Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খুলনায় আ’লীগের এমপি’র সহ ১৪ টি অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদে অভিযান শুরু

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:৪৫ পিএম

হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ভদ্রা ও হরি নদী তীরের সরকারি জায়গায় স্থাপিত ১৪টি অবৈধ ইটভাটাসহ সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অবৈধ ইটাভাটার মধ্যে খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও আ’লীগ নেতা নারায়ন চন্দ চন্দ্রের ইটভাটাও রয়েছে।
আজ শনিবার(২০ফেব্রুয়ারী) উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মামুনুর রশীদ এর নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমান আদালত এ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে দুইটি ইট ভাটাকে ৩ লাখ টাকা জরিমানাসহ ৫টি ইট ভাটাকে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অভিযানে আটলিয়ার বরাতিয়া এলাকায় শাহাজান জমাদ্দারের মালিকানাধীন নুর জাহান ব্রিকস -২ ইট ভাটা লাইসেন্স দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং নদীর মাটি কেটে ইট প্রস্তুুত করার অপরাধে ২ লাখ টাকা জরিমানা ধার্য্য অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদন্ডাদেশ, খর্ণিয়া এলাকায় সোহরাব হোসেনের মালিকানাধীন এএফএম ব্রিকস লাইসেন্স দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদন্ডাদেশ প্রদান করেন।
এ ছাড়া গাজী এজাজ আহমেদ এর মালিকানাধীন সেতু ব্রিকস,মোঃ ফজলুর রহমানের মালিকানাধীন এসবি ব্রিকস ও মোঃ সালেহ আখতার মাহির মালিকানাধীন কেবি-২ ব্রিকস কে নদীর জায়গায় স্থাপিত সকল স্থাপনা, ইট ও মাটি আগামী ৩ দিনের মধ্যে সরিয়ে নিতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। আদালত পরিচালনায় সহযোগিতা করেন ডুমুরিয়া থানা পুলিশ ও উপজেলা ভূমি অফিস।
সূত্র জানায়, খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া,খর্ণিয়া ও রুদাঘরা ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ভদ্রা ও হরি নদীর তীরের জমি এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি দীর্ঘ দীর্ঘ দিন ধরে অবৈধভাবে দখল করে ইট ভাটা পরিচালনা করে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে গত বছর ২২ ফেব্রুয়ারী মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস এ- পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) হরি ও ভদ্রা নদীর জায়গা দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটা উচ্ছেদের জন্য জনস্বার্থে সংগঠনের পক্ষে হাইকোর্টে রীট পিটিশন দায়ের করেন। গত বছর ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রীট পিটিশনটি শুনানী শেষে পরবর্তি ৬০ দিনের মধ্যে অবৈধ ১৪ টি ইটভাটার অপসারণের নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মামুনুর রশীদ বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ইট ভাটা গুলোতে থাকা সরকারি জমি উদ্ধার এবং আইন বাস্তবায়নে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।আগামী তিন দিনের মধ্যে সরকারি জমি তে থাকা সকল স্থাপনা এবং স্তুুপকৃত ইট ও মাটি অন্যত্র সরিয়ে নিতে ভাটা মালিকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা অমান্যকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উচ্ছেদের নির্দেশ দেয়া ইট ভাটা গুলো হচ্ছে, ডুমুরিয়া কুলবাড়িয়া, বরাতিয়া ও ভদ্রাদিয়া মৌজার ভদ্রা নদীর তীরবর্তী এসবি ব্রিকস এর প্রতিষ্ঠানের মালিক ফজলুর রহমান। একই মৌজা ও নদীর তীরে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি’র মালিকানাধীন কে.পি.বি ব্রিকস, কুলবাড়িয়া বরাতিয়া ও খর্ণিয়া মৌজার ভদ্রা তীরের এজাজ আহমেদের সেতু-১ ব্রিকস, শাহজাহান জমাদ্দারের নূরজাহান-১ ব্রিকস, হুমায়ুন কবির বুলুর কে.বি-২ ব্রিকস, কুলবাড়িয়া বরাতিয়া ভদ্রা নদী তীরে শাহজাহান জমাদ্দারের শান ব্রিকস, রানাই মৌজার ভদ্রা নদীর তীরে মোঃ সোবাহান সানার এফএম ব্রিকস, রানাই মৌজার হরি নদী তীরের জাহিদুল ইসলামের কেবি ব্রিকস, ইসমাইল হোসেন বিশ্বাসের আল-মদিনা ব্রিকস, মশিউর রহমানের মেরি ব্রিকস, আবদুল লতিফ জমাদ্দারের জেবি ব্রিকস, আমিনুর রশিদের লুইন ব্রিকস, চহেড়া মৌজার হরি নদী তীরে গাজী আবদুল হকের সেতু-৪ ব্রিকস এবং রুদাঘরা মৌজার হরি নদী তীরের গাজী ইমরানুল করিরের টিএমবি ব্রিকস।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ