Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মির্জাগঞ্জে বীর নিবাস নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

মেহেদী হাসান মুবিন, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) থেকে : | প্রকাশের সময় : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন বীর নিবাস নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. বেলায়েত হোসেন খোকনের বিরুদ্ধে। সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছেমত নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় থেকে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০২০-২১ অর্থবছরে মির্জাগঞ্জ উপজেলায় ১২ জন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে আবাসন (বীর নিবাস) নির্মাণের জন্য ১ কোটি ৬৯ লাখ ২৪ হাজার ৫৮৪ টাকা বরাদ্দ দেয়। এতে প্রতিটি ঘর নির্মাণের ব্যয় ধরা হয় ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩৮২ টাকা। দরপত্র আহ্বান করা হলে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি পান বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স আছিয়া এন্টারপ্রাইজ।
জানা যায়, গত ২৯ নভেম্বর ২০২১ তারিখ কার্যাদেশ পেয়ে ঘরের নির্মাণ কাজ শুরু করেন ওই ঠিকাদার। কিন্তু ঠিকাদার নির্মাণ কাজের নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে নিম্নমানের ইট, খোয়া ও স্থানীয় কাদামিশ্রিত বালু ব্যবহার করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও নির্মাণ কাজে পরিমাণ মতো সিমেন্টও ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে জানান উপকারভোগীরা।
এসব নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ করতে নিষেধ করলে দেউলি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত সেকান্দর আলী মাস্টারের স্ত্রী মোসা. সামসুর নাহার বেগম ও দক্ষিণ কাকড়াবুনিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা বীরঙ্গনা মোসা. আলেয়া বেগমের সঙ্গে ঠিকাদারের বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। অবশেষে ঠিকাদার কিছু সামগ্রী সরিয়ে ফেলে। তবে এরপরও কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছেন।
উপকারভোগী মোসা. সামসুর নাহার বেগম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পেয়ে আমরা অনেক খুশী। কিন্তু ঘর নির্মাণের শুরু থেকেই ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে আসছেন। তারা আমাদের কোন কথাই শুনছেন না। নিজেদের ইচ্ছেমতো কাজ করছেন।
উপকারভোগী মুক্তিযোদ্ধা বীরঙ্গনা মোসা. আলেয়া বেগম বলেন, ‘ঘরের ইট হেরোম ভালো না, আর বালু দেছে কাদা কাদা, লাল বালু দ্যায় নায়। আর রডতো ছোয়ায়ই নাই, শুধু ল্যাট্টিনে কয়ডা দেছে। সিমেন্টও ঠিকমতো দ্যায় না। আমরা নিষেধ করলেও তারা শুনছেন না। তাদের মনমতো কাজ করে’। এ ব্যাপারে ঠিকাদার মো. বেলায়েত হোসেন খোকন বলেন, সিডিউল মোতাবেক কাজ করা হচ্ছে। তবে ভালো ইটের সাথে কিছু খারাপ ইট যেতে পারে। সেগুলো রাজ মিস্ত্রিকে ঘরে লাগাতে নিষেধ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পটুয়াখালী অঞ্চলের বিভাগীয় উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান বলেন, আমি অসুস্থতার কারণে ঘরগুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করতে পারিনি। খুব শিগগিরই কাজের মান পরিদর্শন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. তানিয়া ফেরদৌস বলেন, বীর নিবাস নির্মাণে একটি ঘরে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পেয়ে সেটি সমাধান করে দিয়েছি। অন্য কোনো ঘরে এ ধরনের অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ