Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নিকলীতে মৃৎশিল্পের দুর্দিন

মো. হেলাল উদ্দিন, নিকলী ( কিশোরগঞ্জ) থেকে | প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৪ এএম

কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার পালপাড়ায় মৃৎশিল্পের লোকজনদের বসবাস এঁটেল মাটি সংগ্রহ করে সারাবছর মাটির হাঁড়ি-পাতিল, খেলনার জিনিসপত্র তৈরি করতো। এসব জিনিসপত্র বিভিন্ন গ্রামে, মেলায়, হাট-বাজারে বিক্রি করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষরা তাদের জীবিকা নির্বাহ করতো। এ শিল্পের সাথে পালপাড়ার ২১টি পরিবারের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে এ কাজে লিপ্ত। বর্তমান সময়ে চলছে শিল্পের দুর্দিন।
সরেজমিনে গিয়ে এ বিষয়ে মৃৎশিল্পি মৃত দীনেশ চন্দ্র পালের পুত্র রবীন্দ্র পাল (৬২) এবং শান্ত পালের (৬০) কথা হলে এ প্রতিনিধিকে বলেন, মাটির তৈরি জিনিসপত্র এক সময় সংসারিক কাজে ব্যবহার করতো। এসব জিনিস বিক্রি করে আমাদের সংসারের দিনকাল তখন ভালো ছিল। পরিবারে ব্যবহারের জন্য যে জিনিগুলো আমরা তৈয়ার করতাম তা এখন সিলভার প্লাস্টিকের তৈরি জিনিস বাজারে পাওয়া যায়, তাই মাটির তৈরি জিনিসের চাহিদা নেই। আমাদের আর করার কিছুই নেই। এখন বাচ্চাদের খেলনার জিনিসপত্র তৈরি করি। না পারি এ কর্ম ছাড়তে, না পারি অন্য কোন কর্ম করতে। শত অভাব অনটনের মাঝে বাব-দাদার কাছ থেকে শেখা কর্ম মৃৎশিল্পকে ঐতিহ্য হিসেবে কোন রকম ধরে রেখেছি। পুরুষদের পাশাপাশি নারীও মৃৎশিল্পের কাজে সহায়তা করে থাকে। কেউ কেউ বেকারত্বের তাড়নায় দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যাবার ইচ্ছায় তাদের জমি-জামা বিক্রি করে দেয়। কিন্তু সে টাকা বসে খেতে খেতে শেষ হয়ে যায়। তাই ভারতে যাওয়া হয়নি। কেউ কেউ কর্ম না থাকায় জমি বিক্রি করে অন্য কিছু করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
জানা যায়, সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে ২১টি পরিবারের মধ্যে ৫টি পরিবারকে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। পালপাড়ার অধিবাসী চিনু রানী পাল (৫৮) বলেন, সরকার যদি আমাদের অসাহায়ত্বের কথা বিবেচনা করে, সহজ শর্তে সুদ মুক্ত ব্যাংক ঋণ দেন, তাহলে এ শিল্পটাকে ধরে রাখতে পারি এবং সুন্দর ও স্বচ্চলভাবে আমরা চলতে পারি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসান বলেন, আধুনিক মৃৎশিল্পি হিসেবে তাদেরকে দক্ষ করে গড়ে তুলার লক্ষে পালপাড়ার ২০টি পরিবারের লোকদের উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যারা সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা পায়নি তাদেরকে প্রণোদনা দেয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আনা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ