পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে নির্ধারিত সময়ের দুই সপ্তাহ পরে এবং ব্যাপ্তি কমিয়ে আজ থেকে শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা। বিকেল তিনটায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী এ অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২১ প্রদান করা হবে। গতকাল সোমবার বাংলা একাডেমির জনসংযোগ উপ-বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বইমেলা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করবেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর। বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করবেন একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।
বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে বইমেলা প্রস্তুতি বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়- প্রতি বছর ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে শুরু করে মাসব্যাপী বইমেলা চললেও করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার ১৫ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কেবল দু’সপ্তাহ দেশের সর্ববৃহৎ এ বইমেলা চলবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি বলেন, করোনা সংক্রমণের কারণে এবার বইমেলার সময়সীমা অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। এখন যেভাবে সংক্রমণ কমছে সেভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে হয়তো আমরা মেলার সময়সীমা খানিকটা বাড়াতে পারব।
প্রকাশকদের প্রণোদনা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই মেলা হচ্ছে প্রকাশকদের মেলা। তারা একটি মেলার জন্য অনেকদিন অপেক্ষা করেন। আমরা কোনোভাবেই চাইবো না, মেলার প্রাণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হোক। গত বছর আমরা তাদের থেকে অর্ধেক ভাড়া নিয়েছি। আর এবার মেলার সময়সীমা যদি বাড়ানো হয় তাহলে আমরা মনে করি সেটি তাদের জন্য প্রণোদনা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব মো. আবুল মনসুর, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা ও পরিচালক ড. জালাল আহমেদ সহ আয়োজন সংশ্লিষ্টরা।
বইমেলার সার্বিক তথ্য তুলে ধরেন বাংলা একাডেমির পরিচালক এবং মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ। তিনি জানান, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ৭ লাখ বর্গফুট জায়গাজুড়ে বইমেলা হবে। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৪২টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩২টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৩৪টি ইউনিট; মোট ৫৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৭৬টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেলায় ৩৫টি প্যাভিলিয়ন থাকবে। বাংলা একাডেমির ৩টি প্যাভিলিয়ন, শিশুকিশোর উপযোগী বইয়ের জন্য ১টি এবং সাহিত্য মাসিক উত্তরাধিকার-এর ১টি স্টল থাকবে। এবারও শিশু চত্বর মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রথমদিকে ‘শিশুপ্রহর’ থাকবে না। এ বছর লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরিত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এম্ফি থিয়েটারের পূর্বদিকে মেলার মূল প্রাঙ্গণে। সেখানে ১২৭টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এবারের গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমি প্রকাশ করছে নতুন ও পুনর্মুদ্রিত ১০৭টি বই। বইমেলায় বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে। মেলার প্রচার কার্যক্রমের জন্য একাডেমিতে বর্ধমান ভবনের পশ্চিম বেদিতে ১টি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২টি তথ্যকেন্দ্র থাকবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবার নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে।
মেলার নতুনত্বের বিষয় উল্লেখ করে জালাল আহমেদ জানান, এবার মেলার বিন্যাসে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। গত বছর প্যাভিলিয়নগুলো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মধ্য মাঠে রাখা হয়েছিল। এই বিন্যাস অনেকের দ্বারা সমালোচিত হয়। এবার প্যাভিলিয়নগুলো উদ্যানের সকল প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে বিন্যাসে পরিবর্তন ও সৌন্দর্যে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। এ ছাড়া লিটল ম্যাগাজিনের স্টলগুলোকে উদ্যানের এম্ফি থিয়েটারের পূর্বদিকে উদ্যানের মূল প্রাঙ্গণে বিন্যস্ত করা হয়েছে। এর ফলে আমাদের তরুণ ও উদ্ভানশীল সাহিত্যকর্মীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান যেমন বরাদ্দ করা হয়েছে, তেমনি এটি মেলার বিন্যাসেও পরিবর্তন এনেছে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ বাস্তবায়ন কমিটি একটি প্যাভিলিয়ন নিয়েছেন। এই প্যাভিলিয়নটি অনন্য সুন্দররূপে সাজানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও স্বাধীনতার মর্মবাণী সবার মাঝে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু-গ্রন্থভুক্ত হস্তলিপি বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যবহার করা হয়েছে। মেলায় সবার জন্য জাতীয় কভিড নীতিমালা মানা ও প্রবেশে টিকার সনদ প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সনদ ছাড়া বই ব্যবসায়ী, বিক্রয়-কর্মী ও দর্শনার্থীসহ কেউই মেলায় অবস্থান করতে পারবে না। সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। যারা টিকা নেয়নি, তাদের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অমর একুশে বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ২০২২ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগতমান বিচারে সেরা বইয়ের জন্য প্রকাশককে ‘চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার এবং ২০২২ সালের বইমেলায় প্রকাশিত বইয়ের মধ্য থেকে শৈল্পিক বিচারে সেরা বই প্রকাশের জন্য ৩টি প্রতিষ্ঠানকে ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হবে। এছাড়া ২০২২ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগত মান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার এবং এ বছরের মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে স্টলের নান্দনিক সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ বিবেচিত প্রতিষ্ঠানকে ‘কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান করা হবে বলেও তিনি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যবিধির ওপর গুরুত্বারোপ করে মেলায় ‘নো মাস্ক নো সেল’ ঘোষণা করার কথা জানিয়েছেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর। তিনি বলেন, আমরা কভিড পরিস্থিতিকে সব সময় মাথায় রাখব। আশা করছি, দ্রুতই পরিস্থিতি ঠিক হবে। তারপরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এছাড়া খাবার দোকানে প্রবেশের ক্ষেত্রে অবশ্যই কভিড সনদ দেখাতে হবে। এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেলায় মোবাইল টিম কাজ করবে। ###রাহাদ উদ্দিন
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।