Inqilab Logo

শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পানি সঙ্কটে বোরো চাষিরা

আনোয়ারায় পুরাতন সুইসগেট বন্ধ ও নতুন নির্মাণে ধীরগতি

নুরুল আবছার তালুকদার, আনোয়ারায় (চট্টগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৩ এএম

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুইসগেট বন্ধ রাখায় ইছামতি, কোদালা ও কান্দারিয়া ৩টি খালে পানি সঙ্কটের কারণে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির বোরো চাষ ব্যাহত হচ্ছে। পানি না থাকায় জমিতে ফাটলও দেখা দিয়েছে। এতে করে জমিতে লাগানো বোরো ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছে দশ হাজার বোরো চাষি কৃষক। নতুন সুইসগেট নির্মাণে ধীরগতি ও পুরাতন সুইসগেট নিয়ন্ত্রণে কোন লোক না থাকায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান কৃষকেরা। তবে সঙ্কট নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান কৃষি অফিস।
সরেজমিনে দেখা যায়, উত্তর ইছাখালী, কৈনপুরা, কোদালা এলাকায় পানি সঙ্কটে বোরো ধানের মাঠ শুঁকিয়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। মাঠে লাগানো ধান পানির অভাবে লাল হয়ে উঠে।
আনোয়ারা কৃষি অফিস সূত্রে জানা য়ায়, উপজেলার ইছামতি-কোদালা-কান্দারিয়া খালের পানি দিয়ে চাতরী, আনোয়ারা সদর, বারখাইন, পরৈকোড়া, হাইলধর ইউনিয়নের প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির দশ হাজার কৃষক বোরো ও রবিশস্য চাষ করে। গত বছর নতুন সুইসগেট নির্মাণের জন্য শিকলবাহা খালের নোয়ারাস্তা-কোদলা-ইছামতি খালের মুখে বাঁধ দেয়া হলে ইছামতি-কোদালা-কান্দারিয়া খালে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
সমস্যা সমাধানে পুরতান সুইসগেট ব্যবহার করে পানি সঙ্কট নিরসনের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু পুরাতন সুইচগেট নিয়ন্ত্রণের জন্য কোন লোক না থাকা ও স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তি মাছ শিকারের জন্য পুরাতন সুইসগেট বন্ধ করেদিলে বিপাকে পড়ে বোরো চাষিরা। এতে করে ইছামতি-কোদালা-কান্দারিয়া খালে পানি সঙ্কট দেখা দেয়। ফলে কৈখাইন, কোদালা, খাসকামা, উত্তর ইছাকালী, মালঘর, শালকাটা, বোয়ালগাঁও, খীলপাড়া, ধানপুরা, শিলাইগড়া, ঝিওরি ও তৈলারদ্বীপসহ এ অঞ্চলের প্রায় দশ হাজার কৃষক রবিশস্য ও বোরো চাষের চাহিদা অনুপাতে পানি না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছে।
ইছাখালীর কৃষক নাজিম উদ্দিন বলেন, খালের পানির উপরই আমাদের বোরো চাষ নির্ভর করে। এ বছর ২২ কানি জমিতে বোরো চাষ করেছি। এখন খালে পানি না থাকায় চিন্তায় পড়েছি।
মালঘর এলাকার জাকের আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, সুইসগেট নিয়ন্ত্রণে কোন লোক না থাকায় পানি চলাচলে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। নতুন সুইসগেট নির্মানের কাজ এক বছরেও শেষ হচ্ছে না, এ কারণে পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী বলেন, উপজেলার প্রায় দশ হাজারেরও অধিক বোরো চাষি ইছামতি, কোদালা ও কান্দারিয়া খালের পানির ওপর নির্ভরশীল। পানি সঙ্কট নিরসনে আমরা ইছামতি-কোদালা খালের সুইসগেট খুলে দিয়েছি এবং দুইজন লোককে দেখাশুনার দায়িত্ব প্রদান করেছি।
চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তনয় কুমার ত্রিপুরা বলেছেন, সুইচগেট নিয়ন্ত্রণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোক দেওয়া সম্ভব নয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাই এ গুলো নিয়ন্ত্রণ করে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমদ বলেন, বোরো চাষে পানি সঙ্কটের কথা শুনে সংশ্লিষ্টদের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করি পানি সঙ্কটের দ্রুত স্থায়ী সমাধান হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ