Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুড়িগ্রামে জমি বিরোধে ৩০টি বাড়িতে দুর্বৃত্তদের হামলা লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগ

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৬:৩০ পিএম

কুড়িগ্রামের নাগেশ^রী উপজেলার ব্রহ্মপূত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন নারায়ণপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত দক্ষিণ ঝাউকুটি গ্রামে হামলা, লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার রাত ৮টার দিকে শতাধিক মানুষ এই হামলায় অংশ নেয়। এতে আহত হয়েছে ১৫ থেকে ১৬জন। গুরুতর আহত ৮জনকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জমিজমা নিয়ে বিরোধে এই রক্তক্ষয়ী হামলার ঘটনা ঘটানো হয়।
এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ জাউকুটি গ্রামে জমিজমা নিয়ে নুর ইসলাম, সাবেক মেম্বার আবু হানিফ ও মোন্নাফ মেম্বার গংদের সাথে একই এলাকার সাবেক মেম্বার আমজাদ হোসেন ও তার মামা রিয়াজুল গংদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। রিয়াজুল গংদের মামলায় রবিবার ভোরে নুর ইসলাম, সাবেক মেম্বর আবু হানিফ মোন্নাফ গংরাসহ ২৫ থেকে ৩০জন জামিন নিতে কুড়িগ্রাম কোটে যায়। এই সুযোগে আমজাদ হোসেন ও রিয়াজুলগংরা সংঘবদ্ধ হয়ে প্রায় শতাধিক মানুষ লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নুর ইসলাম, সাবেক মেম্বার আবু হানিফ ও মোন্নাফ মেম্বার গংদের বাড়ীঘরে হামলা, লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়।
এসময় রক্তাক্ত জখম হয় ১৫ থেকে ১৬ জন নারী-পুরুষ। গুরুতর আহত হাতেম আলীর স্ত্রী সবুরা বেগম (৪৮), শাহাবুদ্দিনের ছেলে আবুল হোসেন (৩৬), আকবর আলীর ছেলে আমীর হোসেন (৩৮), আবুল হোসেনের ছেলে রুপচাঁদ (১৫), আব্দুর রহমানের মেয়ে কদভানু (৪৫), সফিউদ্দিনের ছেলে নুর হোসেন (৩৫), হাতেম আলীর ছেলে সোমেদ আলী (২৬) ও জুরাইন আলীর ছেলে মোন্নাফ মেম্বার (৫৫) কে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এসময় দুর্বৃত্তরা প্রায় ৩০টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটতরাজ করে নিয়ে যায় টাকা-পয়সা, জমির দলিল, ধান-চাউল, কাপড়সহ ১৮ টি গরু। আগুন ধরিয়ে দেয় ৩টি বাড়িতে। ভাঙচুর করে একটি মোটর সাইকেল। ফেরার সময় জমি তেকে একটি শ্যালো মেশিন তুলে নিয়ে যায়।
ওই গ্রামের আমীর হোসেন ও সোহাগ জানান, বাড়িতে লোকজন কম ছিল। রাতের খাবার খেয়ে লোকজন ঘুমের প্রস্ততি নিচ্ছিল। এসময় হামলা চালানো হয়। নারী-পুরুষ নির্বিচারে লাঠি দিয়ে পেঠানো হয়।
গ্রামের কতভানু জানান, আমার ঘরের সবকিছু নিয়া গেছে। আটকাতে গেলে আমাকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করলে রক্তাক্ত যখম হই। পালাতে গিয়ে কাপড় খুলে গেছে। তবু তারা পিছু ছাড়ে নাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত হামলাকারী আমজাদ মেম্বার ও রিয়াজুল ইসলামের পক্ষের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে নারায়ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঘটনা শুনে আমি সোমবার সেখানে যাই। হামলাকারীরা যেভাবে বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে লুটতরাজ করেছে, মহিলা-পুরুষদের পিটিয়েছে তা দেখে চোখে পানি ধরে রাখতে পারিনি। যারাই দেখেছে তারাই কেঁদেছে। মানুষ এতটা নৃশংস হতে পারে তা ভাবা যায়না। আজ ওই পরিবারের লোকজন কি খাবে, কি পরবে সেটুকুও তারা রেখে যায়নি। বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তাকে মোবাইলে অবগত করা হয়েছে।
নাগেশ^রীর কচাকাটা থানায় একাধিকবার যোগাযোগ করেও অফিসার ইনচার্জের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রুহুল আমীন জানান, ঘটনাটি আপনার মাধ্যমে জানলাম। সংশ্লিষ্ট থানাকে বিষয়টি জানানো হবে। প্রকৃত ঘটনা জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ