পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গুম-খুন-অপহরণের উন্মাদ- উদ্ভ্রান্ত লীলার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্যাবসা বানিজ্য আমদানী রফতানীতে বিরূপ প্রভাব পড়া শুরু করেছে। ক্ষণ গননা চলছে নিশিরাতের সরকারের বিদায়ের। আওয়ামী দু:শাসনের ভয়ংকর শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পেতে দেশবাসীর আসন্ন দুর্বার আন্দোলনের আশংকায় সরকার ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। তবে সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই সরকার এই মূহুর্তে পদত্যাগ না করলে মিটিং-মিছিল-স্লোগান প্রতিরোধে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠবে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারকে হুঁশিয়ার করে রুহুল কবির রিজভী বলেন,গুম-অপহরণ- দুঃশাসন চালিয়ে যেভাবে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন তার পরিণতি হবে ভয়ংকর। সেদিন বেশী দূরে নয় যে দিন গুম-খুন অপহরণের শিকার পরিবারগুলোর শোকার্তরা কাফনের কাপড় পরে স্বজনদের খোঁজে গনভবনের দিকে রওনা দিবে। দেশের প্রতিটি শোকার্ত মানুষের ধারনা প্রতিটি গুমের হুকুমের প্রধান আসামী বসে আছেন গনভবনে। গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ গণতন্ত্র হত্যার বিচার এদেশেই হবে। কারণ এদের জন্য মানবতা ভয়ঙ্কর ঝুঁকির মধ্যে পরেছে।
তিনি বলেন, বিগত একযুগের বেশি সময় ধরে বিনা ভোটের অবৈধ সরকার গুম,খুন, অপহরণকে তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার রক্ষা- কবজে পরিনত করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে র্যাব বাহিনী ও ৭ র্যাব-পুলিশ কর্মকর্তার ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এবং দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর চাপে পিছু হটায় গুম-খুনের আতংকে থাকা পরিবারগুলোতে কিছুটা হলেও স্বস্তি নেমে এসেছিল। কিন্তু ইদানীং আবারো পুরানো পৈশাচিক চেহারায় ফিরে এসে গুমের মতো ভয়াবহ অপরাধ শুরু করেছে সরকার।
রিজভী বলেন, আগে শুধু শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত বাহিনী রূপে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে র্যাপিড এ্যকশন ব্যাটেলিয়ান-র্যাবকে। এদেরকে নিয়োজিত করা হয়েছে পৃথিবীর জঘন্যতম এই অপরাধ সংঘঠনে। এর পরে রাষ্ট্রিয় আরেকটি বাহিনী গোয়েন্দা পুলিশ ও পুলিশকেও গুম-অপহরণ-বন্দুকযুদ্ধে নামানো হয় গোটা দেশে। এখন সিআইডিকেও গুম-অপহরণে নামানো হয়েছে। এহেন পৈশাচিকতায় তাদের সাজানো গল্প একই থাকে, প্রথমে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া ,অতঃপর কখনো অনন্তকালের জন্য অন্তর্ধান-নিঁখোজ, কখনো অস্ত্র উদ্ধারের নামে ক্রসফায়ারের হত্যা আবার কখনো রাস্তার ধারে অথবা ডোবা নালা বা নদীতে লাশ পাওয়ার রোমহর্ষক নাৎসীয় বর্বরতা। অনাচার দুঃশাসন, লুটপাট, টাকা পাচার আর মেগা দুর্নীতির স্ফীতিতে বহমান রয়েছে ক্ষমতাসীনদের পরিবারবর্গ।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন,ইতিমধ্যে জাতিসংঘ থেকে গুম হওয়া সম্পর্কে তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ পর্যালোচনা করে জরুরি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। দুরাচার অবৈধ সরকারকে আতংক ঘিরে ফেলেছে। স্বয়ংক্রিয় ভোটের পররাষ্ট্র মন্ত্রী, স্বরাষ্ট মন্ত্রী গুম-খুন নিয়ে প্রলাপ বকছেন। আলটপকা কথা বলায় পারঙ্গম পররাষ্ট্র মন্ত্রী দায়িত্ব এড়ানোর জন্য’ ভূমধ্যসাগরে সলিলসমাধি ‘ তত্ব হাজির করে গুম খুনের শিকার পরিবারগুলোর সাথে নির্দয় নির্লজ্জভাবে পরিহাস করা হয়েছে।
চাদর কিনতে জার্মানি সফরের প্রসঙ্গ তুলে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বাংলাদেশকে ঘিরে ধরেছে অদ্ভুত এক রহস্যময় আঁধার। রাস্ট্র ও সরকারে কোথায় কি হচ্ছে সব কিছুতেই অস্পষ্টতা- রহস্যময়তা। জার্মানীতে কাঁথা বালিশ চাদরের ফ্যাক্টরী পরিদর্শনের নামে পুলিশ প্রধানসহ তিন কর্মকর্তার সফর সংক্রান্ত সরকারি আদেশ গত ৭ ফেব্রুয়ারি জারি হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছিল, বালিশের কাভারসহ ডাবল সাইজের এক লাখ পিস বিছানার চাদরের শিপমেন্ট নিশ্চিত করতে এই তিন কর্মকর্তা ৯ দিনের জন্য জার্মানি যাচ্ছেন। পাশাপাশি তারা ফ্যাক্টরি একসেপ্টেন্স টেস্টেও (এফএটি) অংশ নেবেন। এ নিয়ে চরম বিতর্ক দেখা দেয়ায় পুলিশ হেড কোয়ার্টার থেকে আরেকটি প্রেসনোট দিয়ে বলা হয়েছিল এনিয়ে বিভ্রান্তি কিছু নেই। যা হয়েছে নিয়মমাফিক হয়েছে। ছিল শুধু কিছু জিওতে শব্দগত ভুলের কারণে বিভ্রান্তির সৃষ্টি। ১২ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ কর্মকর্তা স্বাক্ষরত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ তিন সদস্যের জার্মানি সফর নিয়ে বিভ্রান্তি ও প্রপাগান্ডা ছড়ানো হলেও মূলত চাদর ও বালিশের কাভার নেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশ থেকেই। তবে এসব প্রস্ততের জন্য রঙ আসবে জার্মানির একটি কোম্পানি থেকে। কার্যত ওই রঙয়ের গুণগত মান দেখতেই জার্মানি যাচ্ছেন আইজিপিসহ ওই তিন সদস্য। প্রচন্ড সমালোচনা ও চাপের মুখে গতকাল মঙ্গলবার দেখলাম পুলিশ সদর দফতর থেকে আবারো বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে কাঁথা বালিশ চাদর কেনার ইস্যু নিয়ে পুলিশ প্রধানকে ঘিরে যা কিছু বলা হচ্ছে সবই “বানোয়াট বিভ্রান্তিকর। জার্মানি বিছানার চাদর উৎপাদন ও রপ্তানিকারক কোনো দেশ নয়, তারা ভারী শিল্পের দেশ। সঙ্গত কারণে আইজিপির চাদর, বালিশের কাভার ক্রয়ের জন্য জার্মানি গমনের কোনো অবকাশ নেই।”
এখন জনমনে প্রশ্ন-তাহলে ৭ ফেব্রুয়ারি সুনিশ্চিত ভঙ্গিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় থেকে কাথা বালিশ ফ্যাক্টরী পরিদর্শনের যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল তা-কি ভুল ছিল ? এটা কি এখন প্রত্যাহার করা হয়েছে ? আইজিপির নাম কি ভুলে দেয়া হয়েছে ? নাকি তাকে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা ছিল ? বড় প্রশ্নটি হচ্ছে রাস্ট্র- সরকারের অভ্যন্তরে হচ্ছেটা কি? সরকারের নাটাই কার হাতে?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।