পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলা একাডেমি আয়োজিত একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে বইমেলা গতকাল শুক্রবার প্রথম ছুটির দিন পার করে। ছুটির দিনে লোকে লোকারণ্য ছিল একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মেলা প্রাঙ্গন। প্রাণ ফিরে পেয়েছে মেলা। প্রাণের মেলা হয়ে উঠেছে মানুষের মেলা।
ছুটির দিন হওয়ায় সাত সকালেই রাজধানীর জ্যাম কাটিয়ে মেলা দর্শনে এসেছেন শিশু-কিশোরসহ সব বয়সী বই প্রেমী। বিগত বছরের ন্যায় এবারের মেলাতে নেই শিশুপ্রহর। তা সত্ত্বেও গতকাল মেলা প্রাঙ্গনে দেখা যায় শিশুদেরও আনাগোনা। বাবা-মায়ের হাত ধরে এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়িয়েছে শিশুরা। কেউ কেউ বইও কিনেছে রং-বেরংয়ের।
বয়সের হিসেবে ৬ বছরের শিশু জান্নাতুনকে নিয়ে মেলায় এসেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মো.এমেল হক মোল্লা। জান্নাতুনকে কিনে দিয়েছেন পৃথিবীর সেরা রূপকথার গল্প ‹সিনড্যারেলা ও ইশপের গল্পসমূহ›। ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে জান্নাতুন বলেন, আজ ছুটির দিন, বাবার অফিস নেই; তাই তাকে নিয়ে চলে আসলাম বইমেলায়। কিনলাম দু›টো গল্পের বই। এমেল হক বলেন, আজকেই প্রথম মেলায় এসেছি। প্রতিবছরই আসি দু-একবার। এসে মনে হচ্ছে সত্যিকারের মেলায় এসেছি। এত এত মানুষের সমাগম দেখে খুব ভালো লাগছে। মেয়েকে নিয়ে আসতে পেরেছি - এটাও একটা আনন্দের বিষয়। তবে শিশুপ্রহরটা থাকলে শিশুদের মাঝে আরো প্রাণচাঞ্চল্য কাজ করতো।
এদিন দর্শনার্থী, লেখক ও প্রকাশকের সমাগমে মুখরিত হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ। পছন্দের লেখককে ঘিরে দেখা গিয়েছে সেলফি তোলার হিড়িক। বিক্রেতারাও ব্যস্ত ছিল বই বিক্রিতে। অন্যপ্রকাশ, শব্দশৈলী, পাঞ্জেরী, তাম্রলিপি, অনন্যা, ঐতিহ্য, বাতিঘর, অ্যাডর্ন, বেঙ্গল পাবলিশার্স, মাওলা ব্রাদার্স, প্রথমাসহ বিভিন্ন স্টলে ছিল বইপ্রেমীদের উপচে পড়া ভিড়। তবে বিক্রেতারা জানান, শুরুর দিকে খুব একাট বেচাকেনা হয়নি। মেলায় আসা বেশিরভাগ দর্শনার্থীই বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে বইয়ের মলাট উল্টেপাল্টে দেখেছেন আর নতুন নতুন বইয়ের খোঁজ-খবর নিয়েছেন। জেনেছেন দামও। তবে দিন যাওয়ার সাথে সাথে বেচাবিক্রি বেড়েছে বহুগুণ। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শব্দশৈলী প্রকাশনীর একাউন্ট ম্যানেজার রানার সাথে কথা বললে তিনি জানান, গত তিনদিন যারা মেলায় এসেছেন তাদের অধিকাংশই ছিল দর্শনার্থী। তবে আজ যারা মেলায় এসেছেন মোটামুটি সবাই বই কিনছেন। আজ খুব ভালো বই বিক্রি হচ্ছে । কয়েকজন প্রকাশক জানান, অন্যবারের তুলনায় মেলায় এবার জনসমাগম বেশ ভালো। বইপ্রেমীরা আসছেন, বই দেখছেন। সংখ্যায় কম হলেও বই কিনছেন অনেকেই।
মেলার চতুর্থ দিনে গতকাল নতুন বই এসেছে ১৭৭টি। এদিন বিকেলে মেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক বলয়ে একুশে ফেব্রুয়ারি উদ্যাপন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্বজিত সাহা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ইকবাল হাসান, তাজুল ইমাম এবং ইউসুফ রেজা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব অসীম কুমার দে। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতিসংঘের সামনে একুশ উদ্যাপন শীর্ষক তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। দ্বিতীয় পর্বে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী : মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহীদ রেজা নূর এবং শহীদ ইকবাল। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আমিনুর রহমান সুলতান এবং প্রশান্ত মৃধা। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। ###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।