই। মহান আল্লাহ অন্যত্র বলেন,‘তার আরও এক নিদর্শন হচ্ছে নভোমন্ডল ও ভুমন্ডল সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। নিশ্চয় এতে জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শনাবলী রয়েছে’(সুরা রুম- ২২)। এখানে ভাষা বলতে নিদিষ্ট কোন ভাষার কথা বলেন নি। সব ভাষাই আল্লাহর নির্দশন। সে হিসাবে সব ভাষার মর্যাদা সমানে সমান। বিশ^ নবী (দ) বলেন,‘তিন কারনে আমি আরবী ভাষাকে ভালোবাসি।আমি আরবী ভাষী,আল কোরআনের ভাষা আরবী এবং জান্নাতের ভাষা হবে আরবী’।
আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি।আল কোরআনের তাফসির,হাদিসের ব্যাখাসহ বিভিন্ন কিতাব,বইপত্র বাংলা ভাষায় অধ্যায়ন করি। ভাষা সর্ম্পকে আল্লাহ আরো বলেন,‘আমি প্রত্যেক রাসুল (দ) কে স্বজাতির ভাষাভাষি করে পাঠিয়েছি,তাদের কাছে পরিস্কার ভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য। অতঃপর আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন যাকে চান এবং পথ দেখান যাকে চান,তিনি মহা সম্মানিত, প্রজ্ঞাময়’। আল্লাহ আরো ঘোষনা করেন,‘আমি আপনাকে সত্যসহ প্রেরন করেছি সুসংবাদদাতা ও সর্তককারী হিসাবে। এমন কোন সম্প্রদায় নেই যাদের কাছে সর্তককারী প্রেরিত হয়নি’(সুরা ফাতির)। আল্লাহ আরো বলেন,‘নিশ্চয় আল্লাহর মহা অনুগ্রহ হয়েছে মুমিনদের উপর, তাদের মধ্য থেকে তাদের জন্য একজন রাসুল প্রেরন করেছেন। যিনি তাদের ওপর তার আয়াত সমুহ পাঠ করেন এবং তাদের পবিত্র করেন। আর তাদের কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দান করেন এবং তারা নিশচয় আগে সুস্পষ্ট গোমরাহিতে ছিল’(সুরা আল ইমরান)।
ভাষা মানুষের জস্মগত অধিকার। আমরা বাঙালি। বাংলা ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করি।মায়ের কোলে থেকে এ ভাষায় কথা বলি।কথা বলা শিখি। আমাদের চলা ফিরা,উঠা বসা,চিন্তা-চেতনা,প্রেম-ভাবাসা,হিংসা-বিদ্বেষ,আগ্রহ-অনাগ্রহ মোট কথা সব ধরনের কর্ম কান্ড এই ভাষার সাথে জড়িত। আল্লাহ বলেন,‘এভাবে আমি আপনার প্রতি কোরআন অবর্তীন করেছি আরবী ভাষায়,যাতে আপনি সর্তক করেন সব শহরের মুল মক্কা ও তার চারিদিকের জনগণকে এবং আপনি সর্তক করবেন নিয়ামত দিবস সর্ম্পকে,যাতে কোন সন্দেহ নেই। সে দিন একদল জান্নাতে যাবে একদল জাহান্নামে’(সুরা শুরা)। মহান প্রভু আল কোরআনকে আরবী ভাষায় মানবতার বন্ধু বিশ্ব নবী (দ) এর উপর নাজিল করেন। আল্লাহ বলেন,আমি সেটাকে অবর্তীন করেছি আরবী ভাষায়,কোরআন যাতে তোমরা বুঝতে পারো’(সুরা ইউসুফ)। আল্লাহ আরো বলেন,এক কিতাব বিশুদ্ধ ভাবে বিবৃত হয়েছে এর আয়াত সমুহ আরবি ভাষায় কোরআন,বোধ শক্তি সম্পন্নদের জন্য’(সুরা মিম সিজদা)।
পৃথিবীতে হাজার হাজার ভাষা রয়েছে। ভাষা সমুহের মধ্যে বাংলা ভাষা একটি অন্যতম ভাষা। সারা পৃথিবীতে প্রায় পচিঁশ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। আমাদের মাতৃ ভাষা বাংলা। এটি, একটি প্রাচিন ভাষা। তাছাড়া আমাদের মাতৃভাষা বাংলা রাষ্ট্রীয় ভাষা। বাংলা নিয়ে আমরা গর্বিত। জাতিগত ভাবে সফলতা অর্জন করতে হলে,সর্ব প্রথম মাতৃভাষার গুরুত্ব অপরিসীম। কোন জাতির মাতৃভাষা যতক্ষন পর্যন্ত সাহিত্য সংস্কৃতির স্বাক্ষর হবে না,ততোক্ষন পর্যন্ত সে জাতি পুর্ণ স্বাধীনতা লাভ করতে পারবে না। মাতৃভাষার চেতনাই জাতিকে উন্নতির সিঁড়িতে পৌছে দেন। আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। এ ভাষার প্রতি কারো,কোন প্রকার উদাসীনতা প্রকাশের সুযোগ্য নেই।তাছাড়া ইসলাম ধর্ম মাতৃভাষার প্রতি যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা দান করেছেন। আমাদের দেশে ইসলাম প্রচার,কিতাব লিখনি,জনসভা,মিটিং,মিছিলে মাতৃভাষা বাংলাকে যথাযথ ভাবে মুল্যয়ন হয়ে থাকে। প্রত্যেক নবী ও রাসুলগণ ছিলেন মাতৃভাষার পন্ডিত। নবী ও রাসুলদের প্রতি যে সব আসমানি কিতাব নাজিল হয়েছে সবই ছিল স্বজাতির ভাষায়। দাউদ (আ) এর উপর নাজিল কৃত জাবুর কিতার গ্রিক ভাষায়,হযরত মুসা (আ) এর উপর নাজিল কৃত তাওরাত কিতাব হিব্রু ভাষায,হযরত ঈসা (আ) এর উপর সাজিল কৃত ইন্িজল কিতাব সুরিয়ানি ভাষায় এবং শেষ নবী মোহাম্মদ (দ) এর উপর নাজিল কৃত মহা গ্রন্থ আল কোরআন আরবের নিশুদ্ধভাষা আরবীতে অবর্তীন হয়েছে। মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষনা করেন,‘আমি প্রত্যেক নবীকে(আ) তাদের স্বজাতির ভাষায় প্রেরন করেছি তাদের সম্প্রদায়ের কাছে,যাতে তারা জাতিকে সুস্পষ্ট ভাষায় বুঝাতে সক্ষম হয়”(সুরা মারয়িম-৯৭)।
উত্তর দিচ্ছেন : আসাদুজ্জামান আসাদ, প্রভাষক, সাংবাদিক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।